ফেনীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলায় সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিনকে আটক করেছে পিবিআই। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকালে তাকে তার নিজ এলাকা থেকে আটক করা হয়। পিবিআই’র চট্টগ্রাম রেঞ্জের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) মোহাম্মদ ইকবাল এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, আমরা আজকে তাকে আটক করেছি। এর আগে একাধিক আসামির জবানবন্দিতে তার নাম এসেছে। তাই তাকে আটক করা হয়েছে। তিনি আমাদের হেফাজতে রয়েছেন।
পিবিআই প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার বলেন, ‘রুহুল আমিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য এনেছি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’
আলোচিত নুসরাত হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত ১৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হলো— অধ্যক্ষ এস এম সিরাজ উদ দৌলা, কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম, শিক্ষক আবছার উদ্দিন, সহপাঠী আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ জনি, মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, অধ্যক্ষের ভাগ্নি উম্মে সুলতানা পপি, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের হোসেন, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, মো. শামীম, কামরুন নাহার মনি, জান্নাতুল আফরোজ মনি, শরীফ, হাফেজ আবদুল কাদের ও আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমিন।
এর আগে মামলার অন্যতম দুই আসামি নুরুদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। এতে রুহুল আমিনের নাম উঠে আসে। শাহাদাত জবানবন্দিতে জানায়, নুসরাতের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর সে (শাহাদাত) দৌড়ে নিচে নেমে উত্তর দিকের প্রাচীর টপকে বের হয়ে যায়। এর মিনিট খানেকের মধ্যে নিরাপদ স্থানে গিয়ে রুহুল আমিনকে ফোনে নুসরাতকে আগুন দেওয়ার বিষয়টি জানায় সে। তখন রুহুল আমিন বলেন, ‘আমি জানি। তোমরা চলে যাও।’
সঙ্গত, গত ৬ এপ্রিল ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসায় আলিম পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে গেলে কৌশলে নুসরাতকে ছাদে ডেকে নিয়ে গিয়ে তাঁর গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয় মাদরাসার অধ্যক্ষের অনুগত কয়েকজন শিক্ষার্থী। গত ২৭ মার্চ অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগে মামলা করেন নুসরাতের মা। মামলা প্রত্যাহারে রাজি না হওয়ায় নুসরাতের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ওই দিনই গুরুতর আহত অবস্থায় নুসরাতকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। শরীরে ৭৫ শতাংশের বেশি পোড়া নিয়ে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে ১০ এপ্রিল হার মানেন নুসরাত।