কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার শতাধিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কম দামের বায়োমেট্রিক হাজিরার ডিভাইস সরবরাহ করে বেশি অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, এসব ডিভাইসের প্রতিটির দাম ৯ হাজার টাকা হলেও নেয়া হচ্ছে ২৩ হাজার টাকা। উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মো. আমিরুল ইসলামই এসব ডিভাইস সরবরাহ করছেন। তাই ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করছেন না।
জানা গেছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উপস্থিতি নিশ্চিতের জন্য এ বছর বায়োমেট্রিক হাজিরার ডিভাইস বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। ওই সিদ্ধান্তের পর মনোহরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. আমিরুল ইসলাম উপজেলার সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের ডেকে তিনিই এ ডিভাইস সরবরাহ করবেন বলে জানান। পরবর্তী সময়ে তিনি বিদ্যালয়গুলোয় রিয়েল টাইম ব্র্যান্ডের আরএস২০ ফিঙ্গারপ্রিন্ট রিডার মেশিন পাঠান। গত রোববার উপজেলার ১০৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ডিভাইস বসানোর কাজ শুরু হয়। এরই মধ্যে উপজেলার খানাতুয়া, গোয়ালিয়ারা, মৈশাতুয়া, ছিখটিয়া, হাটিরপাড়, দিশাবন্দ, আশিরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ে ডিভাইসটি বসানো হয়েছে।
শিক্ষকরা জানান, সরবরাহকৃত ডিভাইসের দাম ৯ হাজার টাকা। কিন্তু প্রতিটি বিদ্যালয় থেকে একটি ডিভাইসের জন্য ২৩ হাজার টাকা নেয়া হচ্ছে।
আশিরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফজলুল হক মজুমদার বলেন, গত রোববার এ বিদ্যালয়ে ২৩ হাজার টাকা মূল্যের বায়োমেট্রিক হাজিরা যন্ত্র বসানো হয়েছে। হাটিরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জহিরুল ইসলামও একই তথ্য দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে মনোহরগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মইনুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, স্লিপের মাধ্যমে বায়োমেট্রিক হাজিরা যন্ত্রের টাকা ছাড় দেয়া হবে। তখন সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় টাকা পরিশোধ করবে।
ডিভাইসের দাম বেশি নেয়া হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, উন্নত মানের ও তিন বছরের ওয়ারেন্টি দেয়া যন্ত্র সরবরাহ করছি। এ যন্ত্রের দাম পড়েছে ১৯ হাজার টাকা। তবে একই কোম্পানির বিভিন্ন দামের যন্ত্র রয়েছে। ভালো জিনিসের দাম একটু বেশিই হয়। আমি ভালো যন্ত্র দিয়েছি, তাই দামও বেশি। অতিরিক্ত দাম নেয়ার অভিযোগ সঠিক নয়।
কুমিল্লা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন সিদ্দিকী বলেন, বিদ্যালয়ে বায়োমেট্রিক হাজিরা যন্ত্র স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। এক্ষেত্রে অনিয়ম হলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।