আগামী ৬ আগস্টের মধ্যে পলিটেকনিকের বিতর্কিত ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার-ছাত্র ও শিক্ষকরা। মঙ্গলবার রাজধানীতে আয়োজিত প্রতিবাদ কর্মসূচিতে তারা বলেছেন, যে কোন বয়সের শিক্ষার্থীদের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ভর্তির সুযোগ রেখে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে, তা পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংসের শামিল।
আগারগাঁওয়ে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ও অধিদফতর সংলগ্ন সড়কে বাংলাদেশ কারিগরি ছাত্র পরিষদ (বাকাছাপ), বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা প্রকৌশলী পরিষদ, বাংলাদেশ পলিটেকনিক শিক্ষক সমিতি ও বাংলাদেশ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স সার্ভিস এ্যাসোসিয়েশন সমন্বয় পরিষদ আয়োজিত মানববন্ধন থেকে নতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন আইডিইবি’র সভাপতি এ কে এম এ হামিদ, সাধারণ সম্পাদক মোঃ শামসুর রহমান, বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা প্রকৌশলী পরিষদের সভাপতি মোঃ খবির হোসেন, সাধারণ সম্পাদক একেএম আব্দুল মোতালেব, বাংলাদেশ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স সার্ভিস এ্যাসোসিয়েশন সমন্বয় পরিষদের আহ্বায়ক মোঃ ফজলুর রহমান খান, সাধারণ সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম, বাংলাদেশ পলিটেকনিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি হাফিজ আহমেদ সিদ্দিক, সাধারণ সম্পাদক এ এম জহিরুল ইসলাম, বাংলাদেশ কারিগরি ছাত্র পরিষদের সভাপতি মোঃ মেহেদী হাসান, সাধারণ সম্পাদক মোঃ সাইফুল ইসলাম মোল্লা প্রমুখ।
কর্মসূচিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক ভর্তি নীতিমালা বাস্তবায়িত হলে পুরো ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা ব্যবস্থায় চরম অস্থিরতা সৃষ্টি হবে, যা কারিগরি শিক্ষায় সরকারের অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনকে বাধাগ্রস্ত করবে। ১৫/২০ বছর পূর্বে এসএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর পক্ষে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিষয়গুলো অনুধাবন করা কোনভাবেই সম্ভব হবে না। এদের অধিকাংশই ১/২ বছরের মধ্যে ঝরে যাবে। সিটগুলো শূন্য হবে, ড্রপ আউট আরও বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি বয়সের ব্যাপক পার্থক্যের কারণে শ্রেণীকক্ষের ভারসাম্য নষ্ট হবে, খুন-চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্মের কারণে সামাজিক ও প্রশাসনিক সমস্যা দেখা দেবে।
তারা আরও বলেন, সরকারী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে বিদ্যমান আসন সংখ্যার চেয়ে ২/৩ গুণ বেশি ভর্তি আবেদন জমা পড়ে, সেখানে অনিয়মিত বয়োবৃদ্ধদের ভর্তির সুযোগ দিয়ে শিক্ষার পরিবেশকে বিপদসঙ্কুল করা যুক্তিযুক্ত হতে পারে না। বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড আইন-২০১৮ এর ৮(ঙ) ধারায় দেয়া ক্ষমতা ব্যবহার করে বোর্ডের চেয়ারম্যান ভর্তি সংক্রান্ত জটিলতা এড়াতে পারলেও কোন অদৃশ্য অপশক্তির কারণে সেটি করেন নি, তার জবাব তাকে দিতে হবে।
নেতৃবৃন্দ হুঁশিয়ারি দেন, করোনার মহাদুর্যোগে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন এখন নানানভাবে বিপর্যস্ত। পলিটেকনিকে দীর্ঘদিন শিক্ষক সঙ্কট, শ্রেণীকক্ষ, ল্যাব, ওয়ার্কসপের সমস্যার সমাধান না করে বিতর্কিত ভর্তি নীতিমালা গ্রহণের ফলে ব্যাপক ছাত্র অসন্তোষ দেখা দেবে, যা শিক্ষার্থীদের আরও অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ধাবিত করবে। এর দায় কারিগরি শিক্ষা অধিদফতর ও বোর্ড এড়াতে পারবে না। বিতর্কিত ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার না করলে রাজপথে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। যার দায় কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানকে নিতে হবে।