নুসরাত হত্যা : থানা-পৌরসভার সিসিটিভি ফুটেজ তলব

ফেনী প্রতিনিধি |

মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন প্রথম তদন্তকারী কর্মকর্তা সোনাগাজী থানার সাবেক পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল হোসেন। সোমবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে তার সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শুরু হয়। আজ মঙ্গলবার আবারও জেরার আদেশ দিয়ে বিকেলে আদালত মুলতবি ঘোষণা করেন বিচারক। এ ছাড়া এ মামলায় পুলিশ সদর দপ্তরে ফেনীর সাবেক এসপি জাহাঙ্গীর আলম সরকারের পাঠানো প্রতিবেদনও আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে।

নুসরাত হত্যা মামলার ১৬ আসামিকে গতকাল সকালে কড়া নিরাপত্তায় ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে হাজির করে পুলিশ। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে আদালতে মামলার শুনানি শুরু হয়। প্রথমেই সরকার পক্ষ ও আসামি পক্ষের আইনজীবীদের দেয়া কয়েকটি পিটিশনের শুনানি হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহ আলমের সাক্ষ্যগ্রহণের সময় প্রজেক্টর ও ক্যাসেট প্লেয়ারের মাধ্যমে আসামি শাহাদাত হোসেন শামীমের জব্দকৃত মোবাইলের কথোপকথন, নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমানের রেকর্ড করা মৃত্যুর আগে নুসরাতের বক্তব্যের দুটি ভিডিও ও একটি অডিও সিডি এবং আসামি শাহাদাত হোসেন শামীম ও রুহুল আমিনের অডিও কল রেকর্ড আদালতে প্রদর্শনের আদেশের আবেদন করেন পিপি হাফেজ আহাম্মদ। আদালত আবেদন মঞ্জুর করেন। নুসরাতের শরীরে আগুন দেয়ার দিন সোনাগাজী থানা ও সোনাগাজী পৌরসভার সিসিটিভি ক্যামেরায় ধারণকৃত ফুটেজ এবং ঘটনার পর সোনাগাজী থানার প্রথম জিডি আদালতে উপস্থাপন করার আদেশ প্রার্থনা করেন আসামি পক্ষের আইনজীবী গিয়াস উদ্দিন নান্নু। বিচারক সিসিটিভি ফুটেজ ও সোনাগাজী থানার জিডি আজ মঙ্গলবার আদালতে উপস্থাপন করার আদেশ দেন। আদালত পরিদর্শক মোহাম্মদ জিলানীকে এজলাসে ডেকে ব্যক্তিগত তদারকির মাধ্যমে আদালতে এসব উপস্থাপন করতে বলেন বিচারক।

পিপি হাফেজ আহাম্মদ জানান, আসামি পক্ষের আইনজীবীর আগের এক পিটিশন আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সাবেক এসপি জাহাঙ্গীর আলম সরকারের পাঠানো প্রতিবেদনের কপি আদালত ও সংশ্লিষ্ট আইনজীবীকে সরবরাহ করা হয়েছে। গত ৯ এপ্রিল জাহাঙ্গীর আলম ওই প্রতিবেদন পুলিশ সদর দপ্তরে পাঠিয়েছিলেন। আসামি পক্ষের আইনজীবী গিয়াস উদ্দিন নান্নু প্রতিবেদন হাতে পেয়েছেন জানিয়ে বলেন, ওই প্রতিবেদনে একদল সন্ত্রাসী নুসরাতের শরীরে আগুন দিয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে। বিচারক মামুনুর রশিদ আসামি পক্ষের আইনজীবী নান্নুকে উদ্দেশ করে বলেন, নিহত নুসরাতের ভাই নোমান ও সোনাগাজী পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম খোকনের মোবাইল ফোনের কথোপকথনের রেকর্ড আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আদালতে পৌঁছবে।

বিভিন্ন পিটিশনের নিষ্পত্তি শেষে নুসরাত হত্যা মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা সোনাগাজী থানার তৎকালীন পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল হোসেনের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। কামাল হোসেন আদালতে বলেন, সোনাগাজী থানায় মামলা দায়েরের পর তিনি তদন্তে নামেন। ৮ এপ্রিল মামলা দায়েরের পর ১০ এপ্রিল ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পিবিআইকে দেয়া হয়। তদন্তকালে দুই দিনে তিনি ৯ আসামিকে গ্রেফতার করেন। 

তিনি আদালতকে জানান, সহপাঠী উম্মে সুলতানা পপি ৬ এপ্রিল পরীক্ষা শুরুর আগে নুসরাতকে মাদরাসার তিনতলার ছাদে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে বোরকা, হাতমোজা ও চশমা পরা চারজন নুসরাতকে প্রথমে মামলা প্রত্যাহারের জন্য চাপ দেয়। পরে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা।

সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামি পক্ষের আইনজীবী আহসান কবির বেঙ্গল পুলিশ কর্মকর্তা কামাল হোসেনকে জেরা শুরু করেন। কিন্তু জেরা শেষ হওয়ার আগে বিচারক আদালত মুলতবি ঘোষণা করে মঙ্গলবার আবার দিন ধার্য করেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ - dainik shiksha পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী - dainik shiksha ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ - dainik shiksha প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন কলেজ পরিচালনা পর্ষদ থেকে ঘুষে অভিযুক্ত সাংবাদিককে বাদ দেওয়ার দাবি - dainik shiksha কলেজ পরিচালনা পর্ষদ থেকে ঘুষে অভিযুক্ত সাংবাদিককে বাদ দেওয়ার দাবি পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.002863883972168