ওষুধ কম্পানির এক কর্মকর্তাকে কৌশলে বাসায় ডেকে জিম্মি করে টাকা আদায়ের অভিযোগে তিন যুবককে গ্রেফতার করেছে চট্টগ্রাম নগরের খুলশী থানার পুলিশ। শুক্রবার (১২ অক্টোবর) সকালে নগরের আকবর শাহ থানার বিশ্বকলোনি ডি-ব্লকের একটি বাসায় এ অভিযান চালিয়ে ওষুধ কম্পানির ওই কর্মকর্তাকেও উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, গ্রেফতার তিনজনই ধনী পরিবারের সন্তান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং একটি ব্ল্যাকমেইলিংচক্রের সদস্য।
গ্রেফতার তিনজন হলেন ইফতেখারুল আলম (২৫), মোহাম্মদ তালিম উদ্দিন (২৪) ও সালেহিন আরাফাত (২৮)। তাঁদের বাসা বিশ্বকলোনি এলাকায়। ইফতেখার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন চট্টগ্রাম কলেজে ইসলামের ইতিহাস বিভাগের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তালিম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউএসটিসিতে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ষষ্ঠ সেমিস্টারের ছাত্র। সালেহিন আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের একই বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র। তিনি তাঁর বাবার সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠানেও কাজ করেন।
ঘটনার শিকার হাসান তারেক (৩৭) নগরের পাঁচলাইশ থানার রহমান নগরের হাতিম বিল্ডিংয়ের বাসিন্দা মোফাজ্জল আহমেদের ছেলে এবং রেনেটা ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিতে কর্মরত। এ ঘটনায় হাসানের বোন প্রেসিডেন্সি স্কুলের শিক্ষক শারমিন ফারজানা থানায় মামলা করেছেন।
খুলশী থানার ওসি প্রণব চৌধুরী জানান, দুই সপ্তাহ আগে হাসান তারেক কম্পানির কাজে বিশ্বকলোনিতে যান। সেখানে ইশরাত নামে এক মেয়ের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। সেই সূত্রে গত বৃহস্পতিবার রাতে মেয়েটি হাসানকে বিশ্বকলোনির ডি-ব্লকে তাঁর বাসায় ডেকে নেন। বাসায় যাওয়ার পর চার যুবক সেখানে প্রবেশ করেন এবং তাঁকে মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে জিম্মি করেন। মুক্তি পেতে হাসান বিকাশের মাধ্যমে জিম্মিকারীদের ২৪ হাজার টাকা দেন। কিন্তু এতে তাঁরা খুশি হননি। তাঁরা আরো টাকা দাবি করলে ভোরের দিকে হাসান তাঁর ছোট বোনকে দুটি চেক নিয়ে খুলশীতে ইউএসটিসির সামনে আসতে বলেন। এ সময় হাসানের কণ্ঠস্বর শুনে বোনের সন্দেহ হলে তিনি ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশের সহযোগিতা চান। খুলশী থানার একটি টিম ছদ্মবেশে ইউএসটিসির সামনে অবস্থান নেয়। তালিম চেক নিতে এলে পুলিশ তাঁকে হাতেনাতে আটক করে। এরপর তাঁর দেয়া তথ্য মতে ওই বাসায় অভিযান চালিয়ে হাসানকে উদ্ধার এবং দুজনকে আটক করা হয়। তবে ইশরাত এবং রুমি পালিয়ে যান।
ওসি বলেন, ‘আটক তিনজনসহ ঘটনায় জড়িতরা সংঘবদ্ধভাবে ব্ল্যাকমেইলিংয়ে জড়িত। অভিজাত পরিবারের সন্তান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হয়েও তাঁরা এমন অপরাধে জড়িয়েছেন।’