প্রশ্নবিদ্ধ ডাকসু নির্বাচন প্রত্যাশিত নয়

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক জেনারেল সেক্রেটারি জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেছেন, প্রশ্নবিদ্ধ ডাকসু নির্বাচন প্রত্যাশিত নয়। তিনি বলেন, ২৮ বছর পর ১১ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য ডাকসু নির্বাচনকে উৎসবে পরিণত করে অবাধ নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য করতে অতীতের মতোই ভোটকেন্দ্র একাডেমিক ভবনে নিতে হবে।

বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রকাশিত খবরে এসব তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন  শফিকুল ইসলাম সোহাগ

আশা করছি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শেষ পর্যন্ত একাডেমিক ভবনেই ভোটকেন্দ্র স্থাপন করবেন। গতকাল গুলশানের বাসভবনে সঙ্গে সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক এই মন্ত্রী। জিয়াউদিন আহমেদ বাবলু বলেন, ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকেই নির্বাচনে একাডেমিক ভবনে ভোট কেন্দ্র স্থাপিত হয়ে আসছে।

বর্তমান প্রশাসন ভোটকেন্দ্র কেন হলে করতে গেল তা বুঝতে পারছি না। তিনি বলেন, কোনকালে ডাকসুর ভোট নিয়ে বিতর্ক ছিল না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে যে পরিমাণ ছাত্র থাকে তার বেশি ছাত্র বাইরে। সবারই ভোটাধিকার রয়েছে। হলে ভোটকেন্দ্র হওয়ায় বাইরে থেকে ভোট দিতে না পারলে দুঃখজনক হবে। ২০২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষের প্রাক্কালে জাতীয় পার্টি চায়, ডাকসু অবাধ নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য এবং সবার অংশগ্রহণমূলক হোক।

জিয়াউদ্দিন বাবলু বলেন, নির্বাচনের মাধ্যমে ডাকসু গৌরবোজ্জ্বল অতীতে ফিরে আসছে এটা অত্যন্ত আনন্দের। অতীতে দেশ বিভাগের পরে যত আন্দোলন সবকিছু হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক। ডাকসু আমাদের স্বাধীনতা ও মুক্তি সংগ্রামের একটি গৌরবোজ্জ্বল প্রতিষ্ঠান। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার প্রথম পতাকা উত্তোলন করেছিলেন ডাকসুর তৎকালীন ভিপি।

সেখান থেকে সারা দেশে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছিল। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যখন বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে ২৫ মার্চ ভয়াল রাতে তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা চালিয়েছিল। মোহাম্মদ আলী জিন্নাহকে রাষ্ট্রভাষার প্রশ্নে উর্দুর বিপক্ষে ‘নো’ ‘নো’ বলা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে।

সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার এরা ভাষার জন্য শহীদ হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়। আইয়ুব খানের মার্শাল ল’র বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ছয় দফা আন্দোলনের বিস্ফোরণ ঘটেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই। তারই ধারাবাহিকতায় ’৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল ডাকসুর নেতৃত্বে।

তিনি বলেন, ডাকসু নির্বাচনের দাবি দীর্ঘদিনের। জাতীয় পার্টির শাসনকালে প্রথম ডাকসু নির্বাচন হয়েছিল ’৮৯ সালে। ছাত্রলীগের সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ এবং জাসদের মুস্তাক হোসেন বিজয়ী হয়েছিলেন। পরে ’৯০ সালে আরেকটি ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদল বিজয়ী হয়। এরা সবাই জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে ছিল। আমরা ভিন্নমত পোষণকারীদের স্বাধীনতা দিয়েছিলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।

জিয়াউদ্দিন বাবলু বলেন, দশম জাতীয় সংসদে ডাকসুসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দাবি জানিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কেবল বঙ্গবন্ধু কন্যা নন। ইডেন গার্লস কলেজ ছাত্র সংসদের নির্বাচিত ভিপি ছিলেন। রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করে দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন।

তোফায়েল আহমেদ, রাশেদ খান মেনন, মতিয়া চৌধুরীসহ অনেকেই ডাকসুর নেতৃত্বে ছিলেন। ডাকসু দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্ব তৈরির প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। সেই ট্রেনিং সেন্টার ২৮ বছর ধরে বন্ধ। ফলে সামাজিক অবক্ষয় বেড়েছে। রাজনীতির দুর্বৃত্তায়ন হয়েছে। সংসদে সত্যিকার অর্থে ক্যারিয়ার পলিটিশিয়ানদের আসা উচিত। রাজনীতির মাঠে দেউয়ালিয়াত্তের প্রধান কারণ ডাকসুসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নির্বাচন না হওয়া।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0027930736541748