পাঠ্যবই নয়, গাইড দেখেই শ্রেণিকক্ষে পড়ান শিক্ষক

নিজামুল হক |

শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীর ব্যাগে থাকবে পাঠ্যবই। শিক্ষকরা সেই পাঠ্যবইয়ের আলোকেই পড়াবেন শিক্ষার্থীদের। এটাই হবে একটি স্কুলের শ্রেণিকক্ষের চিত্র। কিন্তু চিত্র উল্টো। শিক্ষার্থীদের ব্যাগে কোন পাঠ্যবই নেই। যা আছে তা সবই নোট গাইড। আর সেই নোট গাইডের আলোকে শ্রেণিকক্ষে পড়াচ্ছেন শিক্ষক ।

ঘটনাটি ঘটেছে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরস্থ একটি সরকারি হাইস্কুলে। নাম সুফিয়া এ খান সরকারি বালিকা বিদ্যালয়। সম্প্রতি মুন্সীগঞ্জের এই স্কুলটি পরিদর্শনে গিয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কর্মকর্তারা শিক্ষকদের এসব অনৈতিক কর্মকাণ্ডের চিত্র দেখতে পান।

পরিদর্শনে গিয়ে কর্মকর্তারা দেখতে পান, স্কুলটির ষষ্ঠ শ্রেণির ক শাখার ইংরেজি বিষয়ের ক্লাসে সহকারি শিক্ষক সুভাষ মন্ডল পাঠ্যবইয়ের পরিবর্তে একটি প্রকাশনীর গাইড বই থেকে পাঠদান করছেন। শ্রেণিকক্ষের ৩৩ জন শিক্ষার্থীর কাছে এই বই পাওয়া যায়। কারো কাছে অনুমোদিত পাঠ্যবই নেই। শিক্ষার্থীরা পরিদর্শক দলের কাছে জানিয়েছে, শ্রেণি শিক্ষকের নির্দেশ মতো তারা পাঠ্যবইয়ের পরিবর্তে গাইড বই নিয়ে আসছে। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের কোন মনিটরিং নেই বলে মনে করেন কর্মকর্তারা।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড যে সব বই অনুমোদন দেয়নি সেগুলো শ্রেণিকক্ষে পাঠ্য করা যাবে না। নোট গাইড অনুমোদন না থাকায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মতে, এগুলো অবৈধ এবং এসব বই শ্রেণিকক্ষে পাঠ্য করা যাবে না। মন্ত্রণালয়ের এ নির্দেশ না মানলে শিক্ষকদের বিভিন্ন ধরনের শাস্তির বিধান রয়েছে।

মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক সায়লা ফারজানা এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের বরাবরে অনুরোধ জানিয়েছেন। তিনি জানান, শিক্ষার গুণমান উন্নয়নে সরকার নানা কর্মসূচি নিলেও শিক্ষকরা শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের বিষয়ে মোটেই দায়িত্বশীল আচরণ করছেন না। শ্রেণিকক্ষে পাঠ্যবই না পাড়িয়ে গাইড বই পড়ানোর ফলে শিক্ষার গুণগত মান থেকে শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে। পাশাপাশি সরকারি নীতিমালা বহির্ভূত কাজ করা হচ্ছে। গাইড পড়ানোর কারণে পুস্তক ব্যবসায়ীদের সাথে সখ্যতা গড়ে উঠছে। এতে ব্যবসায়ী ও শিক্ষক উভয়ই লাভবান হচ্ছে। এখনই নজর দেয়া জরুরি। নইলে মেধাহীন জাতি তৈরি হবে।

 

সৌজন্যে: ইত্তেফাক


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
রোজায় স্কুল: শিক্ষার্থী উপস্থিতি কম, নজরদারিও ঢিলেঢালা - dainik shiksha রোজায় স্কুল: শিক্ষার্থী উপস্থিতি কম, নজরদারিও ঢিলেঢালা পেনশন প্রজ্ঞাপনে উদ্বিগ্ন ঢাবি উপাচার্য - dainik shiksha পেনশন প্রজ্ঞাপনে উদ্বিগ্ন ঢাবি উপাচার্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গবেষণা অনুদান করমুক্ত - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গবেষণা অনুদান করমুক্ত ব্রাজিলে তীব্র গরমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ - dainik shiksha ব্রাজিলে তীব্র গরমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের নামে প্রতারণা, সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের নামে প্রতারণা, সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উচ্চ মাধ্যমিকের সমমান পেলো ‘হেট’ - dainik shiksha উচ্চ মাধ্যমিকের সমমান পেলো ‘হেট’ আটকের ১৩ দিন পরেও বরখাস্ত হননি অধ্যক্ষ - dainik shiksha আটকের ১৩ দিন পরেও বরখাস্ত হননি অধ্যক্ষ please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0031270980834961