ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও তাণ্ডবের ঘটনায় এবার আরেক ছাত্রকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
তার নাম সাইদুর রহমান। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছাত্র। গতকাল ক্যাম্পাস এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এ ব্যাপারে ডিবির যুগ্ম কমিশনার আবদুল বাতেন বলেন, উপাচার্যের বাসায় ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের সময় এক তরুণকে বাসার দেয়ালের ওপর দিয়ে লাফিয়ে তাণ্ডবে অংশ নিতে দেখা যায়। পরবর্তীতে বিভিন্ন ফুটেজে তার তাণ্ডবে জড়িত থাকার বিষয়টি ধরা পড়ে। তাকে বুধবার গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নেওয়া হয়েছে।
তদন্ত-সংশ্নিষ্ট সূত্র জানায়, এরই মধ্যে এ ঘটনায় গ্রেফতার রাকিবুল হাসান ওরফে রাকিবকে টিআই প্যারেডের মাধ্যমে ভিসির বাসার নিরাপত্তারক্ষী আনোয়ারুল্লাহ শনাক্ত করেছেন। এর আগে উপাচার্যের বাসভবনে হামলা ও ভাংচুরের মামলায়
চারজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা হলেন- মাসুদ আলম ওরফে মাসুদ (২৫), রাকিবুল হাসান ওরফে রাকিব (২৬), আলী হোসেন শেখ ওরফে আলী (২৮) ও আবু সাইদ ফজলে রাব্বী ওরফে সিয়াম (২০)। তাদের মধ্যে মাসুদ আলিয়া মাদ্রাসার ছাত্র। গ্রেফতার দু'জনের কাছ থেকে ঘটনার রাতে উপাচার্যের বাসা থেকে লুট হওয়া দুটি মোবাইল সেট পাওয়া যায়। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ৯ এপ্রিল শাহবাগে সড়ক অবরোধ করলে রাতে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। ঘটনার রাতে একদল মুখোশধারী ভিসির বাসভবনে ঢুকে তাণ্ডব চালায়। তখন উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বাসার ভেতরেই ছিলেন। হামলাকারীদের অনেকে দেয়াল টপকে, সিসিটিভি ক্যামেরা ভেঙে, বাতি নিভিয়ে বিভীষিকাময় পরিবেশ তৈরি করে।
এ ঘটনায় ১০ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র সিকিউরিটি অফিসার এসএম কামরুল আহসান শাহবাগ থানায় মামলা করেন। পরে মামলাটির তদন্ত শুরু করে ডিবি। হামলাকারীরা উপাচার্যের বাসভবনে রাখা দুটি গাড়ি পুড়িয়ে দেয়। আরও দুটি গাড়ি ভাংচুর করে। এ ছাড়া ভবনের সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো ভেঙে ফেলে এবং সিসি ক্যামেরার ডিভিআর পুড়িয়ে নষ্ট করে দেয়। পুলিশ জানায়, ভিসির বাসায় হামলার ঘটনায় মোট চারটি মামলা হয়েছে। সেখানে কারও নাম সুনির্দিষ্টভাবে বলা হয়নি। এ ছাড়া পুলিশের বিশেষ বিভাগের (এসবি) এক সদস্যের গাড়ি পোড়ানো ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে আরও তিনটি পৃথক মামলা করা হয়েছে। পুলিশের ভাষ্য, এসব মামলায় তাড়াহুড়া করে কোনো ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা তাদের উদ্দেশ্য নয়। বরং আন্দোলনের নামে যারা মধ্যরাতে ভিসির বাসভবনে তাণ্ডব চালিয়েছে, তাদের নাম-পরিচয় শনাক্ত করাই তাদের লক্ষ্য। এ ছাড়া হামলায় যারা ইন্ধন দিয়েছে, তাদেরও আইনের আওতায় নেবে পুলিশ।