জাতীয় সংসদ নির্বাচনপর্যবেক্ষক পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র : ইউরোপীয় ইউনিয়নের না

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্র থেকে অনেক পর্যবেক্ষক নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে আসবেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম। আর নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত রেন্সজে তেরিংক জানিয়েছেন, যথেষ্ট সময় ও প্রস্তুতি না থাকায় তাদের প্রতিনিধিরা জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আসবে না।

তবে দুই সদস্যের একটি এক্সপার্ট টিম ভোটের আগে-পরে ৪০ দিন থাকবে। তারা ঢাকায় রয়েছেন। রাজধানীতে বুধবার (২৮ নভেম্বর) দুটি আলাদা অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানান সংশ্লিষ্টরা।

আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে বুধবার সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে যান মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কাউন্সিলর বিল মোলার ও দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা কাজী রুম্মন দস্তগীর। আওয়ামী লীগের পক্ষে এইচটি ইমাম ছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, আওয়ামী লীগের উপদফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কার্যনির্বাহী সদস্য এসএম কামাল হোসেন ও আন্তর্জাতিক উপকমিটির সদস্য ড. সেলিম মাহমুদ। তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে এইচটি ইমাম বলেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে অনেক পর্যবেক্ষক আসবেন।

আমরা বলেছি, পর্যবেক্ষকরা যেখানে যাবেন, তাদের নিরাপত্তা বিধান করা আমাদের দায়িত্ব। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য তালিকা চেয়েছি। তারা আগে থেকে তালিকা দিয়ে জানাবেন, কোথায় কী কী কাজ করবেন।

জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে আমেরিকার পক্ষ থেকে কোনো অসন্তোষ জানানো হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে এইচটি ইমাম বলেন, ওনারা এসব কথা বলেননি। তারা বলছেন, এখন বাংলাদেশে ভালো পরিবেশ বিরাজ করছে।

নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণের ব্যাপারে আমেরিকানদের প্রতিক্রিয়া কী- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এটাই হচ্ছে ওদের কাছে সবচেয়ে বড় সন্তুষ্টি। ওরা অত্যন্ত সন্তুষ্ট। এমন কোনো দল নেই যারা অংশগ্রহণ করছে না।

ওরা তো বলেছে, এত দল এরকমভাবে; কীভাবে তোমরা এত জোট ম্যানেজ করেছ? ওরা ভাবতেই পারে না, আমরা এগুলো করতে পারি। আমরা বলেছি, এগুলো আমরা করেছি। আমাদের সব ঠিকঠাক হয়ে গেছে।

বৈঠকে আলোচনা প্রসঙ্গে এইচটি ইমাম বলেন, আমাদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সব থেকে আনন্দের কথা এই যে, আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা যেসব কথা বলেন, আমরা চাই একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন, সবাই অংশগ্রহণ করুক। সুষ্ঠু, অবাধ ও অত্যন্ত স্পষ্ট একটি নির্বাচন। যেটি সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে।

এই আদর্শগুলো আমেরিকানরাও ধারণ করে। তাদের সঙ্গে আমাদের মতের যথেষ্ট মিল আছে। এজন্যই তারা আমাদের এখানে এসেছেন। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা আরও বলেন, তারা (মার্কিন কর্মকর্তা) বলেছেন, ‘আমরা অত্যন্ত খুশি। তোমরা সংলাপ করেছ।’

এই ডায়ালগে আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা সবাইকে যেভাবে নিয়ে এসেছে, ওদের যা কিছু বলার ছিল তারা প্রকাশ্যেই বলে ফেলেছেন। সরকারের বিরুদ্ধে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের ক্ষোভের জায়গাগুলো তারা বলেছেন এবং সরকার হাসিমুখে নিয়েছে।

আমরা যা যা করার দরকার ছিল, যে প্রতিশ্রুতি শেখ হাসিনা দিয়েছিলেন, সে প্রতিশ্রুতিগুলো সব পালন করছি। আমরা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করার চেষ্টা করছি সর্বাত্মকভাবে।

নির্বাচনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন পর্যবেক্ষক না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাহলে আমেরিকা কেন পাঠাবে- এমন প্রশ্নের জবাবে এইচটি ইমাম বলেন, আমেরিকা অবজারভার পাঠাবে। ওরা সব জায়গাতেই পাঠায়।

ওরা বলছে, আমরা নির্বাচন কেমন হয় দেখব? সত্যিকার সুষ্ঠু হয় কি না? ওদের তো কতগুলো থিঙ্ক ট্যাংক আছে। আমেরিকান আর ইউরোপীয় ইউনিয়ন এক নয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনায় সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণে নির্বাচন হয়।

এ রকম নির্বাচন কিন্তু অনেক দেশেই হয় না। এটা আমাদের গর্ব করার ব্যাপার। এজন্যই ওরা আসে। তারা সবাই বলছেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একটা অন্য স্ট্যান্ডার্ড আছে। সেই স্ট্যান্ডার্ডের জন্য, এই উচ্চতায়, মানের জন্যই তারা এখানে আসেন।

তারা আরও সম্পর্ক গভীরতর করতে চান। আমাদের সরকার আরও ভালোভাবে শক্তিশালী হোক। এখানে তারা আরও বিনিয়োগ করবেন- এমন অনেক কিছু ব্যাপার আছে বলেও জানান তিনি।

এদিকে ইসির সঙ্গে বৈঠক শেষে ইইউ রাষ্ট্রদূত রেন্সজে তেরিংক সাংবাদিকদের বলেন, ইইউ’র নির্বাচন বিশেষজ্ঞ দলটি ৪০ দিন বাংলাদেশে অবস্থান করবে। তারা পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করবে, হয়তো কিছু সুপারিশও দেবে।

বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ইইউ খুবই আগ্রহী, এ কারণে এই দলটি এসেছে। এর আগে ইইউ নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছিল, তারা এবারের সংসদ নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাবে না। তবে দুই সদস্যের একটি নির্বাচন বিশেষজ্ঞ দল পাঠাবে।

পর্যবেক্ষক দল না পাঠানোর বিষয়ে জানতে চাইলে রেন্সজে তেরিংক সাংবাদিকদের বলেন, ইইউর একটি পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষক দল পাঠাতে হলে অনেক সময় ও প্রস্তুতির প্রয়োজন হয়। অন্তত ছয় মাস আগে থেকে প্রস্তুতি নিতে হয়।

বিভিন্ন দেশ থেকে পর্যবেক্ষক পাঠানোর জন্য চাপ ও অনুরোধ থাকে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ইইউ হেডকোয়ার্টার পর্যবেক্ষক পাঠানোর সিদ্ধন্ত নেয়। সব অনুরোধ রাখা তাদের পক্ষে সম্ভব হয় না।

বাংলাদেশে নির্বাচন বিশেষজ্ঞ দল পাঠানো বাংলাদেশের প্রতি ইইউ’র অঙ্গীকারের বহিঃপ্রকাশ। রেন্সজে তেরিংক বলেন, বাংলাদেশে ১০ কোটি ৪০ লাখ ভোটার ও ৪০ হাজার কেন্দ্র রয়েছে। এটা একটা বিশাল কর্মযজ্ঞ। তারা আশা করেন, বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0032320022583008