জাতীয় নিরাপত্তা আরও সুসংহত এবং যেকোনো ধরনের নাশকতা দমনের সক্ষমতা বাড়াতে একটি ভেহিক্যাল মাউন্টেড ডাটা ইন্টারসেপ্টর সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এজন্য ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে সিস্টেমটি ক্রয়ের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবের অনুমোদনে দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
এক হাজার ২৭৯ কোটি ৯২ লাখ টাকা ব্যয়ে আরও চারটি ক্রয় প্রস্তাবও অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। বুধবার (৭ আগস্ট) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এসব প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠকে কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের সামনে অনুমোদিত প্রস্তাবগুলোর বিষয় তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) জন্য প্রায় ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ভেহিক্যাল মাউন্টেড ডাটা ইন্টারসেপ্টর কেনায় সায় দিয়েছে সরকার। সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি অবলম্বনে এনটিএমসির জন্য ভেহিক্যাল মাউন্টেড ডাটা ইন্টারসেপ্টর ক্রয়ে নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
এর আগেও একটি ভেহিক্যাল মাউন্টেড ডাটা ইন্টারফেইজ কেনার অনুমোদন দেয়া হয়েছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, এটি নিয়ে এর সংখ্যা দুটি হবে। অর্থমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রীয় সক্ষমতা বৃদ্ধিতে জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য এবং পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা ২০০৮ এর বিধি ৭৬(২) এর উল্লেখিত আর্থিক সীমা শিথিল করাসহ ডিএমপি পদ্ধতিতে ক্রয় প্রস্তাব করা হয়েছে।
যন্ত্রটির মূল্যের বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী তা জানাতে চাননি, তবে সভার কার্যপত্রে যন্ত্রটি ক্রয়ে আনুমানিক ২০০ কোটি টাকা প্রয়োজন হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, এছাড়া সরকারি ক্রয় কমিটির বৈঠকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে বেলারুশিয়ান পটাশ কোম্পানি (বিপিসি) ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় সাড়ে চার লাখ মেট্রিক টন মিউরেট অব পটাশ (এমওপি) আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে এক হাজার ১০৮ কোটি ৯৯ লাখ ৯১ হাজার ২৫০ টাকা। প্রতি মেট্রিক টনের দাম ধরা হয়েছে ২৯১ মার্কিন ডলার। ২০১৮ সালের চুক্তির কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ায় চুক্তির শর্তসমূহ অভিন্ন রেখে চলতি বছরের ৮ জুলাই পুনরায় চুক্তি সম্পাদন করা হয়। কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন প্রস্তাবটি বাস্তবায়ন করবে।
সভায় অনুমোদিত অন্যান্য প্রস্থাবগুলো হলো- বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (সংশোধন) আইন ২০১৮ এর আওতায় রূপকল্প- ২ শীর্ষক প্রকল্পের অধীন জকিগঞ্জ- ১ কূপ খনন কার্যক্রমের জন্য ড্রিল বিট, কেসিং এক্সেসরিজ ও লিনার হেঙ্গার ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়ছে। এতে ব্যয় হবে এক কোটি ৮৭ লাখ ৫৫ হাজার ৩০০ টাকা। এজন্য বেনডোর লিস্ট অনুযায়ী দরপত্র আহ্বান করলে সাতটি প্রতিষ্ঠানের দরপত্র পাওয়া যায়। কারিগরি উপ-কমিটি কর্তৃক সুপারিশ করা সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ওয়েল প্রাইভেট লিমিটেড, খুলনা লুমপুর এবং পানামার স্কল্যাবারগার সেকো ইন্ডাস্ট্রিজ হতে কেনা হবে। বাস্তবায়নকারী সংস্থা জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের বাপেক্স।
এছাড়া দুই বছর মেয়াদে বিআরটিএ'র ঢাকা মেট্রো সার্কেল ১,২ ও ৩ (মিরপুর, ইকুরিয়া ও উত্তরা) এর মোটরযান সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট ডিজিটালাইজ করে আর্কাইভ আকারে সংরক্ষণ এবং ব্যবস্থাপনা সিস্টেম সার্ভিস তৎক্ষণাৎ ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ২৮ কোটি ৫ লাখ ৮১ হাজার ৭২২ টাকা। সার্ভিস প্রোভাইডার ও ভেন্ডার নির্বাচনের জন্য এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট (ইওল) পরপর দুবার আহ্বান করলে ১৬টি আবেদন পাওয়া যায়। প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটি কর্তৃক সুপারিশ করা একমাত্র যোগ্যতা অর্জনকারী প্রতিষ্ঠান কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম লিমিটেড (সিএনএস)। বাস্তবায়নকারী সংস্থা হলো বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।