ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। শুরু হয়েছে পিবিআইর তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরা। বুধবার ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে দিনভর জেরা করা হয় তাকে। এ সময় কয়েক দফা আদালতে উত্তেজনা দেখা যায়।
পিবিআইর পরিদর্শক শাহ আলমকে জেরা করেন মামলার ১৪ আসামির আইনজীবী ফারুক আহমেদ। জেরার জবাবে তিনি জানান, নুসরাতের গায়ে আগুন দেওয়ার পর তার শরীরে পানি দিয়ে তা নেভান মাদ্রাসার কর্মচারী বেবী রানী দাস, নুরুল আমিনসহ কয়েকজন। পরে তাকে কাপড়ে মুড়িয়ে সোনাগাজী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
জেরায় প্রশ্ন করা হয়, নুসরাতের মৃত্যুর আগে জবানবন্দিতে তাকে কীভাবে মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নেওয়া হয় বলে বলা হয়েছে? উত্তরে শাহ আলম জানান, ৪ জন বোরকা ও নেকাব পরা মেয়ে তাকে ছাদে ডেকে নিয়ে যায়। জেরা চলাকালে বাদী পক্ষ ও আসামি পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে কয়েক দফা বাকবিতণ্ডা সৃষ্টি হয়। এ সময় ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ তাদের শান্ত করেন।
এর আগে সকালে নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা আসামি কামরুন নাহার মনির জামিন প্রার্থনা করা হয়। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে আসামিকে চিকিৎসা সেবা প্রদান করে বিশেষ ব্যবস্থায় হাজির করার আদেশ দেন। বিচারক সোনাগাজী পৌর সভা ও হাসপাতালের ৬ এপ্রিলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ আদালতে উপস্থাপন করার আদেশ দেন।
পিপি হাফেজ আহাম্মদ জানান, নুসরাত হত্যা মামলায় ৯২ জন সাক্ষীর মধ্যে ৮৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। বাকিদের সাক্ষ্য গ্রহণ আর প্রয়োজন হবে না। তবে জেরা শেষ হতে লম্বা সময়ের প্রয়োজন হতে পারে।
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছেন আদালত।
গত ৬ এপ্রিল সোনাগাজী ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাতের শরীরে একদল সন্ত্রাসী আগুন ধরিয়ে দেয়। টানা পাঁচদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে ১০ এপ্রিল মারা যান নুসরাত। এ ঘটনায় মাদ্রাসার তৎকালীন অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাসহ ১২ জন আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ১৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছেন। তারা সবাই এখন কারাবন্দি।