রাজশাহীর বাঘায় হতদরিদ্র ভ্যান চালকের ছেলে নুরনবী চাঁদ মানিক। ২০১৯-২০২০ শিক্ষা বর্ষে পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়ার সুযোগ পেয়েছে সে। তবুও অর্থাভাবে লেখাপড়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। মানিক বাঘা উপজেলার উত্তর গাওপাড়া গ্রামের দরিদ্র ভ্যান চালক আসমত আলীর ছেলে। সংসারের অস্বচ্ছলতার জন্য মাঝে মধ্যে বাবার ভ্যান চালালেও মনোবল না হারিয়ে লেখাপড়া চালিয়ে গেছে সে।
জানা গেছে, নুরনবী চাঁদ মানিক ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সি-ইউনিটে, গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয়ে ডি-ইউনিটে, রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ডি-ইউনিটে, পাবনার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ইউনিটে এবং ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। কিন্তু ভর্তির সুযোগ পেয়েও অর্থিক অস্বচ্ছলতায় লেখাপড়া একেবারে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে তার। বাবার ইচ্ছা ছিল ছেলেকে উচ্চতর শিক্ষা দেবেন। ছেলে দেশের সেবা করবে। কিন্তু তার আশা কিভাবে পূরণ হবে? আসমত আলীর ‘নুন আনতে পানতা ফুরায়’। ভ্যান চালিয়ে সামান্য উপার্জন দিয়ে পরিবারের জন্য দু’মুঠো খাবার জোগানোই যার দূরহ ব্যাপার।
মানিকের বাবা আসমত আলী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এত দিন ভ্যান চালিয়ে খেয়ে না খেয়ে কিস্তিতে ঋণ নিয়ে ছেলেকে স্কুল-কলেজে পড়িয়েছি। এখন কি করে শহরে পড়াবো। ভ্যান চালিয়ে সংসার চালাই। আমার এক ছেলে ৩ মেয়ে। এরমধ্যে দুই মেয়ের অন্যাত্রে বিয়ে দেয়া হয়েছে। খুব কষ্টে দিন পার করছি। এ অবস্থায় ছেলেকে লেখাপড়া করানো আমার পক্ষে হয়তো সম্ভব হবে না। ছেলে ৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছে।
নুরনবী চাঁদ মানিক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এতো দিন বাড়ির কাছের স্কুল কলেজে খেয়ে না খেয়ে পড়েছি। কিন্তু এখন শহরে পড়ার মতো আর্থিক সামর্থ বাবার নেই। তাই, খুব চিন্তায় আছি। স্থানীয় প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করোতে গিয়ে আমার বাবা অনেক কষ্ট করেছে। আমি নিজে বাবার ভ্যান চালিয়ে কোন কোন সময় খরচ চালিয়েছি। এখন শহরে পড়ার খরচ যোগানো আমার বাবার পক্ষে সম্ভব না। তবে বাঘা ফাজিল মাদরাসার লিপি ম্যাডাম ও তার স্বামী প্রভাষক মুক্তি মাহমুদ সহযোগীতা না করলে লেখাপড়া অনেক আগেই বন্ধ হয়ে যেত।
জানা গেছে, নুরনবী চাঁদ মানিক প্রতিটি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ অর্জন করেছে।