চাকরিপ্রার্থী লিখিত, মৌখিক বা ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশ না নিয়েই চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়েছেন ঝিনাইদহ জেলা সদরে মো. ইসহাকের মেয়ে নুর হাসনাত সীমা। গত অক্টোবরে জেলার পরিসংখ্যান ব্যুরো কার্যালয়ে যথারীতি চাকরিতেও যোগদান করেছেন তিনি। বিষয়টি জানাজানি হলে পরিসংখ্যান ব্যুরোতে তোলপাড় শুরু হয়। সংশ্নিষ্ট বিভাগের সচিব তদন্তের জন্য কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। সংশ্নিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। রোববার (২৯ ডিসেম্বর) সমকাল পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, নুর হাসনাত সীমা ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর কম্পিউটার অপারেটর পদে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে চলতি বছরের ২ সেপ্টেম্বর মৌখিক ও ব্যবহারিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। অথচ তার পরিবর্তে অন্য একজন লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। সীমার ভর্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্রেও অন্যজনের ছবি লাগানো ছিল। এর পরও পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তারা বিষয়টি বুঝতে পারেননি। একটি সিন্ডিকেটের সহায়তায় পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয়েছে।
অথচ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রি নিয়ে প্রতিযোগিতামূলক এই পরীক্ষায় অনেকেই অংশ নিয়েছিলেন। তারা কৃতকার্য না হলেও পরীক্ষায় অংশ না নিয়ে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা নুর হাসনাত মেধাক্রমের শীর্ষে অবস্থান করেন। এ ঘটনার পেছনে মোটা অঙ্কের টাকার লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে।
সূত্র আরও জানায়, ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিবের নির্দেশে পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক তাজুল ইসলামের নেতৃত্বে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন হয়। ৮ ডিসেম্বর তদন্ত কমিটি কম্পিউটার অপারেটর নুর হাসনাতের কর্মস্থল ঝিনাইদহ জেলা পরিসংখ্যান ব্যুরো কার্যালয় পরিদর্শন করেছে। তারা এ বিষয়ে সংশ্নিষ্টদের বক্তব্য নেওয়া ছাড়াও নুর হাসনাতের হাতের লেখা, ভোটার আইডি, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র যাচাই-বাছাই করেছেন। পরীক্ষার খাতায় লেখার সঙ্গে তার হাতের লেখার গরমিলও পেয়েছে তদন্ত কমিটি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব সৌরেন্দ্র নাথ চক্রবর্ত্তী বলেন, এমন অভিযোগ তার দপ্তরে এসেছে। বিষয়টি খুব গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। নিয়োগে কোনো ধরনের অনিয়ম হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। অনিয়ম করে কেউ পার পাবে না।
সচিব আরও বলেন, এই পদে নিয়োগের জন্য অনেক আগেই বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। লিখিত পরীক্ষার ফলও যথারীতি প্রকাশিত হয়। মামলাজনিত কারণে মৌখিক পরীক্ষা অনেক পরে অনুষ্ঠিত হয়েছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারাই ব্যবহারিক ও মৌখিক পরীক্ষা নিয়েছেন। এখন তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন হাতে পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।