প্রকল্প নাকি প্রহসন

তৌফিক আলম |

সরকার জনগণের জীবনমান এবং দেশের সার্বিক পরিস্থিতির উন্নয়নে জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প হাতে নেয়। অনেক ক্ষেত্রে এ সকল প্রকল্প সফল হলেও, এর পেছনে যারা জনবল হিসেবে কাজ করেন, তাদের জীবন অন্ধকারে পতিত হয়। সেকেন্ডারি এডুকেশন কোয়ালিটি অ্যান্ড অ্যাকসেস এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্ট (সেকায়েপ) তার মধ্যে একটি।

 ২০০৮ খ্রিস্টাব্দের জুলাই মাসে শুরু হওয়া এ প্রকল্পের বিভিন্ন কম্পোনেন্টের মধ্যে অ্যাডিশনাল ক্লাস টিচার (এসিটি) একটি উল্লেখযোগ্য কম্পোনেন্ট। ২০১৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে শুরু করে ক্রমান্বয়ে ২০১৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যান্ত এই কম্পোনেন্টের আওতায় দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ২০০০ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইংরেজি, বিজ্ঞান এবং গণিতে মোট ৬০০০ মেধাবী শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়। যাদের বেতন স্নাতকের ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে ২২ হাজার এবং ২৫ হাজার টাকা ছিল। উদ্দেশ্য ছিল প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের মন থেকে উল্লেখ্য বিষয় গুলোতে ভীতি কমিয়ে আধুনিক, সৃজনশীল এবং বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে পাঠদান করিয়ে পড়াশোনার মান উন্নয়ন করার পাশাপাশি পাবলিক পরিক্ষাগুলোতে ফলাফলের পারদ ওপরে ওঠানো, যার উদ্দেশ্য পুরোপুরি সফল বলা যায়। এর প্রেক্ষিতে উন্মোচিত হয়েছে দেশের গুণগত শিক্ষার ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত। আমাদের দেশের অনেক মাধ্যমিক প্রতিষ্ঠানে ইংরেজি, গণিত এবং বিজ্ঞান বিষয়ে পর্যাপ্তসংখ্যক মানসম্পন্ন শিক্ষকের অভাব রয়েছে।

 তাছাড়া বিগত দুই বছর ধরে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন (এনটিআরসিএ) কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ থাকায় সেকায়েপের এই সকল শিক্ষক দেশের সার্বিক শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষকের ঘাটতি পূরণ এবং শিক্ষার মানোন্নয়নে যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছে। সেকায়েপভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো পর্যবেক্ষণ করলে যার চিত্র আমরা দেখতে পাই। সেকায়েপের এই সকল শিক্ষক কেবল পড়াশোনার মানোন্নয়নে নয়; বাল্যবিবাহ রোধ, শিক্ষার্থী ঝরে পড়া রোধ ,বৃক্ষরোপণ, শিক্ষার্থীদের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সৃষ্টি, দেশপ্রেম, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং সর্বোপরি সমাজ সংস্কারে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হচ্ছে যে, প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই সকল শিক্ষকের চাকরি জীবন অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। দেশের নামি-দামি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করা এই সকল শিক্ষকের অনেকে ছিল শহরের জীবন-যাপনে অভ্যস্ত। কেউ বা স্নাতক অথবা স্নাতকত্তোর শেষে নিচ্ছিল সরকারি চাকরির প্রস্তুতি।

সেখান থেকে মোটা বেতনের এবং চাকরি স্থায়ী করার প্রলোভন দেখিয়ে তাদের টেনে আনা হয় দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের নিভু নিভু আলোর মাঝে শিক্ষার উজ্বল আলো সৃষ্টির লক্ষ্যে। সেকায়েপ শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ তিন বছর থাকলেও নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি এবং ম্যানুয়ালে এসকল শিক্ষকের চাকরি প্রকল্প মেয়াদ শেষে পরবর্তী প্রোগ্রামে স্থানান্তর এবং প্রোগ্রাম শেষে স্থায়ী করার কথা উল্লেখ আছে। এ কম্পোনেন্টের শুরু থেকে এ সব শিক্ষকের সেকায়েপ কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সময়ে চাকরি স্থায়ী কিংবা পরবর্তী প্রোগ্রামে নেয়ার কথা বলে আসছে। 

