পঁয়ত্রিশোর্ধ্ব নিবন্ধন সনদধারীদের নিয়োগের রায়ের স্থগিতাদেশের সময় বাড়ল

নিজস্ব প্রতিবেদক |

শিক্ষক নিয়োগে পঁয়ত্রিশোর্ধ্ব নিবন্ধন সনদধারীদের আবেদনের সুযোগ সংক্রান্ত হাইকোর্টের সেই রায়ের কার্যকারিতার ওপর জারি করা স্থগিতাদেশের সময় বেড়েছে। এনটিআরসিএর পক্ষ থেকে করা আবেদনের প্রেক্ষিতে এ সময় বাড়লো। এর আগে হাইকোর্টের রায়ের কার্যকারীতা ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত করেছিল সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। 

আজ সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) হাইকার্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে এনটিআরসিএর করা আপিলের ওপর লিভ পিটিশন শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সে শুনানি হয়নি। এদিকে শিক্ষক নিয়োগে পঁয়ত্রিশোর্ধ্ব নিবন্ধন সনদধারীদের আবেদনের সুযোগ সংক্রান্ত হাইকোর্টের সেই রায়ের কার্যকারিতার ওপর জারি করা স্থগিতাদেশের সময় বাড়ানোর আবেদন করেছিল এনটিআরসিএ। যা আদলত গ্রহণ করেছেন। আবেদনটি গৃহিত হওয়ায় আপিলের শুনানি না হওয়া পর্যন্ত রায়ের কার্যকারীতার ওপর জারি করা স্থাগিতাদেশটি বহল থাকবে। একাধিক সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

এনটিআরসিএর আইন শাখার একটি সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানায়, শিক্ষক নিয়োগে পঁয়ত্রিশোর্ধ্ব নিবন্ধন সনদধারীদের আবেদনের সুযোগ সংক্রান্ত হাইকোর্টের সেই রায়ের কার্যকারিতার ওপর জারি করা স্থগিতাদেশের সময় বাড়ানোর আবেদন করা হয়েছিল। নির্ধারিত ফি দিয়ে সরকার পক্ষের আইনজীবীর মাধ্যমে গত ৬ ফেব্রুয়ারি এ আবেদন করা হয়। যা গৃহিত হয়েছে বলে শুনেছি। তবে, এ সংক্রান্ত লিখিত এখন পর্যন্ত হাতে পাইনি। 

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একটি সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানায়, ৬ ফেব্রুয়ারি এনটিআরসিএর করা আবেদনটি গৃহিত হয়েছে। রায়ের স্থগিতাদেশের সময় বাড়ানোর জন্য সরকার পক্ষ থেকে করা কোন আবেদন গ্রহণ করা হলে পরবর্তী শুনানি না হওয়া পর্যন্ত সে স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে। এটাই প্রচলিত নিয়ম।

বিষয়টি নিশ্চিত করে পঁয়ত্রিশোর্ধ্বদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, প্রচলিত নিয়ম বা প্রথা অনুযায়ী এনটিআরসিএ যদি আবেদন দেয় এবং তা গৃহিত হলে রায়ের ওপর দেয়া স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে। তবে, স্থগিতাদেশের সময় কোন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হলে তা স্থাগিত করার আবেদন করা হবে। তা না হলে অনেক ভুক্তভোগী বঞ্চিত হবে। আর শুনানি আজ হয়নি, আগামীতে হবে।  

রায়ের স্থগিতাদেশ বহাল হওয়ার ফলে ৩৫ বছরের বেশি বয়সী শিক্ষক নিবন্ধনধারীদের শিক্ষক হওয়ার সুযোগ পরবর্তী শুনানি না হওয়া পর্যন্ত বন্ধ হয়ে গেলো। সারাদেশের হাজার হাজার পঁয়ত্রিশোর্ধ্ব নিবন্ধনধারীর কাছ থেকে আইনী লড়াইয়ের নামে ফেসবুক পেজের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা চাঁদা তুলে  শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন কিছু অসাধুপ্রার্থী।

এমপিও নীতিমালা জারির আগে এনটিআরসিএ সনদধারী পঁয়ত্রিশোর্ধ প্রার্থীদের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের আবেদনের সুযোগ ও মেধাতালিকা অনুসারে নিয়োগের নির্দেশনা দিয়ে দেয়া হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আপিল আবেদন করেছিল এনটিআরসিএ। গত ৫ জানুয়ারি আপিল আবেদনটি শুনানি শেষে হাইকোর্টের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করে আপিল বিভাগ। 

এর আগে গত বছরের ২২ মে এমপিও নীতিমালা জারির আগে এনটিআরসিএ সনদধারী পঁয়ত্রিশোর্ধ প্রার্থীদের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের আবেদনের সুযোগ ও মেধাতালিকা অনুসারে নিয়োগের নির্দেশনা দিয়েছিল হাইকোর্ট। গত ২২ মে ৩টি রিট পিটিশনের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি এ.এফ.এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রায় প্রদান করেন। সে রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি গত ৮ ডিসেম্বর প্রকাশ পায়। 

২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের আগে সারাদেশের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে চাকরির কোনো বয়সসীমা নির্ধারিত ছিল না, কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগ থেকে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ১২ জুন  জারি করা জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালায় বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করা হয়। নীতিমালার ধারাবাহিকতায় এনটিআরসিএ শুধু অনূর্ধ্ব ৩৫ প্রার্থীদের আবেদনের সুযোগ দিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। নীতিমালা জারির পূর্বে যারা এনটিআরসিএ কর্তৃক সনদপ্রাপ্ত হয়েছেন এবং মেধা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন; কিন্তু ৩৫ বছর বয়স হয়ে গিয়েছে তাদের আবেদনের সুযোগ দেয়া হয়নি। বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন কয়েকজন প্রার্থী। এ সংক্রান্ত তিনটি রিট পিটিশনের শুনানি শেষে গত ২২ মে এ রায় দিয়েছিল আদালত। 

হাইকোর্টের রায়ে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে এমপিও নীতিমালা জারির আগেএনটিআরসি সনদপ্রাপ্ত হয়েছেন তাদের এনটিআরসিএর নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণে সুযোগ দিতে বলা হয়েছিল। নীতিমালা জারি হওয়ার আগেই এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট প্রাপ্তদের নিয়োগের ক্ষেত্রে ৩৫ বছরের বয়সসীমা আরোপ না করে আবেদন গ্রহণ করতে বলা হয়েছিল রায়ে। একই সাথে আবেদনকারীদের মধ্যে যারা সমন্বিত জাতীয় মেধাতালিকা অনুযায়ী যোগ্য তাদের আইন অনুযায়ী নিয়োগ প্রদানের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত।

সে রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেছে এনটিআরসিএ। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ - dainik shiksha পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী - dainik shiksha ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ - dainik shiksha প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন কলেজ পরিচালনা পর্ষদ থেকে ঘুষে অভিযুক্ত সাংবাদিককে বাদ দেওয়ার দাবি - dainik shiksha কলেজ পরিচালনা পর্ষদ থেকে ঘুষে অভিযুক্ত সাংবাদিককে বাদ দেওয়ার দাবি পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.003148078918457