নুসরাত হত্যা: আদালতে যা বললেন শিক্ষক-সহপাঠীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

বহুল আলোচিত ফেনীর সোনাগাজীর নুসরাত হত্যা মামলায় আরও তিনজন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। তারা হলেন নুসরাতের দুই সহপাঠী তানাজিমা বেগম সাথী ও জাহেদা তামান্না এবং শিক্ষক নুরুল আবছার ফারুকী। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালত তাদের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।

তানাজিমা বেগম সাথী জানান, ২৭ এপ্রিল মাদরাসার পিয়ন নুরুর আমিন নুসরাতকে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দ্যৌলার কক্ষে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে নুসরাতের শ্লীলতাহানি করা হয়। পরের দিন নুর উদ্দিন ও শামীম তাকেসহ অন্যান্য শিক্ষার্থীদে জোর করে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দ্যৌলার পক্ষে বিক্ষোভ ও মানববন্ধনে নিয়ে যায়। সাথী জানান, নুসরাত তামান্নার উদ্দেশ্যে খাতায় যে চিঠি লিখে গিয়েছিলেন তা তারা প্রথমে জানতো না। পরে শুনেছে। চিঠিতে নুসরাত লিখেন, তোরা আমার ক্লোজ বান্ধবী হয়েও জানলিনা সিরাজ উদ দ্যৌলা আমার সাথে কি আচরণ করেছে? আমি এর শেষ পর্যন্ত লড়ে যাব।

নুসরাতের অপর সহপাঠী বিবি জাহেদা তামান্না জানান, সাথীর কথা আর আমার কথা এক। আদালত তাই তামান্নার স্বাক্ষ্য গ্রহণ না করে সাথীর সাক্ষ্যকে তামান্নার সাক্ষ্য হিসেবেও গ্রহণ করে নেন।

মামলার অপর সাক্ষী শিক্ষক নুরুল আবছার ফারুকী জানান, ঘটনার দিন আমি একটি হলের পরিদর্শকের দায়িত্বে ছিলাম। পরীক্ষা শুরু হওয়ার মুহূর্তে দেখি একটি মেয়ের পোড়া শরীর উপর থেকে নামানো হচ্ছে। পরে জানতে পেলাম সে নুসরাত। আমি ঘটনাটি সাথে সাথে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবহিত করি। 

পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আদালত বুধবার বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত মূলতবি করা হয়। বুধবার ৪ সাক্ষ্য দেবেন মাদ্রাসার বাংলা বিভাগের প্রভাষক খুজিস্তা খানম, আকলিমা আক্তার, মো. কায়সার মাহমুদ ও আয়া বেবি রানি দাস।

এ পর্যন্ত এই মামলায় ২১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্য দিয়ে মামলার ১৬ আসামিকে জেলা কারাগার থেকে এনে আদালতের কাষ্টডিতে রাখা হয়। এরপর বেলা সাড়ে ১১টায় তাদের ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ এর আদালতে হাজির করা হয়।  

প্রসঙ্গত, সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে নুসরাতকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগ আনেন নুসরাতের মা শিরিন আক্তার। মামলাটি তুলে না নেওয়ায় গত ৬ এপ্রিল পরীক্ষার হল থেকে নুসরাতকে কৌশলে ডেকে পাশের ভবনের তিন তলার ছাদে নিয়ে সিরাজ উদ দৌলার সহযোগীরা নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। পাঁচদিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে গত ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে নয়টায় ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে মৃত্যুবরণ করে নুসরাত।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028519630432129