জামালপুরে শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পের ১৪টি ভবনের মধ্যে একটি ভবনের কাজও শেষ হয়নি। এর মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ না হতেই তড়িঘড়ি করে আজ শনিবার উদ্বোধন করা হচ্ছে ছাত্রদের আবাসিক হল। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসান এটি উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধকের নামফলক তৈরির জন্য দুই দিন ধরে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে শ্রমিকরা। তবে ছাত্রাবাসটি বসবাসের উপযোগী করতে আরো প্রায় এক মাস সময় লাগতে পারে বলে জানা গেছে। তবে আগামী জুনে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে পুরো প্রকল্পের আর কোনো ভবনের কাজও সমাপ্ত করা অসম্ভব বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এর মধ্যে তড়িঘড়ি করে আলাদা করে একটি ভবন উদ্বোধন করা হচ্ছে।
পাঁচ বছর আগে জামালপুর সদর হাসপাতাল ভবনে অস্থায়ীভাবে যাত্রা শুরু করে জামালপুরে শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ। বর্তমানে পাঁচটি ব্যাচের শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট তীব্র হয়ে উঠেছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, ছাত্রদের হলটিতে উঠতে আরো সময় লাগবে। তবে দিনরাত দ্রুতগতিতে কাজ করতে গিয়ে এ কাজের মান নিয়েও প্রশ্ন ওঠার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির একজন সাইট ইঞ্জিনিয়ার। কাজ শেষ করে উদ্বোধন করা হলে ভালো হতো বলেও ওই প্রকৌশলী জানিয়েছেন।
তবে আবাসন সংকট দূর করতে চারতলা আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন পৃথক ছাত্রাবাস ও ছাত্রীনিবাস ভবন নির্মাণ শেষ করতে দ্রুত তাগিদ দেয় কলেজ কর্তৃপক্ষ। ময়মনসিংহের ভাওয়াল কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রায় ২৩ কোটি ৮০ লাখ ৮৪ হাজার টাকায় ভবন দুটি নির্মাণ করছে। দুটি ভবনেরই মূল অবকাঠামো নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে।
সরেজমিনে গতকাল সেখানে গিয়ে দেখা গেছে, ভবনটির বৈদ্যুতিক কাজ এখনো শেষ হয়নি। নিচতলার পুরো মেঝেতে চলছে টাইলসের কাজ। চলছে বৈদ্যুতিক তার টানা এবং সুইচ বোর্ড স্থাপন কাজ। প্রকল্প এলাকায় এখনো গ্যাস সংযোগ না আসায় ভবনটির বাইরে রান্নাঘরের আলাদা শেড নির্মাণের কথা ভাবা হচ্ছে। ছাত্রদের থাকার বিছানাপত্র ও অন্যান্য আসবাবপত্র এখনো ক্রয় করা হয়নি।
ছাত্রাবাস নির্মাণকাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাইট ইঞ্জিনিয়ার মো. আব্দুল হান্নান বলেন, ‘দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী আমাদের কাজের মেয়াদ রয়েছে আসছে ৩০ জুন পর্যন্ত। কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুরোধে ছাত্রাবাস ভবনটির কাজ দ্রুত করতে হচ্ছে। এখন দিনরাত কাজ চলমান রয়েছে। চারতলা এই ভবনের প্রায় শতকরা ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে।’ দ্রুত কাজ করতে গিয়ে কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে বলেও তিনি শঙ্কা প্রকাশ করেন। প্রকল্পটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল ওয়াকিল বলেন, আসছে জুন মাস পর্যন্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজের মেয়াদ আছে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে দুটি ছাত্রাবাসের মধ্যে ছেলেদেরটা দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে বলা হয়। আবাসন সংকটে শিক্ষার্থীরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছে বলে তিনি জানান।