ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার সরকারি মার্চেন্টস ম্যাধমিক বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল শাখায় অতিরিক্ত ক্লাস নেয়ার নামে টাকা নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। একই সাথে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করিয়ে দিতে মোটা অংকের অর্থ নিয়ে এক শ্রেণির শিক্ষক প্রাইভেটের নামে চুক্তিতে নেমেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। খোদ প্রধান শিক্ষকের কাছেই বিষয়টি ধরে পড়লে এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, এসএসসি পরীক্ষার আগে কোচিং ক্লাসের পাশাপাশি শিক্ষার্থী প্রতি ১ হাজার টাকা নিয়ে ওই অতিরিক্ত ক্লাস নিচ্ছিলেন কতিপয় শিক্ষক।
এতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খাইরুল বাশার রানা বাঁধা দেয়ায় অভিযুক্ত বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক কামাল উদ্দিন তালুকদার ও ভোকেশনাল শাখার জাকির হোসেন তার সাথে বিরোধ জড়িয়ে পড়েন।
সোমবার দুপুরে কৌশলে অভিযুক্ত ওই শিক্ষকরা কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ভুল বুঝিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে পাঠিয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করান। আর এ নিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জানতে চাইলে সরকারি মার্চেন্টস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খাইরুল বাশার রানা দৈনিক শিক্ষা জানান, বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির পরীক্ষার আগে শিক্ষার্ক্ষীদের কোচিং ক্লাস চালু করা হয়েছে। কিন্তু শিক্ষক কামাল হোসেন তালুকদার ও জাকির হোসেন নিয়মিত পাঠদান বন্ধ রেখে অর্থের বিনিময় অতিরিক্ত ক্লাসের নামে শিক্ষার্থী প্রতি ১ হাজার টাকা নিচ্ছেন। আমি বিষয়টি জানতে পেরে সব শিক্ষকদের নিয়ে সভা করে অতিরিক্ত ক্লাস ও টাকা নেয়া বন্ধ করার জন্য নোটিশ দেই। আর এতে ওই দুই শিক্ষক ক্ষিপ্ত হন। তারা আমার সাথে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন। এতেই তারা ক্ষান্ত হননি, শিক্ষার্থীদের ভুল বুঝিয়ে ইউএনওর কাছে অভিযোগ করার জন্য পাঠায়।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত অর্থ নেয়ায় অভিযুক্ত শিক্ষক জাকির হোসেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সামনে তার সাথে অসদাচারণ করায় শিক্ষার্থীরা স্বেচ্ছায় ইউএনও কাছে অভিযোগ করেছেন। শিক্ষার্থীদের ইউএনও কাছে পাঠানোর ব্যাপারে তাদের কোন উসকানি ছিলো না।
আরেক শিক্ষক কামাল উদ্দিন তালুকদার সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ছাত্রছাত্রীরা আমাদের কাছে কোচিং ক্লাসের পাশাপাশি পড়তে চেয়েছে বিধায় অতিরিক্ত ক্লাস নেয়া হচ্ছিল। এতে প্রধান শিক্ষক বাঁধা দেয়ায় সে সব ক্লাস বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, অপর এক শিক্ষক ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য প্রতিষ্ঠানে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভর্তি কোচিং ক্লাস করছেন। অভিযোগ রয়েছে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে এ প্রতিষ্ঠানে এই প্রাইভেট বাণিজ্য চলছে। আর এসব কাজে বাঁধা দেয়ায় প্রধান শিক্ষকের সাথে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন দুই শিক্ষক।