পরিচালক, চেয়ারম্যানসহ ২৫ পদে আসছে বাড়ৈ সিন্ডিকেট সদস্যরা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

একটি দপ্তরের পরিচালক ও দুটি বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ শিক্ষা প্রশাসনের প্রায় ২৫টি গুরুত্বপূর্ণ পদে বদলি হয়ে আসার জোর তদবির চালাচ্ছেন শিক্ষা ক্যাডারের বাড়ৈ সিন্ডিকেটের সদস্যরা। এই সিন্ডিকেটের এক সদস্য দুইদিন আগে ঢাকা কলেজে ঢুকতে সক্ষম হয়েছেন। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির আসন্ন নির্বাচনে জেতা ও ৩০ মে অফিসার্স ক্লাবের পার্টিকে সফল করতে এ বদলি বড় ভূমিকা রাখবে বলে শিক্ষা ক্যাডারের সিনিয়র কর্মকর্তারা মনে করছেন। গত ২৪ মার্চের বদলি ও ওএসডি আদেশের আদলে আরেকটি বড় লটের বদলি আসন্ন বলে শিক্ষা প্রশাসনের একাধিক সূত্রে জানা গেছে।

এদিকে শিক্ষা প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে শিক্ষা ক্যাডারের সৎ ও আওয়ামী লীগপন্থিদের পদায়ন না দিয়ে  ক্রমাগত বিতর্কিত ও অভিযুক্তদের পদায়নের ফলে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে। শিক্ষা ক্যাডারের সিনিয়র কর্মকর্তারা মনে করেন বিতর্কিতদের পদায়ন করতে থাকলে শিক্ষা প্রশাসন মুখ থুবড়ে পড়বে এবং ৯৮ শতাংশ বেসরকারি শিক্ষকদের হাতে তুলে দেয়া হবে আন্দোলনের তুরুপের তাস। ইতোমধ্যে শিক্ষা প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে আনুপাতিক হারে বেসরকারি শিক্ষকদের পদায়নের দাবি উঠেছে। আলাদা মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও শিক্ষক নিয়োগ কমিশন গঠনের দাবি জোরালো হচ্ছে। বেসরকারি শিক্ষক নেতারা জোর গলায় বলতে পারছেন শিক্ষা ক্যাডারের বিতর্কিত ও দুর্নীতিবাজরা প্রশাসন চালানো বাদ দিয়ে আখের গোছাচ্ছেন আর মন্ত্রী বদল হলে আমেরিকায় পাড়ি জমাচ্ছেন। 

জানা যায়, বাড়ৈ সিন্ডিকেটের প্রধান টার্গেট পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক, যুগ্ম-পরিচালক, উপপরিচালক এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের একটি পরিচালক পদ ও আইন শাখার দুটি পদ এবং পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সদস্যপদ, মাদরাসা, রাজশাহী ও যশোর বোর্ডের চেয়ারম্যান পদসহ প্রায় ২৫টি পদের জন্য নানা ফন্দি-ফিকির ও তদবির করছেন। তদবিরের টুলস ও ক্রাইটারিয়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ইজম, কোথাও কুমিল্লা-চাঁদপুর ইজম, কোথাও সাবেক ছাত্রলীগ ও ছাত্র ইউনিয়ন ইজম এবং ‘একসাইজের ছোট কাগজের বান্ডিলের হিসাব’ তো রয়েছেই। 

২৪ মার্চের আদেশের মতো এবারও থাকছেন প্রশ্নফাঁসে অভিযুক্ত, জিপিএ ফাইভ বিক্রিতে অভিযুক্ত, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ ছাড়া শত শত কলেজের অনুমোদন দিয়ে টাকা কামানো, বউ পেটানো, মাতলামি করে গুলি খাওয়া, স্ত্রী হন্তারক ও দুদকের অনুসন্ধানাধীন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারা। ২৪ মার্চের বদলির আদেশের সময় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বিদেশে ছিলেন। ওই আদেশে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইনের কোনও ভূমিকা ছিল না। 

জিপিএ ফাইভ বিক্রিতে অভিযুক্ত অদ্বৈত কুমার সম্পর্কে ভালো ধারণা দেয়া হয়েছে উপরিমহলে। পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সদস্য মশিউজ্জামানের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ থাকলেও তার সম্পর্কে উপরমহলে ভালো ধারণা দিয়ে আরও ভালো পদায়নের চেষ্টা চলছে বলে জানা গেছে। চাঁদপুরের একটি সরকারি কলেজের একজন অভিযুক্ত শিক্ষককে মাদরাসা বোর্ডের চেয়াম্যান করার তদবির চলছে। রাজশাহী ও যশোর বোর্ডের শীর্ষ পাঁচ জন কর্মকর্তার নামে কেনাকাটায় অনিয়মসহ নানা অভিযোগ থাকলেও তাদের সম্পর্কে ভালো ধারণা দেয়া হয়েছে। রাজশাহী বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রায় ৯ বছর ধরে বিভিন্ন পদে রয়েছেন। তিনি এখন চেয়ারম্যান হওয়ার চেষ্টায় রয়েছেন বলে জানা যায়। 

যে কোনও সময় একটা লটের বদলির আদেশ জারি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

উল্লেখ্য, বাড়ৈ সিন্ডিকেটের হোতা মন্মথ রঞ্জন বাড়ৈ যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমালেও মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের কারো কাছে কোনও তথ্য নেই। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0057270526885986