সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের হাজিরার জন্য বায়োমেট্রিক মেশিন বা স্মার্ট অ্যাটেনডেন্স মেশিন ক্রয়ে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
পঞ্চগড়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন কেনা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। জেলার পাঁচ উপজেলার মধ্যে চারটি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ টাকা নিলেও দীর্ঘদিনেও কেনা হয়নি মেশিন। আর যে উপজেলাটিতে মেশি কেনা হয়েছে সেখানে কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দ্বিগুণ দামে নিম্নমানের বায়োমেট্রিক মেশিন কেনার অভিযোগ রয়েছে।
পঞ্চগড়ের পাঁচ উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৬৬৩টি। এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের হাজিরার জন্য বায়োমেট্রিক মেশিন কেনা হয়েছে প্রায় দেড় কোটি টাকায়। চারটি উপজেলার ৫২১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভাউচার দেখিয়ে টাকা তুলে নিলেও এখনো কোনও মেশিন কেনা হয়নি।
অন্যদিকে, দেবীগঞ্জ উপজেলার ১৪২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বায়োমেট্রিক মেশিন কেনা হলেও তাতে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। রংপুরের সাবেক বিভাগীয় কমিশনার জয়নুল বারীর ছেলের প্রতিষ্ঠান থেকে বাধ্য হয়েই বেশি দামে বায়োমেট্রিক মেশিন কিনেছেন শিক্ষকরা। জানা যায় প্রতিষ্ঠানটি থেকে, সাড়ে ১১ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা মূল্যের মেশিন বিক্রি করা হয়েছে ২০ হাজার টাকা করে।
দেবীগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রুনা লায়লা বলেন, 'দাম কেন এত বেশি সেটা আমি জানিনা। অনেক জায়গায় খোঁজ করেই সবচেয়ে কম মূল্যের মেশিন কেনা হয়েছে।' তবে, কেউ যদি দাম বেশি নিয়ে থাকবে তবে শিক্ষকদের টাকা ফিরিয়ে দিতে বলা হবে বলেও জানান উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা।
প্রতিটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের হাজিরার জন্য স্লিপের বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত। এসব স্লিপের টাকায় বায়োমেট্রিক মেশিন কেনার জন্য মন্ত্রণালয়েরও নির্দেশনা রয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এবিএম শাহজাহান সিদ্দিক বলেন, 'বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন কেনার জন্য শিক্ষকদের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দেয়া হয়েছে। কিন্তু, তারা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রেখে দেয়ায় গত মাসে উপজেলা শিক্ষা অফিসারদের নির্দেশনা দিয়েছি টাকা অ্যাকাউন্টে রাখা যাবে না। আর যদি নিম্নমানের মেশিন বেশি দামে কেনা হয়ে থাকে তাহলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।'
অন্যদিকে, ৫২১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বায়োমেট্রিক মেশিন কেনার নামে তোলা টাকায় কী করা হয়েছে তা কেউ জানে না। তবে, এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা বলছেন তারা বায়োমেট্রিক মেশিনের জন্য টাকা তুলে রেখে দিয়েছেন।