নাশকতার অভিযোগে স্কুল শিক্ষকের বদলি, মামলা দায়েরের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক |

নাশকতায় লিপ্ত থাকার অভিযোগে মানিকছড়ির রানী নিহার দেবী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোফাজ্জল হোসেনকে বদলি করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর। একই সাথে তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করার জন্য জেলা শিক্ষা অফিসারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রধান শিক্ষকের চলতি দায়িত্বে থাকা সহকারী শিক্ষক মোফাজ্জলকে ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার চাঁদপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে বদলি করা হয়েছে। মহাপরিচালকের  দায়িত্বে থাকা অধিদপ্তরের পরিচালক মোহাম্মদ শামছুল হুদা বুধবার (২৬ সেপ্টেম্বর) এ বদলির আদেশ জারি করেন। মোফাজ্জল হোসেনের  বিরুদ্ধে অসদাচরণ ও নাশকতায় লিপ্ত থাকা এবং সরকারি হাইস্কুলের শিক্ষক ও কর্মচারীদের পদোন্নতি, টাইমস্কেলসহ বিভিন্ন কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে রয়েছে। এসব অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা এবং ফৌজদারি মামলা হচ্ছে বলেও জানা গেছে।

এর আগে মোফাজ্জলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। গত ২০ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবু আলী মো: সাজ্জাদ হোসেন স্বাক্ষরিত একটি চিঠি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের বরাবর পাঠানো হয়। তবে, মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক শাখায় ঘাপটি মেরে থাকা কতিপয় অসাধু কর্মচারী যথাসময়ে ওই চিঠি শিক্ষা অধিদপ্তরে না পাঠিয়ে মোফাজ্জলকে গোপনে খবর দেয়। খবর পেয়ে শাস্তি ও বদলি ঠেকাতে সরকারের উচ্চ মহলে তদবির শুরু করেন।

অারও পড়ুন: নাশকতার অভিযোগ: শিক্ষক মোফাজ্জলের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হচ্ছে

শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী মোফাজ্জলের বিরুদ্ধে ‘সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধিমালা, ২০১৮-এর আওতায় বিভাগীয় মামলা দায়ের করে মন্ত্রণালয়ে জানানো হবে।’ মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে মোফাজ্জলের বিরুদ্ধে রানী নিহার দেবী স্কুলসহ অপরাপর কয়েকটি স্কুল শিক্ষার্থীদের ভাঙচুরে প্ররোচণা ও নাশকতামূলক কাজে লিপ্ত থাকার অভিযোগ করা হয়েছে।

অারও পড়ুন: এসএসসির প্রশ্ন নিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে

উল্লেখ্য, এ বছরের এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র নিয়ে পরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগে রানী নীহার দেবী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মোফাজ্জল হোসেন ও সহকারী শিক্ষক শ্যামা চন্দ্র রুদ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন মানিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহিদ ইকবাল। ফেসবুকে প্রশ্ননিয়ে নেতিবাচক ও উস্কানিমূলক বাক্যও লেখার অভিযোগ আনা হয় তাদের বিরুদ্ধে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে চিঠি দেন ইউএনও। 

অারও পড়ুন:  ফেল করেও প্রমোশন, পাস করেও বাদ

মানিকছড়ি উপজেলার এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের ট্রাংক খাগড়াছড়ি মডেল থানা থেকে আনতে গত ৮ জানুয়ারি মানিকছড়ি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা বা তার প্রাধিকারপ্রাপ্ত একজনকে পাঠানোর নির্দেশ দেন খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক। এরপর থেকেই রানী নীহার দেবী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মোফাজ্জল হোসেন নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ ইকবালের কাছে অনুরোধ করেন যেন প্রশ্নপত্র আনার দায়িত্বটা তাকেই দেয়া হয়। কিন্তু তার বিরুদ্ধে এর আগের পাবলিক পরীক্ষায় অবহেলার বিষয়ে তদন্ত চলমান থাকায় তাকে না দিয়ে তার বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শ্যামা চন্দ্র রুদ্রকে প্রশ্নপত্রসহ অন্যান্য গোপনীয় কাগজপত্র আনার জন্য প্রাধিকার দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

প্রাধিকারপত্র জারি করতে গেলে শিক্ষক রুদ্র তা নিতে অস্বীকৃতি জানান এবং ছুটিতে বাইরে আছেন বলে জানান। বাইরে থাকায় প্রশ্নপত্র আনতে যেতে পারবেন না বলে তিনি বলেন। পরে একাধিকবার টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি অস্বীকৃতি জানান। রুদ্র বলেন, প্রধান শিক্ষকের অনুমতি ছাড়া প্রশ্নপত্র আনা সম্ভব নয়। পরে প্রধান শিক্ষক মোফাজ্জল হোসেন এক চিঠিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বলেন, শিক্ষক রুদ্র ছুটি নিয়ে স্কুল ত্যাগ করায় তিনি প্রশ্নপত্র আনতে যেতে পারেননি।

শিক্ষক রুদ্র যাতে প্রশ্নপত্র আনতে যেতে না পারেন সে জন্য তাকে পরিকল্পিতভাবে তাৎক্ষণিক ছুটিতে পাঠান প্রধান শিক্ষক। এরপর তিনি প্রাধিকারপত্র নিয়ে ফেসবুকে নেতিবাচক পোস্ট করেছেন। প্রধান শিক্ষকের অসহযোগিতায় এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র আনয়ন অনিশ্চিত হয়ে পড়ে বলে ইউএনও তার চিঠিতে উল্লেখ করেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও - dainik shiksha স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0049631595611572