নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা মামলার আসামি নূর উদ্দিনকে ময়মনসিংহের ভালুকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি এ মামলার দ্বিতীয় নম্বর আসামি। শুক্রবার (১২ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে ভালুকার সিডস্টোর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ময়মনসিংহ ব্রাঞ্চ। তাদের সহায়তা করে ভালুকা মডেল থানা পুলিশ।
পুড়িয়ে হত্যার আগে শ্লীলতাহানির অভিযোগে যখন অধ্যক্ষ সিরাজ আটক হন তখন তার মুক্তির দাবিতে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এই নূর।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ তালুকদার বলেন, নূর উদ্দিনকে গ্রেফতার করে পিবিআই কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গত ৬ এপ্রিল সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসায় ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায় মুখোশধারীরা।
পরিবারের অভিযোগ, ২৭ মার্চ মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা তার কক্ষে ডেকে নিয়ে নুসরাতের শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। এ বিষয়ে স্বজনদের দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের চাপ দিয়েও প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় নুসরাতকে আগুনে পোড়ানো হয়।
আগুনে ঝলসে যাওয়া নুসরাত ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল রাতে মারা যায়। ঘটনার প্রথম থেকেই সিরাজ উদ দৌলার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত নূর উদ্দিনকে প্রধান সন্দেহভাজনদের একজন মনে করছেন স্থানীয়রা।
তাদের ভাষ্যে, নুসরাতকে আগুনে ঝলসে দেওয়ার ঘটনার আগের দিন ৫ এপ্রিল রাতে এবং ঘটনার দিন ৬ এপ্রিল সকালেও নূর উদ্দিনকে মাদরাসার মূল ফটকে দেখা গেছে। তার সঙ্গে ছিলেন শাহাদাত হোসেন ওরফে শামীম নামে আরও একজন। এ দু’জনই মামলার দ্বিতীয় ও তৃতীয় নম্বর আসামি।
নুসরাতের শ্লীলতাহানির মামলায় ২৭ মার্চ অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা গ্রেফতার হলে তার মুক্তির দাবিতে ‘মুক্তি পরিষদ’ নামে একটি কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটির আহ্বায়ক হন নূর উদ্দিন এবং যুগ্ম-আহ্বায়ক হন শাহাদাত। তাদের নেতৃত্বেই সিরাজ উদদৌলার মুক্তির দাবিতে ২৮ ও ৩০ মার্চ উপজেলা সদরে দুই দফা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি হয়।
অভিযোগ পাওয়া যায়, শ্লীলতাহানির মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এরাই নুসরাত ও তার স্বজন-সঙ্গীদের হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিলেন।