নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্রী অধিকারীর আত্মহননের পর ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রেখে ছয় দফা দাবিতে আন্দোলনে নামা ভিকারুননিসা স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা তৃতীয় দিনের মত বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে। তবে ছয় দাবির মধ্যে প্রধান দুটি- গভর্নিং বডির পদত্যাগ এবং অরিত্রীর মা-বাবার সঙ্গে দুর্ব্যবহারের জন্য বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইলে তারা পরীক্ষায় বসবে বলে জানিয়েছে।
গত সোমবার অরিত্রীর আত্মহত্যার পরদিন থেকে রাজধানীর বেইলি রোডের নামি এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছে শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে কিছু অভিভাবকও রয়েছেন।
অরিত্রীর মৃত্যুর পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় দ্রুত তৎপর হয়ে উঠলে তদন্ত কমিটি গঠন, স্কুলের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষসহ তিন শিক্ষককে বরখাস্ত, সব শাখার ক্লাস-পরীক্ষা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তবে পরে পরিচালনা পর্ষদের সভায় ভিকারুননিসায় চলমান বছর সমাপনীর দুই দিনের পরীক্ষার সময় নতুন করে নির্ধারণ করার কথা জানিয়েছিলেন পর্ষদের শিক্ষক প্রতিনিধি মুশতারি সুলতানা।
নতুন সূচি অনুযায়ী, বৃহস্পতিবারের পরীক্ষা শুক্রবার এবং ৫ তারিখের পরীক্ষা ১১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। বৃহস্পতিবার (৬ ডিসেম্বর) বেলা পৌনে ১২টার দিকে আন্দোলনকারীদের সমন্বয়ক অরিত্রীর সহপাঠী আনুশকা রায় বলে, আজকের মধ্যে সব দাবি মেনে নিতে হবে।
“প্রথম দাবিটি মেনে নেওয়া হয়েছে। বাকী দাবিগুলোর মধ্যে তিনটি দাবি পূরণ করা সময় সাপেক্ষ। কিন্তু ৫ এবং ৬ নম্বর দাবিটি এখন আমাদের মূল দাবি। এটা মেনে নিলে কাল আমরা পরীক্ষায় অংশ নিব। নইলে আন্দোলন চলতে থাকবে।”
এর আগে গত দুইদিনের মতো বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে স্কুলের মূল ফটকের সামনের অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। ‘ভিকারুন্নিসা মূল সিনিয়র শাখার সকল শিক্ষার্থী’ ব্যানারে চলা আন্দোলনে তারা বিভিন্ন স্লোগান লেখা পোস্টার-ফেস্টুন নিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। কয়েকজন অভিভাককেও দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে।
এদিকে অরিত্রীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে তার বাবা দিলীপ অধিকারীর মামলার পর মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে অরিত্রীর শ্রেণিশিক্ষক হাসনা হেনাকে বুধবার রাতে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।
মঙ্গলবার রাতে পল্টন থানায় করা ওই মামলায় হাসনা হেনার সঙ্গে বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস ও প্রভাতি শাখার প্রধান জিনাত আখতারও আসামি।