নির্দয় আচরণের কথা স্বীকার, হাসনা হেনা কারাগারে

নিজস্ব প্রতিবেদক |

রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রি অধিকারীর আত্মহননের ঘটনায় নির্দয় আচরণের কথা স্বীকার করেছেন শ্রেণি শিক্ষক হাসনা হেনা। গোয়েন্দা পুলিশের কাছে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি বলেন, অরিত্রি ও তার অভিভাবকের সঙ্গে নির্দয় আচরণ এবং দুর্ব্যবহার করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিন শিক্ষকের দায় রয়েছে। এই অপমান সইতে না পেরেই আত্মহননের পথ বেছে নেয় সে। শিক্ষক হিসেবে এমন আচরণ করা কোনোভাবেই উচিত হয়নি আমার। অরিত্রি ও তার মা-বাবার সঙ্গে এমন নির্দয় আচরণের ঘটনায় আমি অনুতপ্ত। সংশ্নিষ্ট একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা (৬ ডিসেম্বর) এ তথ্য জানান।

বুধবার মধ্যরাতে রাজধানীর উত্তরা থেকে হাসনা হেনাকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশের পূর্ব বিভাগের একটি টিম। রিমান্ড আবেদন না করে গতকাল বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে তোলা হয়। শুনানি শেষে জামিন নাকচ করে ওই শিক্ষককে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ঢাকার মহানগর হাকিম আবু সাঈদ। 

এদিকে, চলমান আন্দোলন স্থগিত করেছে ছাত্রীরা। শিক্ষকদের আশ্বাসে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত করার কথা জানিয়ে তারা বলেছে, আজ শুক্রবার থেকে তারা যথারীতি ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশ নেবে।

এ ছাড়া অরিত্রির আত্মহননের ঘটনায় নিজেদের দায় স্বীকার করে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চেয়েছেন পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি গোলাম আশরাফ তালুকদার। বেইলি রোডে স্কুলের মূল ক্যাম্পাসে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, প্রতিষ্ঠানের বৃহত্তর স্বার্থে প্রয়োজন হলে গভর্নিং বডি থেকে পদত্যাগ করতে রাজি আছেন। তবে অন্য সদস্যদের বিষয়টি তিনি বলতে পারছেন না। গভর্নিং বডির সভায় বসে এ ব্যাপারে তারা আলোচনা করবেন। তবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌসকে বুধবার অপসারণ করলেও বৃহস্পতিবার পর্যন্ত নতুন কাউকে এ দায়িত্ব দিতে পারেনি গভর্নিং বডি। পলাতক থাকায় নাজনীন ফেরদৌস বুধবার থেকে বিদ্যালয়ে আর আসছেন না। এ কারণে গভর্নিং বডির আনুষ্ঠানিক সভাও করতে পারছেন না সদস্যরা। 

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পূর্ব বিভাগের ডিসি খন্দকার নুরুন্নবী বলেন, অরিত্রি ও তার অভিভাবকের সঙ্গে খারাপ আচরণের কথা স্বীকার করেছেন তার শিক্ষক হাসনা হেনা। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় অন্য দুই শিক্ষককেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। 

আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে অরিত্রির বাবা পল্টন থানায় যে মামলা করেন, তাতে তিন নম্বর আসামি করা হয় হাসনা হেনাকে। ওই মামলার অন্য দুই আসামি হলেন ভিকারুননিসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস ও প্রভাতি শাখার প্রধান জিন্নাত আরা। তিন অভিযুক্ত শিক্ষকের মধ্যে অন্য দুই শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়নি এখনও। তাদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে। আদালতে আত্মসমর্পণ না করলে যে কোনো সময় গ্রেফতার হতে পারেন তারা। 

গতকাল হাসনা হেনাকে আদালতে হাজির করে তাকে জামিন না দেওয়ার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক কামরুল হাসান তালুকদার। আদালতে দাখিল করা প্রতিবেদনে বলা হয়- অরিত্রির বাবার সুস্পষ্ট ধারণা, শিক্ষকদের আচরণের কারণেই সে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে। মামলার তদন্ত প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। আসামি জামিনে মুক্তি পেলে তিনি পালিয়ে থেকে মামলার তদন্তে বিঘ্ন সৃষ্টি করবেন। তবে হাসনা হেনার আইনজীবীরা তার জামিন চাইলে আদালত জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। 

