নম্বর ঘষামাজা করে ধরা খেলেন মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক

নিজস্ব প্রতিবেদক |

অসদুপায় অবলম্বনের অভিযোগে রাজধানীর বেসরকারি বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজের প্যাথলজি বিভাগের এক সিনিয়র অধ্যাপককে পরীক্ষা সংক্রান্ত সব কার্য়ক্রম থেকে আগামী তিন বছরের জন্য বিরত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) সিন্ডিকেট। শাস্তিপ্রাপ্ত ওই চিকিৎসকের নাম অধ্যাপক ডা. পরিতোষ কুমার ঘোষ।

গত ১২ মে ঢাবির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের অফিসের মেমো নং ১৪২ এ ঢাবি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বাহালুল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়, প্যাথলজি বিষয়ের ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বরে অসঙ্গতি থাকায় গত ৩০ এপ্রিল ঢাবির সিন্ডিকেট সভার অনুমোদনক্রমে এবং শৃংখলা পরিষদ সভার গত ৮ এপ্রিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা সংক্রান্ত সব কার্যক্রম থেকে আগামী তিন বছরের জন্য বিরত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

জানা গেছে, ২০১৭ সালের প্যাথলজি বিষয়ে দ্বিতীয় পেশাগত ফাইনাল পরীক্ষার ব্যবহারিক বিষয়ে অধ্যাপক ডা. পরিতোষ কুমার ঘোষের নেতৃত্বে চারজন পরীক্ষক (দুজন বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজের ইন্টারন্যাল পরীক্ষক ও অপর দুজন অন্য বেসরকারি মেডিকেল কলেজের এক্সটারনাল) তিন শিক্ষার্থীকে নম্বর প্রদান করেন। নিয়মানুযায়ী চারজন পরীক্ষকের দেয়া নম্বর যোগ করে এবং তাদের সবার স্বাক্ষর নিয়ে টেবুলেশন সিট তৈরি করা হয়।

অভিযোগ উঠেছে অধ্যাপক পরিতোষ কুমার ঘোষ টেবুলেশন সিট ঢাবিতে পাঠানোর সময় তিন শিক্ষার্থীর নম্বর ঘষামাজা করে নয়-ছয় করে পাঠায়। ঢাবিতে এ প্রতারণা ধরা পড়ে। এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি অভিযোগের সত্যতা পায়। বিষয়টি সিন্ডিকেট সভায় উত্থাপন করা হলে তাকে পরীক্ষকের পদ থেকে তিন বছর বিরত রাখার সিদ্ধান্ত হয়।

সভায় একাধিক সিন্ডিকেট সদস্য ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বেসরকারি মেডিকেল কলেজের গুণগত মান নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। একজন সিনিয়র অধ্যাপক হয়ে এমন কাজে জড়ানোয় মেডিকেল শিক্ষার মান কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে বলে প্রশ্ন তোলেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে সোমবার (৮ জুলাই) বিকেলে অধ্যাপক ডা. পরিতোষ কুমার ঘোষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে প্রথমে তিনি কোনো কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানান।

পরে সিন্ডিকেট সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত জানিয়ে কিছু বলার আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, পরীক্ষায় তিনিসহ চারজন এক্সামিনার তিন শিক্ষার্থীর প্রাপ্ত নম্বর যা লিখে পাঠিয়েছিলেন সেখানে ওই তিন শিক্ষার্থী পাস করেনি। কিন্তু ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর তিনি দেখতে পান বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলাফলে ওরা তিনজন পাস করেছে। এ ব্যাপারে তিনি কলেজের অধ্যক্ষকেও জানিয়েছেন।

তিনি দেশের প্যাথলজি বিষয়ে সিনিয়র কয়েকজনের মধ্যে একজন মন্তব্য করে বলেন, সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিয়ে তারা রিভিউ আবেদন করেছেন। ন্যায্য বিচার না পেলে তারা গণমাধ্যম কর্মীদের ডেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সামগ্রিক বিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন বলে জানান তিনি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
প্রাথমিকের শিক্ষকদের ফের অনলাইনে বদলির সুযোগ - dainik shiksha প্রাথমিকের শিক্ষকদের ফের অনলাইনে বদলির সুযোগ তীব্র তাপপ্রবাহের ভেতরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে রোববার - dainik shiksha তীব্র তাপপ্রবাহের ভেতরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে রোববার দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি নতুন শিক্ষাক্রম ও কিছু কথা - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রম ও কিছু কথা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে স্কুলে দুই শিফটের ক্লাস চালু রাখার সভা রোববার - dainik shiksha স্কুলে দুই শিফটের ক্লাস চালু রাখার সভা রোববার শিক্ষা কর্মকর্তার আইডি ভাড়া নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বাণিজ্য - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার আইডি ভাড়া নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বাণিজ্য শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে নিষিদ্ধ, মৌলবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন - dainik shiksha নিষিদ্ধ, মৌলবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0047991275787354