পিছু হটলেন ভিসি, সেই ছাত্রীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার

নিজস্ব প্রতিবেদক |

প্রতিবাদের মুখে অবশেষে পিছু হটলেন গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি।  ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার কারণে শিক্ষার্থী ফাতেমা-তুজ-জিনিয়াকে করা বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নিয়েছে।  আজ বুধবার  ওই আদেশ প্রত্যাহার হয়। জিনিয়া একটি ইংরেজি দৈনিকের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিও। 

জিনিয়ার সঙ্গে উপাচার্য খোন্দকার নাসির উদ্দিনের অশোভন ভাষায় কথোপকথনের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ায় সারাদেশে ছি: ছি; রব পড়ে যায়। । এ অডিওতে শোনা যায় ‘একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান কাজ কী হওয়া উচিত’ শিরোনামে অকথ্য ভাষায় বকছেন তিনি। এ সময় ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ কী তোর আব্বার কাছে শুনিস। গেছে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনোদিন?’ এসব কটু কথা বলতেও ছাড়েননি উপাচার্য নাসির।

উপাচার্যের ফেসবুক আইডি হ্যাক করার হুমকির অভিযোগ তুলে এই শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কারও করা হয়।

গত বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. নূরউদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে তাকে বহিষ্কারের ব্যাখ্যায় বলা হয়, ‘আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ফাতেমা-তুজ-জিনিয়া বিভিন্ন সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সম্পর্কে ফেসবুকে খারাপ মন্তব্য করেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান ক্ষুণ্ন হয়েছে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ফেসবুক আইডি হ্যাক করে প্রশাসনকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা সৃষ্টি করার হুমকি দিয়েছে। বিষয়টি শিক্ষার্থীদের জন্য প্রণীত আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জিনিয়া বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যুরাল নিয়ে একটি আমার পত্রিকা ডেইলি সানে একটি রিপোর্ট করার কারণেই মূলত আমার প্রতি এরকম সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। আমার প্রাথমিক সোর্স যিনি ছিলেন তিনি ৩০ আগস্ট একটি তথ্য দেন আমাকে এবং ফেসবুকে পোস্ট দেন। এরপর প্রশাসনের লোকজন তাকে তুলে নিয়ে যায় এবং মারধর করে তার ল্যাপটপ থেকে আমাদের কিছু কথোপকথনের রেকর্ড পায়। সেই কথোপকথন থেকে তারা জানতে পারে আমার কাছে আরও তথ্য আছে। ফলে আমার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

এর আগে ২২ আগস্ট বিভিন্ন রিপোর্টের তথ্য চাওয়ার কারণে উপাচার্য ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন উল্লেখ করে এই শিক্ষার্থী বলেন, বিভিন্ন সময় দাবি ওঠে ক্লাসরুম নেই, আবাসন সংকট। এসব বিষয়ে জিজ্ঞেস করলেই প্রশাসন থেকে উত্তর আসে, আমরা গাছ লাগাই। এটা নিয়েও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমার পোস্টে অনেকে কথা বলার কারণে তিনি রেগে ছিলেন।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আনোয়ার হোসেন অডিওর ভাষা শোনার পর মন্তব্য করেন, ‘খুবই খারাপ লেগেছে। অনেক সময় অনেকে ইন্টারনেটে কমেন্ট করে কিন্তু তার (উপাচার্য) জায়গা থেকে এরকম রিঅ্যাক্ট করাটা একদমই ঠিক নয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে যে কোনো ধরনের মন্তব্য ও মতামত ব্যক্ত করার স্বাধীনতা শিক্ষার্থীর আছে। উপাচার্য এই ভাষায় যদি বলে থাকেন তাহলে আমি মনে করি না বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালনের সামান্যতম যোগ্যতা তার আছে। এ ধরনের আচরণের কারণে এই পজিশনগুলো মলিন হয়ে ওঠে।’


 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.002816915512085