পলিটেকনিকে সরকার ঘোষিত নতুন ভর্তি নীতিমালাকে ‘অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক’ আখ্যা দিয়ে তা বাতিলের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারর্স সার্ভিস এসোসিয়েশন সমন্বয় পরিষদ। আজ সোমবার (১৭ আগস্ট) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা দাবি করেন, কোনো আলোচনা ছাড়াই শিক্ষা মন্ত্রণালয় কোনো বয়সসীমা ছাড়াই ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা কোর্সে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি জারি করায় এ শিক্ষাব্যবস্থায় এক অরাজকতা সৃষ্টি হবে। অতিরিক্ত বয়ষ্ক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কোমলমতি শিক্ষার্থী কোনোভাবেই একত্রে বসে উপযুক্ত শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে না। এখানে চাঁদাবাজিসহ শ্রেণি কক্ষের ভারসাম্য নষ্ট হবে। তা ছাড়াও বয়স্ক শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। যাতে কারিগরি শিক্ষার মান বজায় থাকবে না।
বক্তারা অবিলম্বে এ ধরনের ভর্তি নীতিমালা বাতিলের দাবি জানান। তা না হলে মাসব্যাপী মানববন্ধন, গণস্বাক্ষর সংগ্রহ এবং প্রধানমন্ত্রীর নিকট তা প্রেরণ করার কথা জানান। ১০ থেকে ৩০ আগস্ট পরিষদের উদ্যোগে বৃহত্তর আন্দোলনের জন্য এ সব কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর কাকরাইলে আইডিইবিতে সারা দেশের প্রতিনিধি সম্মলন করা হবে বলে। ওই সম্মেলন থেকে ভবিষ্যতের বৃহত্তর কর্মসূচি নেয়া হবে বলে নেতারা জানান।
সমন্বয় পরিষদের আহ্বায়ক ফজলুর রহমান খানের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- পলিটেকনিক শিক্ষক সমিতির সম্পাদক এ এম জহিরুল ইসলাম, সদস্য সচিব সিরাজুল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের সভাপতি খবির হোসেন, সম্পাদক এ কে এম আব্দুল মোতালেব, বাংলাদেশ টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ শিক্ষক সমিতির সভাপতি সিদ্দিক আহমেদ, কারিগরি ছাত্র পরিষদের প্রতিনিধি প্রমুখ।
গত ১ জুলাই মাসে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি বলেছেন, বর্তমান সরকার চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত রূপকল্প ৪১ বাস্তবায়নে কারিগরি শিক্ষাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে। তাই কারিগরি শিক্ষায় ভর্তির হার বৃদ্ধির লক্ষ্যে এবং বিদেশ ফেরত দক্ষ কর্মীদের প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়ার জন্য পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ডিপ্লোমা কোর্সে ভর্তির ক্ষেত্রে কোনো রকমের বয়সের সীমাবদ্ধতা তুলে দিয়েছেন।
এ সময় মন্ত্রী আরও বলেন, অনেক ব্যক্তির হয়তো প্রয়োজনীয় কারিগরি দক্ষতা আছে কিন্তু তার প্রাতিষ্ঠানিক কোনো সার্টিফিকেট নাই এবং সার্টিফিকেট না থাকার কারণে ভালো চাকরি পাচ্ছে না অথবা চাকরি পেলেও ভালো বেতন পাচ্ছে না। সেক্ষেত্রে সে ব্যক্তি যদি চায় এবং যদি তার প্রয়োজনীয় একাডেমিক যোগ্যতা থাকে তাহলে সে ডিপ্লোমা কোর্সে ভর্তি হতে পারবে।
একই মিটিংয়ে তিনি ডিপ্লোমা কোর্সে ভর্তির ক্ষেত্রে ছেলেদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম যোগ্যতা জিপিএ ৩ দশমিক ৫ থেকে কমিয়ে ২ দশমিক ৫, মেয়েদের ক্ষেত্রে জিপিএ ৩ থেকে কমিয়ে ২ দশমিক ২৫ করার সিদ্ধান্ত দেন। পাশাপাশি ডিপ্লোমা কোর্সে ভর্তি ফি ১৮২৫ টাকা থেকে কমিয়ে ১০৯০ টাকা করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেন।
শিক্ষামন্ত্রীর ঘোষণার পরপরই একটি গোষ্ঠী এর বিরোধিতায় নেমেছেন।