সূত্র জানায়, ভিকারুননিসা নূন স্কুলের শিক্ষক হাসনা হেনা মগবাজারের ডাক্তারের গলি এলাকার ভাড়া বাসায় বসবাস করেন। অরিত্রির মৃত্যুর ঘটনার মামলায় গ্রেফতারের ভয়ে তিনি নিজ বাসা থেকে উত্তরায় একটি বাসায় ওঠেন। আপাতত কিছু দিন ঢাকার বাইরে গিয়ে থাকার পরিকল্পনা ছিল তার। তবে গোয়েন্দারা তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে অবস্থান নিশ্চিত করেন। এরপর বুধবার রাতে গ্রেফতার করে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। সেখানে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

হাসনা হেনা জানান, অরিত্রির মৃত্যুর ঘটনায় তার দায় রয়েছে। দায় রয়েছে অন্য দুই শিক্ষকেরও। তার দায়িত্ব হলো, কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে সংশ্নিষ্ট ছাত্রী ও তার অভিভাবককে অধ্যক্ষের সামনে হাজির করা। মোবাইল ফোন সেট পাওয়ার পর তিনি সে দায়িত্ব পালন করেন। অধ্যক্ষ তাকে যে নির্দেশনা দিয়েছেন, তা-ই পালন করেছেন তিনি। পরে এ ঘটনার জের ধরে অরিত্রির আত্মহত্যার বিষয়টি জানতে পেরে তিনি মর্মাহত। 

সোমবার দুপুরে রাজধানীর শান্তিনগরের নিজ বাসায় ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস নেয় অরিত্রি অধিকারী। গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। 

আন্দোলন স্থগিত :গতকাল সকালে স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, তৃতীয় দিনের মতো বৃহস্পতিবারও বেশ কিছু ছাত্রী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির মূল ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছে। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন অভিভাবকরাও। শিক্ষকদের আশ্বাসে গতকাল বিকেল ৫টায় স্কুলের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেয় স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী আনুশকা রায়। এ শিক্ষার্থী সাংবাদিকদের জানায়, শিক্ষকরা আমাদের সব দাবি পর্যায়ক্রমে মেনে নেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন। আমরা এখন ক্লাসে ও পরীক্ষায় ফিরে যাব। 

আন্দোলনকারী ছাত্রীরা জানায়, তারা যে ছয় দফা দাবি জানিয়েছিল, তার মধ্যে কিছু বিষয়ে অগ্রগতি হয়েছে। এতে তারা সন্তুষ্ট। বাকি দুই দফা দাবি তাদের। সেটিও মানতে হবে। এই দুই দফা দাবি হলো- পরিচালনা কমিটির সদস্যদের পদত্যাগ এবং অরিত্রির বাবা-মায়ের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের জন্য তাদের কাছে কর্তৃপক্ষের প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করা। তারা দ্রুত এই দুটি দাবির বাস্তবায়ন দেখতে চায়। কয়েকজন ছাত্রী জানায়, অরিত্রির আত্মহত্যার ঘটনায় প্ররোচনাকারী হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ, শাখা প্রধান ও তার এক শ্রেণিশিক্ষককে চিহ্নিত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি। তিনজনকেই বুধবার বরখাস্ত করা হয়েছে। এই পদক্ষেপে তারা সন্তুষ্ট। মূল দুই দফা দাবির বাইরেও ছাত্রীদের দাবি কোনো শিক্ষার্থীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হবে না- এমন নিশ্চয়তা দেওয়া, কথায় কথায় শিক্ষার্থীদের টিসির হুমকি না দেওয়া, প্রতিটি ক্লাসে মনোবিদের ব্যবস্থা রাখা, আন্দোলনকারী কারও বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া। তারা এসব দাবির বিষয়ে লিখিত প্রতিশ্রুতি চায়। 

ছাত্রীদের দাবি, বরখাস্ত হওয়া ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে দণ্ডবিধির ৩০৫ ও ৩০৬ ধারায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অপরাধে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। আমরা চাই শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে পরিপূর্ণভাবে হস্তক্ষেপ করুক। তারা নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করুক। সেই পর্ষদই নতুন করে অধ্যক্ষ নিয়োগসহ অন্যান্য সমস্যার সমাধান করবে।