আমরা জানি, সেকায়েপ প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৭ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে শেষ হয়েছে, সেই সঙ্গে শেষ হয়েছে ওই সকল শিক্ষকের চাকরি। কিন্তু কর্মকর্তাদের মৌখিক আশ্বাসে সেকায়েপ শিক্ষকরা চাকরি স্থায়ী হওয়ার আশায় এখনো পর্যন্ত বিনা বেতনে পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে পরবর্তী প্রোগ্রামে স্থানান্তর কিংবা চাকরি স্থায়ী হওয়ার কোনো প্রতিফলন বিগত ৬ মাসে দেখা মেলেনি। ফলে এ সকল শিক্ষকের মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম হতাশা। বিনা বেতনে কাজ করার ফলে পরিবার, সমাজ এবং প্রতিষ্ঠানের কাছে হতে হচ্ছে নিগৃহীত। একটি চাকরিতে যুক্ত হয়ে পড়াশোনা করে অন্য চাকরির প্রস্তুতি নেয়া অনেক ক্ষেত্রে অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাছাড়া অধিকাংশ শিক্ষকের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স উত্তীর্ণ হওয়ায় যুক্ত হতে পারছেন না অন্য পেশাতে। তাদের এই চরম দুঃসময়ে সেকায়েপের কর্মকর্তারাও তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন, বলছেন দায় এড়ানো কথাবার্তা।

প্রকল্পের কর্মকর্তারা মেয়াদ শেষে মন্ত্রণালয়ের অন্য দায়িত্বে চলে গেছেন। সেকায়েপ প্রকল্পের পরিচালক মাহমুদুল হকের কাছে এসকল শিক্ষকদের ব্যপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমি তো এখন সেকায়েপে নেই, আমার কাজ যতটুকু, আমি করে দিয়েছি, এখন যা করার শিক্ষা মন্ত্রণালয় করবে।’অনেক দিন থেকে আমরা শুনে আসছি, মাধ্যমিক স্তরে সেকেন্ডারি এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (এসইডিপি) নামে নতুন একটি প্রোগ্রাম চালু হবে। গত ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে অর্থমন্ত্রী যার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এসইডিপিতে অ্যাডিশনাল ক্লাস টিচার হিসেবে একটা কম্পোনেন্ট রাখার কথা বলা হয়েছিল, সেকায়েপ কর্তৃপক্ষ অনেক সময় সেকায়েপ শিক্ষকদের সেখানে অন্তর্ভুক্তির কথা বলে এসেছে। এসইডিপিতে বিশ্ব ব্যাংক দিচ্ছে ৫২০ মিলিয়ন ডলার। এসইডিপিতে অ্যাডিশনাল ক্লাস টিচারদের একটা স্পেশাল গভর্নমেন্ট অর্ডারের মাধ্যমে ধরে রাখতে এসইডিপি বিষয়ক বিশ্ব ব্যাংকের প্রোগ্রাম প্লানের ২৬ পৃষ্ঠায় লেখা রয়েছে।

কিন্তু বিগত ৬ মাসেও শিক্ষা মন্ত্রণালয় সে গভর্নমেন্ট অর্ডারের ব্যাবস্থা করতে তো পারেইনি, পাশাপাশি এসইডিপি প্রোগ্রাম এখনো দৃশ্যমান নয়। আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে সে প্রোগ্রাম শুরুর প্রক্রিয়া এতই ধীর যে, কবে নাগাদ সেটি শুরু হবে সে ব্যাপারে কর্মকর্তারাই সন্দিহান। অন্যদিকে জানা যায়, সেকায়েপের শিক্ষকদের পরবর্তীতে কী করা যায়, সেটা দেখভাল করছেন উন্নয়ন বিভাগের প্রধান মহিউদ্দীন খান। তিনি অজুহাত দেখাচ্ছেন অর্থ মন্ত্রণালয় নাকি এসইডিপিতে অ্যাডিশনাল ক্লাস টিচারের ক্ষেত্রে কোনো জনবল রাখবে না। এ কারণে তিনি চাইছেন সেকায়েপ শিক্ষকদের মান্থলি পেমেন্ট অর্ডারের (এমপিও) আওতায় আনতে। 

