পরীক্ষার সময়কাল কমানোর পরামর্শ প্রধানমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক |

কোনও প্রকার বাধা ছাড়াই এবার পরীক্ষা শেষ হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন,একটা সময় ছিল যখন একই দিনে দুই পেপার পরীক্ষা হতো। এখন তো দীর্ঘ সময় নিয়ে পরীক্ষা হয়।  প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে এবং শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে পরীক্ষার সময় কমানোর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।  

বৃহস্পতিবার (১৯ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে গণভবনে এ বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে তিনি এ কথা জানান।

সকাল ১০টার পর প্রধানমন্ত্রীর হাতে আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ফলাফলের অনুলিপি তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এরপর সংশ্লিষ্ট বোর্ডের চেয়ারম্যানরা তাদের স্ব স্ব বোর্ডের ফলাফল প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অংশ নেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী, শিক্ষা সচিব মো. সোহরাব হোসাইনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও কর্মকর্তাদের বক্তব্যের আগে প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল পদ্ধতিতে ফলাফল প্রকাশ করেন। এরপর শিক্ষামন্ত্রী ফলাফলের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন।

আজকের বাস্তবতায় পরীক্ষার সময় কী করে কমানো যায়, তা খুঁজে দেখার তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এটাকে আরেকটু কমিয়ে আনার ব্যবস্থা যদি করতে পারেন, তাহলে কিন্তু আপনি দেখবেন, ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করবে, পরীক্ষাটাও তাড়াতাড়ি হবে, আর এখানে ওই যে নানা ধরনের কথা প্রচার টচার, অপপ্রচার, তার হাত থেকেও মুক্তি পাওয়া যাবে বলে আমি বিশ্বাস করি।”

তিনি বলেন, “একটা ছোট্ট অনুরোধ আমার থাকবে, সেটা হল পরীক্ষার সময়টা। পরীক্ষার একটা দীর্ঘ সময়.. দোসরা এপ্রিল পরীক্ষা শুরু, আর ২৪শে মে পর্যন্ত পরীক্ষা। এই অত দীর্ঘ সময়, বোধ হয় রেজাল্ট দিতেও আপনারা এত সময় নিলেন না পরীক্ষা নিতে যত সময় নিয়েছেন। সেখানে পরীক্ষার সময়টা কীভাবে কমিয়ে আনা যায়…।”

৭১ বছর বয়সী শেখ হাসিনা তার সময়ের পরীক্ষা পদ্ধতির কথা তুলে ধরে বলেন, “আমরা যখন পরীক্ষা দিয়েছি, তখন তো আমাদের দুই বেলা করে পরীক্ষা দিতে হত। সকালে এক পেপার, বিকালে এক পেপার। আমাদের তো দম ফেলার সময়ই থাকত না, সাত দিনে পরীক্ষা শেষ।… ১০টা সাবজেক্ট, মাঝখানে দুই দিন ছুটি ধরে আমাদের পরীক্ষা শেষ হয়ে যেত।”

প্রধানমন্ত্রী তার বক্তৃতায় পাস করা শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, সরকার শিক্ষাখাতের উন্নয়নে সব রকম পদক্ষেপ নিয়েছে। কারণ আমরা জানি দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত ও উন্নত করতে হলে শিক্ষিত জাতি গড়ে তোলার বিকল্প নেই। গত বেশ কয়েক বছর ধরে পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ থাকলেও এবার এ পরীক্ষা অভিযোগ ছাড়াই শেষ হয়।

সে প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রযুক্তির উৎকর্ষের সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বজুড়ে তার অপব্যবহারও হচ্ছে এবং এর মাধ্যমে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা ঘটছে। কিন্তু আমাদের সরকার কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ায় এবার প্রশ্নফাঁস হয়নি।

অভিভাবকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, পরীক্ষায় ভালো-মন্দ, পাস-ফেল থাকবেই। এটা জীবনের অংশ কিন্তু আপনার সন্তান যেন মাদকাসক্ত না হয়, সেই দিকে খেয়াল রাখবেন। জঙ্গি বা সন্ত্রাসবাদের সাথে জড়িয়ে না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাবা সব সময় বলতেন। আমাদের দেশে মাটি ও মানুষ আছে। এইগুলোই আমাদের সম্পদ। এগুলোকে কাজে লাগিয়ে আমাদের দেশের উন্নয়ন করতে হবে। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে দিয়েছি। এখন ইন্টারনেটকে কাজে লাগিয়ে আমাদের উন্নয়ন করতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের নতুন প্রজন্ম সোনার মানুষ হিসেবে গড়ে উঠবে। সেইভাবেই আমরা তাদের গড়ে তুলতে । আর আমাদের ছেলে-মেয়েরা যে কত মেধাবী, সেটা আমরা নিজেরাই দেখছি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
রোজায় স্কুল: শিক্ষার্থী উপস্থিতি কম, নজরদারিও ঢিলেঢালা - dainik shiksha রোজায় স্কুল: শিক্ষার্থী উপস্থিতি কম, নজরদারিও ঢিলেঢালা পেনশন প্রজ্ঞাপনে উদ্বিগ্ন ঢাবি উপাচার্য - dainik shiksha পেনশন প্রজ্ঞাপনে উদ্বিগ্ন ঢাবি উপাচার্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গবেষণা অনুদান করমুক্ত - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গবেষণা অনুদান করমুক্ত ব্রাজিলে তীব্র গরমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ - dainik shiksha ব্রাজিলে তীব্র গরমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের নামে প্রতারণা, সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের নামে প্রতারণা, সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উচ্চ মাধ্যমিকের সমমান পেলো ‘হেট’ - dainik shiksha উচ্চ মাধ্যমিকের সমমান পেলো ‘হেট’ আটকের ১৩ দিন পরেও বরখাস্ত হননি অধ্যক্ষ - dainik shiksha আটকের ১৩ দিন পরেও বরখাস্ত হননি অধ্যক্ষ please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028319358825684