ক্ষমা চাইল পরিচালনা কমিটি :অরিত্রির আত্মহত্যায় আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চাইতে হবে- ছাত্রীদের এমন দাবির পরপরই গতকাল স্কুলে ক্যাম্পাসে গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সামনে এসে পরিচালনা কমিটির পক্ষে ক্ষমা চেয়েছেন সভাপতি গোলাম আশরাফ তালুকদার। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমরা মর্মাহত। আমরা এ ঘটনায় জন্য অরিত্রির বাবা-মায়ের কাছে ক্ষমা চাই।

তিনি বলেন, ছাত্রীদের ছয়টি দাবির মধ্যে প্রথম চারটি বাস্তবায়নের পর্যায়ে আছে, বাকিগুলো ধীরে ধীরে পূরণ করা হবে। নতুন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগের মাধ্যমে স্কুল ও কলেজকে স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরিয়ে নিতে দু-এক দিনের মধ্যে গভর্নিং বডি সভায় বসবে।

পরিচালনা কমিটির সদস্যদের পদত্যাগের দাবির বিষয়ে সভাপতি বলেন, প্রতিষ্ঠানের বৃহৎ স্বার্থে পদত্যাগ করতে হলে আমি পদত্যাগ করব। অন্য সদস্যদের কথা বলতে পারব না। পুরো পরিচালনা কমিটির পদত্যাগের বিষয়টি বোর্ড সভায় উত্থাপন করা হবে।

প্রশাসনিক দুর্বলতা :অরিত্রি আত্মহত্যার ঘটনায় ভিকারুননিসা নূন স্কুলের প্রশাসনিক দুর্বলতা আর অনিয়মের চিত্র ফুটে উঠেছে বলে মনে করেন অভিভাবকরা। তারা জানান, এ বিদ্যালয়ে বেশিরভাগ শিক্ষক-শিক্ষিকা প্রভাবশালীদের আত্মীয়-স্বজন। তারা নানা তদবিরের মাধ্যমে এখানে নিয়োগ পেয়েছেন। ফলে তারা অভিভাবকদের সহজে পাত্তা দেন না। তাদের কথা শুনতে চান না। কেবল অভিভাবক নন, শিক্ষাবিদরাও জানায়, অরিত্রির আত্মহত্যার মধ্য দিয়ে ভিকারুননিসার পুরো প্রশাসনিক কাঠামোর দুর্বলতা উঠে এসেছে। এ ঘটনা এই স্কুলের সব অব্যবস্থাপনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। তারা বলেন, শিক্ষকদের কাজ শুধু পড়াশোনা করানো নয়, শিক্ষার্থীদের ভুল সংশোধন করানোও। কিন্তু ভিকারুননিসায় তিনজন শিক্ষক এ কাজ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। আমাদের স্কুলগুলো যে ছাত্রবান্ধব নয়, একটি ঘটনার মধ্য দিয়ে জানান দিয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক শিক্ষা বিশ্নেষক তৌহিদুল হক বলেন, বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার পরিবেশ নিয়ে অনেক আগেই প্রশ্ন উঠেছে। কিন্তু অভিভাবকরা সে রকম তৎপরতা না দেখানোয় কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। এখন একজন অরিত্রিই আত্মহত্যার মধ্য দিয়ে সবার চোখ খুলে দিল। তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে রাজনীতি যখন সরাসরি সংযোগ হয়েছে তখনই পরিবেশ নষ্ট হওয়া শুরু হয়েছে। সেটি এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে। অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচনে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য হয়। এটা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিচালনা পর্ষদে থাকবেন শিক্ষাবিদ, এলাকায় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। কিন্তু এখন উল্টোটা হচ্ছে।

এদিকে, অরিত্রির মৃত্যুর ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তসহ দোষীদের দৃষ্টান্ততমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম। গতকাল এক বিবৃতিতে এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে সংগঠনের সম্পাদক নাছিমা আক্তার জলি বলেন, অরিত্রির মৃত্যু কোনো স্বাভাবিক মৃত্যু নয়, এটি একটি হত্যাকাণ্ড।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.015225887298584