কখনো প্রোগ্রাম আবার কখনো এমপিও; সেকায়েপ শিক্ষকদের চাকরি স্থায়ী করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কেন এমন টালবাহানা এবং কালক্ষেপণ করছে তারাই ভালো বলতে পারবেন। অপর দিকে এমপিও একটি জটিল এবং সময় সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। এমপিওভুক্ত হতে চাইলে শিক্ষকদের প্রয়োজন বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন সনদপত্র, যা অনেক শিক্ষকের নেই। বর্তমান সময়ে এনটিআরসিএ কেবল শূন্য পদের বিপরীতে সনদ দিয়ে থাকে। সুতরাং পরীক্ষা ভালো করলেও পদ শূন্য না থাকলে সনদ মিলবে না। আবার অনেক সেকায়েপ শিক্ষককে পদায়ন দেয়া হয়েছে ননএমপিও প্রতিষ্ঠানে। এমপিও নীতিমালায় বলা আছে, প্রতিষ্ঠান ননএমপিও হলে শিক্ষক এমপিও হতে পারবে না। শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে ভালো ভাবেই অবগত। যদিও এসব সমস্যার সমাধান নির্ভর করছে কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছার ওপর। তারা ইচ্ছা করলে শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ব্যাপারটা বিবেচনা করতে পারে, যেমনটা করার প্রস্তাব উঠেছে ছিট মহলের শিক্ষকদের শিক্ষাগত যোগ্যতার ক্ষেত্রে। আর ননএমপিও প্রতিষ্ঠানে পদায়নকৃত শিক্ষকদের একটা স্পেশাল ইনডেক্স নাম্বার দিয়ে এমপিওভুক্তির পরিপত্র জারি করতে পারে। শিক্ষা মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ একবার বলেছিলেন, যারা যোগ্য হবেন, তাদের রাখার চেষ্টা করব।

যোগ্য বলতে তিনি যদি এমপিও নীতিমালার কথা বলে সেকায়েপ শিক্ষকদের কৌশলে বাদ দেয়ার হীন প্রচেষ্ট চালান, তবে সেটা হবে প্রতারণার শামিল। যদি তাই হয়, তাহলে আমার বোধগম্য হয় না, কেনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে লেখা ছিল, আপনি কি একজন মডেল শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখেন, আপনি কি শিক্ষকতা পেশাকে ক্যারিয়ার হিসেবে গড়তে চান? এখন প্রশ্ন দেখা দেয়, তাহলে একজন মডেল শিক্ষকের ক্যারিয়ার কি মাত্র তিন বছরের জন্য (কারো বা দু'এক বছর)? আমরা প্রায়শ দেখি বিভিন্ন সস্তা কোম্পানির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে চটকদার এবং লোভনীয় কথা লিখে চাকরিপ্রত্যাশীদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করা হয়ে থাকে। 

তাই বলে একটি দেশের সরকার চাকরির (যদিও প্রকল্প) ক্ষেত্রে এমন মিথ্যা লোভনীয় বিজ্ঞাপন দিতে পারে না, এমন বিজ্ঞাপন দিয়ে তাদের খালি হাতে ফেরানো হলে সেটা হবে চরম অন্যায় এবং প্রহসন। হোক সেটা প্রকল্প, এতে সরকারের প্রতি মানুষের আস্থা নষ্ট হয়ে যাবে। চলতি বছরের ৫ জুলাই জাতীয় সংসদে সেকায়েপ শিক্ষকদের দুরবস্থার কথা জানিয়ে সংসদ সদস্য গোলাম রব্বানীর এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, তাদের রাখার ব্যাপার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একার হাত নেই, সেখানে অন্যান্য মন্ত্রণালয় যুক্ত, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো যদি রাখার ব্যাপারে অনুমতি দেয়, তবেই তাদের রাখা যাবে। তাহলে ম্যানুয়ল চাকরির সময় তাতে লিখতে হতো, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় গুলোর অনুমতির কথা।

এখন এসেই যত সব অজুহাত তৈরি হচ্ছে, যা মোটেই কাম্য নয়। যে চাকরির কোনো ভবিষ্যৎ নেই, সেখানে মেধাবীদের টেনে এনে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দেয়া মানে, কেবল ওই সকল মেধাবীর জীবন নষ্টই নয়, মোটা দাগে দেশেরও বিরাট ক্ষতি। যার দায় কর্তৃপক্ষ কোনোভাবেই এড়াতে পারে না। তাই অবিলম্বে দেশের শিক্ষার মান উন্নয়নে সেকায়েপ শিক্ষকদের অভিজ্ঞতা এবং কোয়ালিটির কথা বিবেচনা করে কোনোরূপ শর্ত ছাড়াই তাদের চাকরি স্থায়ী করার কোনো বিকল্প দেখছি না। এতে সরকারও দায়মুক্ত হতে পারবে এবং উন্নত হবে দেশের মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা।

লেখক : শিক্ষানুরাগী, কেশবপুর, যশোর।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার - dainik shiksha মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030028820037842