সরকারের অনুমতি ছাড়া যত্রতত্র এ সব স্কুল গড়ে উঠেছে। এগুলোর শিক্ষকদের নেই কোনো বিশেষ প্রশিক্ষণ। অটিজম কিংবা প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষা দানের কোনো অভিজ্ঞতা নেই।
ঝিনাইদহে সরকারের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয় স্থাপনের হিড়িক পড়ে গেছে। অভিযোগ উঠেছে এক শ্রেণির ধান্ধাবাজা লোক যত্রতত্র এ সব স্কুল গড়ে তুলছে। এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নেই কোনো বিশেষ প্রশিক্ষণ। অটিজম কিংবা প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষা দানের কোনো অভিজ্ঞতা নেই।
প্রথমে স্থানীয়ভাবে কিছু লোক নিয়ে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি গঠন করা হয়। তারপর ইচ্ছেমতো পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। অভিযোগ অধিকাংশ স্কুলে শিক্ষকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। শিক্ষকদের নানাভাবে প্রলুব্ধ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে এ জেলায় প্রায় ২৫টি অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী স্কুল গড়ে উঠেছে। মহেশপুর উপজেলাতেই ১০টির ওপর স্কুল গড়ে উঠেছে। এসব স্কুলের শিক্ষকদের বিএসএড প্রশিক্ষণ (প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য বিশেষ শিক্ষাদান প্রশিক্ষণ) থাকার কথা। যাদের শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তাদের অধিকাংশের এ প্রশিক্ষণ নেই।
জেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী এ জেলায় অটিস্টিক শিশুর সংখ্যা তিনশ একজন এবং প্রতিবন্ধী লোকের সংখ্যা ২৭ হাজার ৩৮৪ জন।
জানা যায়, এ অফিস থেকে কোনো অটিস্টিক বা প্রতিবন্ধী স্কুলের অনুমোদন দেওয়া হয়নি। মন্ত্রণালয়ে আবেদনের প্রেক্ষিতে শৈলকুপা উপজেলায় ৩টি, সদর উপজেলায় ৩টি, কোটচাঁদপুর উপজেলায় ২টি, মহেশপুর উপজেলায় ২টি ও কালীগঞ্জ উপজেলায় ৩টি স্কুলের তদন্ত আসে। তদন্ত শেষে প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
সদর উপজেলার যাত্রাপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভবনে একটি অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী স্কুল চলছে ২০১৫ সাল থেকে।
প্রধান শিক্ষক মো. লিটন হোসেন জানান, স্কুলে ১৩ জন শিক্ষক আছেন। তাদের কারো বিএসএড প্রশিক্ষণ নেই। আগামীতে তারা প্রশিক্ষণ নেবেন। মন্ত্রণালয়ে স্কুলের অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছেন। তদন্ত হয়ে গেছে।
ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ জানান, বিধিমালা অনুযামী প্রতিটি উপজেলায় একটি করে অটিস্টিক বিদ্যালয় থাকার কথা। কিন্তু কিছু স্বার্থান্বেষী মহল ব্যক্তিগত স্বার্থে এসব প্রতিষ্ঠান খুলছে। সরকারের কোনো অনুমতি নেই। প্রতিবন্ধী বা অটিস্টিক শিশুদের শিক্ষার মান নিশ্চিতে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।