নাশকতার অভিযোগ: শিক্ষক মোফাজ্জলের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক |

অসদাচরণ ও নাশকতায় লিপ্ত থাকা এবং সরকারি হাইস্কুলের শিক্ষক ও কর্মচারীদের পদোন্নতি, টাইমস্কেলসহ বিভিন্ন কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে মানিকছড়ির রানী নিহার দেবী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক মোফাজ্জেল হোসেনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হচ্ছে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক ড. মো. আবদুল মান্নান মঙ্গলবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দৈনিকশিক্ষাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

এর আগে মোফাজ্জলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মোফাজ্জল বর্তমানে খাগড়াছড়ি মানিকছড়ির রানী নিহার দেবী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত সহকারি প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। গত ২০ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবু আলী মো: সাজ্জাদ হোসেন স্বাক্ষরিত একটি চিঠি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের বরাবর পাঠানো হয়। তবে, মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক শাখায় ঘাপটি মেরে থাকা কতিপয় অসাধু কর্মচারী যথাসময়ে ওই চিঠি শিক্ষা অধিদপ্তরে না পাঠিয়ে বরং মোফাজ্জলকে গোপনে খবর দিয়েছে। খবর পেয়ে শাস্তি ও বদলি ঠেকাতে তৎপর হয়েছেন মোফাজ্জল

 মোফাজ্জলের মতামত জানার জন্য স্কুলে যোগাযোগ করলেও পাওয়া যায়নি। স্যার স্টেশনে নেই বলে স্কুল থেকে দৈনিক শিক্ষাকে জানানো হয়েছে।  

শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী মোফাজ্জলের বিরুদ্ধে ‘সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপীল)বিধিমালা, ২০১৮-এর আওতায় বিভাগীয় মামলা দায়ের করে মন্ত্রণালয়ে জানানো হবে।’

মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে মোফাজ্জলের বিরুদ্ধে রানী নিহার দেবী স্কুলসহ অপরাপর কয়েকটি স্কুল শিক্ষার্থীদেরকে ভাঙচুরে প্ররোচনা ও নাশকতামূলক কাজে লিপ্ত থাকার অভিযোগ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, এ বছরের এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র নিয়ে পরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগে রানী নীহার দেবী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মোফাজ্জল হোসেন ও  সহকারী শিক্ষক শ্যামা চন্দ্র রুদ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন মানিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহিদ ইকবাল। ফেসবুকে প্রশ্ননিয়ে নেতিবাচক ও উসকানিমূলক বাক্যও লেখার অভিযোগ আনা হয় তাদের বিরুদ্ধে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে চিঠি দেন ইউএনও। ।

মানিকছড়ি উপজেলার এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের ট্রাংক খাগড়াছড়ি মডেল থানা থেকে আনতে গত ৮ই জানুয়ারি মানিকছড়ি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা বা তার প্রাধিকারপ্রাপ্ত একজনকে পাঠানোর নির্দেশ দেন খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক। এরপর থেকেই রানী নীহার দেবী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মোফাজ্জল হোসেন নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ ইকবালের কাছে অনুরোধ করেন যেন প্রশ্নপত্র আনার দায়িত্বটা তাকেই দেয়া হয়। কিন্তু তার বিরুদ্ধে এর আগের পাবলিক পরীক্ষায় অবহেলার বিষয়ে তদন্ত চলমান থাকায় তাকে না দিয়ে তার বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক শ্যামা চন্দ্র রুদ্রকে প্রশ্নপত্রসহ অন্যান্য গোপনীয় কাগজপত্র আনার জন্য প্রাধিকার দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

আরও পড়ুন: এসএসসির প্রশ্ন নিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে

ফেল করেও প্রমোশন, পাস করেও বাদ

প্রাধিকারপত্র জারি করতে গেলে শিক্ষক রুদ্র তা নিতে অস্বীকৃতি জানান এবং ছুটিতে বাইরে আছেন বলে জানান। বাইরে থাকায় প্রশ্নপত্র আনতে যেতে পারবেন না বলে তিনি বলেন। পরে একাধিকবার টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি অস্বীকৃতি জানান। রুদ্র বলেন, প্রধান শিক্ষকের অনুমতি ছাড়া প্রশ্নপত্র আনা সম্ভব নয়। পরে প্রধান শিক্ষক মোফাজ্জল হোসেন এক চিঠিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বলেন, শিক্ষক রুদ্র ছুটি নিয়ে স্কুল ত্যাগ করায় তিনি প্রশ্নপত্র আনতে যেতে পারেননি।

 শিক্ষক রুদ্র যাতে প্রশ্নপত্র আনতে যেতে না পারেন সে জন্য তাকে পরিকল্পিতভাবে তাৎক্ষণিক ছুটিতে পাঠান প্রধান শিক্ষক। এরপর তিনি প্রাধিকারপত্র নিয়ে ফেসবুকে নেতিবাচক পোস্ট করেছেন। প্রধান শিক্ষকের অসহযোগিতায় এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র আনয়ন অনিশ্চিত হয়ে পড়ে বলে ইউএনও তার চিঠিতে উল্লেখ করেন।

 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো - dainik shiksha ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা - dainik shiksha তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0060858726501465