প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরি নিয়োগের নীতিমালা প্রকাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক |

আউট সোর্সিয়ের মাধ্যমে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী কাম প্রহরী পদে জনবল সংগ্রহের নীতিমালা-২০১৯ জারি করা হয়েছে। সংশোধীত নীতিমালায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তিন বছরের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এ পদে চাকরিপ্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি নির্ধারণ করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের ক্যাচমেন্ট এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে। সাইকেল চালাতে পরদর্শী ও সুঠাম দেহের অধিকারী হতে হবে। তবে  কর্মঘন্টা, সাপ্তাহিক ছুটি ও বেতনের নির্ধারণ করা হয়নি। মঙ্গলবার জারিকরা নীতিমালায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আকরাম আল হোসেনের সই রয়েছে।  

নীতিমালায় বলা হয়েছে, দেশের সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী কাম প্রহরী পদে জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে। জেলা প্রশাসককে সভাপতি করে পাঁচ সদস্যের একটি নিয়োগ কমিটি নিয়োগ দিবে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সদস্য সচিব, সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সদস্য, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সদস্য হিসেবে থাকবেন। এই কমিটিকে ‘জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটি’ নামে অবহিত করা হয়েছে। কমিটির সদস্যার যোগ্য ব্যক্তিদের নির্বাচন করবেন।

নীতিমালা দেখতে এখানে ক্লিক করুন

প্রার্থীর যোগ্যতা হিসেবে বলা হয়েছে, দপ্তরী কাম প্রহরী পদে নিয়োগের জন্য আবেদকারীকে বাংলাদেশের নাগরিক ও সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের ক্যাচমেন্ট একালার স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে। তবে ক্যাচমেন্ট এলাকার কোন প্রার্থী পাওয়া না গেলে, সেক্ষেত্রে পার্শ্ববর্তি এলাকার প্রার্থীকে বিবেচনা করা যাবে। প্রার্থীর বয়সসীমা ১৮ থেকে ৩০ বছর হতে হবে। তবে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের ক্ষেত্রে ৩২ বছর করা হয়েছে। প্রার্থীরকে অষ্টম শ্রেনি পাশ হতে হবে। তাকে সাইকেল চালনায় পারদর্শী ও সুঠাম দেহের অধিকারী পুরুষ হতে হবে। 

নিয়োগ পরীক্ষার ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, বৈধ্য প্রার্থীদের ২০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হবে। তাতে সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপ্তদের নির্বাচন করা হবে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের প্যাডে তিন বছরের চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হবে। প্রতি তিন বছর পর পর তা নবায়ন করা হবে।

আরও বলা হয়েছে, আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে যোগদানকরা দপ্তরী কাম প্রহরীরা সরকারি ছুটি ছাড়া নৈমিত্তিক বা অন্য কোন ছুটি কাটাতে পারবে না। তবে দায়িত্ব পালনকালে দুর্ঘটনা, অসুস্থতা কিংবা অন্যকোন জরুরি কারণে প্রমান সাপেক্ষে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বার্ষিক সর্বোচ্চ সাত দিনের ছুটি মঞ্জুর করতে পারবে। দুর্ঘটনা ছাড়া অন্য কোন কারণে কেউ ১৫ দিনের বেশি অনুপস্থিত থাকলে তার নিয়োগ বাতিল হবে। কোন অসদাচারণ বা অনৈতিক কার্যকলাপ বা ফৌজদারী কোন অভিযোগ উত্থাপিত তদন্ত সাপেক্ষ প্রয়োজনীয় প্রচলিত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। 

বর্তমানে নিয়োগপ্রাপ্ত দপ্তরি কাম প্রহরীদের পদটি রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্তকরণ, আইনানুযায়ী কর্মঘণ্টা নির্ধারণ, বেতন বৈষম্য নিরসন এবং সাপ্তাহিক ছুটির দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। তাদের দাবি বাস্তবায়ন না কলে সম্প্রতি দপ্তরি নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ করা হয়। নতুন নীতিমালায় বর্তমানে কর্মরত দপ্তরিদের দাবি বাস্তবায়ন হয়নি। 

জানতে চাইলে প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সভাপতি সাধন কান্ত বাড়ই বলেন, সারাদেশে ৩৭ হাজার দপ্তরি কাম প্রহরীদের ওপর অমানবিক নির্যাতন করা হচ্ছে। ঈদের দিনেও উপস্থিত থাকতে হচ্ছে। নিয়োগের পর থেকে বিদ্যালয়ের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কাজ, টয়লেট পরিষ্কার, বাগান পরিষ্কার, দাপ্তরিক কাজসহ অনেককে প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে গিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। রাতে আবার বিদ্যালয় পাহারার কাজ করতে হয়। বিদ্যালয়ে চুরি হলে আমাদের জরিমানা দিতে হয়। 

হেলাল উদ্দিন নামের অপর একজন দপ্তরী বলেন, আমাদের রাজস্ব খাতে নেওয়া হচ্ছে না, কর্মঘণ্টা নির্ধারণ না হওয়ায় প্রায় ২৪ ঘণ্টা কাজ করতে হচ্ছে। সপ্তাহে একদিনও আমরা ছুটি পাই না। এসব কারণে বাধ্য হয়ে আমরা দেশের সকল দপ্তরী কাম প্রহরীরা একত্রিত হয়ে গত ১ সেপ্টেম্বর অধিদফতর ঘেরাও কর্মসূচী পালন করেছি। অধিদফতরের মহাপরিচালক আমদের দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস দেওয়ায় আমরা পরবর্তী একমাসের আল্টিমেটাম দিয়েছি। এ সময়ের মধ্যে আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না হলে আবারো সকলে এক হয়ে তীব্র আন্দোলন শুরু করবো। 

মন্ত্রণালয়ের সচিব আকরাম আল হোসেনের সাক্ষরিত এই নীতিমলায় বলা হয়েছে, এই নীতিমালা জারি হওয়ার পর এ সংক্রান্ত পূর্বের সকল নীতিমালা এবং আদেশ বাতিল বলে গণ্য হবে। এটি অবিলম্বে কার্যকর করা হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সচিব আকরাম আল হোসেন বলেন, দপ্তরী কাম প্রহরী পদটি রাজস্ব খাতে নিতে আমরা জনপ্রশাসনে চিঠি পাঠিয়েছে। সেটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সংধোধিত নীতিমালায় তাদের নিয়োগ ও দায়িত্ব, ছুটিসহ সকল বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। এতে করে আর তাদের কোন অভিযোগ থাকবে না বলে জানান সচিব।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ - dainik shiksha পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী - dainik shiksha ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ - dainik shiksha প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন কলেজ পরিচালনা পর্ষদ থেকে ঘুষে অভিযুক্ত সাংবাদিককে বাদ দেওয়ার দাবি - dainik shiksha কলেজ পরিচালনা পর্ষদ থেকে ঘুষে অভিযুক্ত সাংবাদিককে বাদ দেওয়ার দাবি পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029020309448242