নোটবই ও গাইডের বাড়তি বোঝা কেন শিক্ষার্থীদের ওপর চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে?

আবুল কালাম আজাদ |

প্রায় ১৭ কোটি মানুষের দেশ বাংলাদেশ। দেশের সব সমস্যার মূলে রয়েছে অশিক্ষা। অশিক্ষার অভিশাপ থেকে জাতিকে উদ্ধার করতে না পারলে দেশের সামগ্রিক অগ্রগতি সম্ভব নয়। তাই মনুষ্যত্ববোধসম্পন্ন মানুষ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। সরকার ইতিমধ্যে এর গুরুত্ব অনুধাবন করে সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষা, জীবন ও কর্মমুখী শিক্ষা এবং বহুমুখী বৃত্তিমূলক শিক্ষা বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

মেধাবী, অভিজ্ঞ লেখক ও বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে যুগোপযোগী এবং অধিকতর সহজভাবে সম্পাদনা করা হয়েছে সব স্তরের পাঠ্যপুস্তক। দায়িত্বশীলতার সঙ্গে সযত্নে নির্দিষ্ট দিনে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই। শিক্ষার্থীরাও বছরের প্রথম দিনে নতুন বই হাতে পেয়ে নতুন উদ্যমে শুরু করে নতুন শিক্ষাবর্ষের পড়াশুনা।

কিন্তু মাস পেরুতে না পেরুতেই কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃক নির্দিষ্ট সহায়ক পুস্তক কেনার একটি তালিকা শিক্ষার্থীদের হাতে ধরিয়ে  বাধ্যতামূলকভাবে।কেন এই কৌশল? তাহলে কি প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টদের কোনো স্বার্থ জড়িত আছে এর মধ্যে?  সৃজনশীল পদ্ধতির পাঠ্যপুস্তক সহজ পদ্ধতিতে প্রণয়ন করেছে সরকার। শিক্ষার্থীরা শ্রেণীকক্ষে পাঠে মনোযোগী হলে নিজেরাই সহজে বুঝতে পারবে পাঠের মূল বিষয়।

তাছাড়া সহায়ক হিসেবে সরকারি সুবিধাভোগী শিক্ষকরা তো রয়েছেনই। এরপরও কেন, কার স্বার্থে সহায়ক পুস্তকের নামে নোট ও গাইডের বাড়তি বোঝা শিক্ষার্থীদের ওপর চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে? বছরের প্রথমে ভর্তি, বেতন, সেশন ফি, পরিপাটি পোশাকসহ আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র কিনতেই আর্থিক সংকটে পড়েন অনেক অভিভাবক। এর ওপর বাধ্যতামূলকভাবে নির্দিষ্ট বাড়তি সহায়ক পুস্তক কেনার চাপ- এ যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা।

অথচ মনুষ্যত্বের দাবিদার এক শ্রেণীর শিক্ষক পছন্দের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নিুমানের নির্ধারিত সহায়ক পুস্তক পাঠ্য করার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয় মোটা অঙ্কের আর্থিক সুবিধা। এ ক্ষেত্রে বই কেনার বিষয়ে শিক্ষার্থীদের পছন্দ বা মতামতের অধিকার ভীষণভাবে খর্ব করা হয়।

প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে নির্দিষ্ট বই কিনতে রীতিমতো চাপ প্রয়োগ করা হয় শিক্ষার্থীদের ওপর। এ কারণে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত বইয়ের গুরুত্ব কমে যায় অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের নিকট। শিক্ষার্থীদের পুরনো সেই মুখস্থ পদ্ধতির দিকে ধাবিত করে নোট ও গাইডের নির্ভরশীল করে তোলা হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে চলমান শিক্ষা পদ্ধতির মূল লক্ষ্য। ফলে অর্জিত হচ্ছে না সৃজনশীল পদ্ধতির লক্ষ্যমাত্রা।

জীবনের জন্য শিক্ষা- এ কথা মাথায় রেখে শিক্ষা ব্যবস্থায় বিরাজমান সব ধরনের অনিয়ম কঠোর হস্তে দমন করা প্রয়োজন।

শ্রীপুর, গাজীপুর

সুত্র: দৈনিক যুগান্তর


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ - dainik shiksha এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ - dainik shiksha পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী - dainik shiksha ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ - dainik shiksha প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.004133939743042