নিহত সিনহা রাশেদের সাথে থাকা শিক্ষার্থীরা কে কোথায়?

দৈনিক শিক্ষা ডেস্ক |

বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার মেরিন ড্রাইভে পুলিশের গুলিতে নিহত মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান নিহত হবার ঘটনায় সংবাদ মাধ্যম এবং ইন্টারনেট ভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগের প্ল্যাটফর্মে যত আলোচনা হচ্ছে, এর বেশিরভাগই চলছে নিহত সাবেক সেনা কর্মকর্তা, টেকনাফ পুলিশকে কেন্দ্র করে। বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন আকবর হোসেন।

প্রতিবেদনে আরও জানা যায,  এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশ এবং সামরিক বাহিনীর সম্পর্ক কোন দিকে গড়ায় সেদিকেও অনেকের নজর রয়েছে।

যদিও দুই বাহিনীর প্রধান এরই মধ্যে পরিষ্কার করে দিয়েছেন যে মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান নিহত হবার বিষয়টি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা।

এসব আলোচনার ভিড়ে অনেকটাই চাপা পড়ে গেছে নিহত সিনহা রাশেদের সাথে থাকা তিন শিক্ষার্থীর কথা।

সিনহা মো. রাশেদ খানের সাথে কক্সবাজারে ডকুমেন্টারি তৈরির সময় যে তিনজন সাথে ছিলেন তাদের মুক্তির দাবিতে সহপাঠিরা নানা কর্মসূচি পালন করছে।

তিন শিক্ষার্থীর কী অবস্থা?

এই তিনজন বেসরকারি স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগের শিক্ষার্থী। তারা হলেন শিপ্রা দেবনাথ, সাহেদুল ইসলাম সিফাত এবং তাহসিন রিফাত নূর।

এদের মধ্যে তাহসিন রিফাত নূরকে তাদের অভিভাবকের কাছে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। বাকি দুইজন - শিপ্রা দেবনাথ এবং সাহেদুল ইসলাম সিফাত এখন কক্সবাজার কারাগারে রয়েছেন।

এর মধ্যে সাহেদুল ইসলাম সিফাতের বিরুদ্ধে দুটি মামলা এবং শিপ্রা দেবনাথের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। পুলিশের গুলিতে যখন সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ নিহত হন তখন সেখানে ছিলেন সাহেদুল ইসলাম সিফাত।

সিফাতের বিরুদ্ধে একটি মামলা হচ্ছে, সরকারি কাজে বাধা দেয়া ও হত্যার উদ্দেশ্যে অস্ত্র দিয়ে গুলি করার জন্য তাক করা।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, সিনহা মোহাম্মদ রাশেদের সাথে যোগসাজশে সিফাত এ কাজ করেছে।

তার বিরুদ্ধে দায়ের করা আরেকটি মামলা মাদকদ্রব্য আইনে। সে মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে অবৈধ মাদক জাতীয় ইয়াবা ট্যাবলেট এবং গাঁজা যানবাহনে নিজ হেফাজতে রাখার অপরাধ।

অন্যদিকে শিপ্রা দেবনাথের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, তিনি বিদে মদ, দেশীয় চোলাই মদ ও গাঁজা নিজ হেফাজতে রেখেছেন।

পুলিশের ভাষ্য মতে, আত্মরক্ষার জন্য মেজর রাশেদ খানকে গুলি করার পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে হিমছড়ি নীলিমা রিসোর্টে তাদের অস্ত্রের লাইসেন্স রয়েছে। এরপর সেটি খুঁজতে পুলিশ রিসোর্টে যায়।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, সে রিসোর্টে গিয়ে একটি কক্ষে শিপ্রা দেবনাথ এবং আরেকটি কক্ষে তাহসিন রিফাত নূরকে পাওয়া যায়।

এজাহারে পুলিশ উল্লেখ করেছে, শিপ্রা দেবনাথের কক্ষ তল্লাশি করে সেখানে বিদেশি মদ, দেশি চোলাই মদ এবং গাঁজা পাওয়া যায়।

পরিবার কী বলছে?

শিপ্রা দেবনাথের বাড়ি কুষ্টিয়ার মিরপুর থানায়। তার বাবা-মা সেখানেই বসবাস করেন। ঢাকার রামপুরা এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন শিপ্রা দেবনাথ।

তার মা পূর্ণিমা দেবনাথ টেলিফোনে জানান, গ্রেফতারের পর থেকে মেয়ের সাথে তাদের সরাসরি যোগাযোগ যোগাযোগ হয়নি।

কক্সবাজারে অবস্থানরত তাদের পরিচিত এক ব্যক্তির মাধ্যমে সেখানে একজন আইনজীবী ঠিক করা হয়েছে। গ্রেফতারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে উপস্থাপনের বাধ্যবাধকতা থাকলেও সেটি করা হয়েছে কি না সে সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই শিপ্রা দেবনাথের মায়ের।

শিপ্রা দেবনাথের একমাত্র ভাই প্রান্ত দেবনাথ বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন।

সেখান থেকে টেলিফোনে তিনি জানান, বছর খানেক আগে কোনো এক বন্ধুর মাধ্যমে সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানের সাথে পরিচয় হয় শিপ্রা দেবনাথের।

দুজনেরই আগ্রহের ক্ষেত্র ছিল ইউটিউব চ্যানেলের জন্য ডকুমেন্টারি তৈরি করা। অন্যদিকে সাহেদুল ইসলাম সিফাতের বাড়ি বরগুনার বামনা উপজেলায়।

ঢাকার মধুবাগ এলাকায় খালার বাসায় বসবাস করতেন তিনি। সাহেদুল ইসলাম সিফাতের মা লন্ডনে বসবাস করেন। বাংলাদেশে তার নিকটাত্মীয় বলতে খালা এবং মামা।

তার খালু মাসুম বিল্লাহ বলেন, গ্রেফতারের পরে তাকে আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছিল।

তবে মি. সিফাতের মানসিক অবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন তার খালু। জেল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে গ্রেফতারের পর একবার টেলিফোনে কথা বলা সম্ভব হয়েছিল বলে উল্লেখ করেন তার খালু মাসুম বিল্লাহ।

মাসুম বিল্লাহ বলেন, "দেখুন ওর সামনেই গুলির ঘটনা ঘটেছে। ও প্রচণ্ড ট্রমার মধ্যে আছে।"

শিপ্রা দেবনাথ এবং সাহেদুল ইসলাম সিফাত উভয়ের জন্য একজন আইনজীবী ঠিক করা হয়েছে কক্সবাজারে।

আইনজীবী আবুল কালাম আজাদের অফিস থেকে জানানো হয়েছে উভয়ের জামিনের জন্য আবেদন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার অথবা রোববার জামিনের শুনানি হতে পারে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.01543402671814