উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে হাজিরা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ফিঙ্গার মেশিন ক্রয়ে অনিয়মের বিষয়টি ইতিপূর্বে ধামাচামা পড়ে যাওয়ায় এবার শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূিচর আওতায় বঙ্গবন্ধু কর্নারের ছবিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম ক্রয় ও স্থাপনা মেরামতের ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এসব ক্ষেত্রে প্রকৃত খরচের চেয়ে বেশি দেখানো হয়েছে বলে জানা গেছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিধিমালায় বলা আছে, বাজার যাচাই করে সাশ্রয়ী মূল্যে সরকারের বরাদ্দকৃত স্লিপের ফান্ড এবং প্রাক প্রাথমিক ফান্ডের টাকায় সরঞ্জামগুলো ক্রয় করবে কমিটি। কিন্তু সে আদেশ মানা হয়নি। তবে তাদের স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে ঠিকই।
উপজেলায় ৯৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস থেকে গত বছর ১৭টি স্কুলে ফিঙ্গার মেশিন বিতরণ করা হয়। বাকি ৮০টি স্কুলের জন্য শিক্ষা অফিস তাদের পছন্দমতো প্রতিষ্ঠান থেকে ফিঙ্গার মেশিন ক্রয় করে। মানিকগঞ্জ ডিএসএস স্মার্ট সিকিউরিটির স্বত্বাধিকারী তোফাজ্জল হোসেন সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তার প্রতিষ্ঠান থেকেই এসব মেশিন ১৪ হাজার টাকা করে জেলার শিক্ষা অফিসগুলোতে বিক্রি করেছেন। অপরদিকে প্রধান শিক্ষকরা বলেন, তাদের কাছ থেকে ২১ হাজার করে টাকা আদায় করেছেন শিক্ষা অফিসের এটিও ফারুক হোসেন। তারা বলেন, স্লিপের টাকায় উপকরণ কেনায় সরকার যে বিধিমালা জারি করেছে তা লঙ্ঘন করে এটিও ফারুক তার মনোনীত প্রতিষ্ঠান থেকে উপকরণ কিনে ভুয়া ভাউচার দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। জানা গেছে, নিম্নমানের হওয়ায় অনেক স্কুলের ফিঙ্গার মেশিন সঠিক কাজ করছে না। এছাড়া চলতি অর্থবছরে স্লিপ, রুটিন মেরামত ও বিদ্যালয়ের ক্ষুদ্র মেরামত বাবদ বরাদ্দকৃত টাকার ১০ শতাংশ ঘুষ দাবি করেছেন এটিও ফারুক। বঙ্গবন্ধু স্মৃতি গ্যালারি ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস-সংবলিত ছবি কেনার ক্ষেত্রেও স্কুল থেকে নেওয়া হয়েছে ১৩ হাজার টাকা। অথচ ঐ ছবির দাম ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা। এটিও ফারুক এ টাকা আদায় করেন।
এছাড়া প্রতিটি পেনড্রাইভ কেনার ক্ষেত্রে ১ হাজার ৫০০ এবং মডেম থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা নেওয়া হয়েছে। যা অর্ধেকেরও কম দামে কেনা। অপরদিকে বিভিন্ন খাতে বাজেট পাশ করানোর কথা বলে কতিপয় প্রধান শিক্ষকের মাধ্যমে ৯৭টি স্কুল থেকে রসিদ ছাড়া ৯৭ হাজার টাকা আদায় করা হয়েছে। শিক্ষকরা আরো জানান, এ সিন্ডিকেটের হোতা একজন নারী প্রধানশিক্ষক।’
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দা নার্গিস আক্তার বলেন, ‘ফিঙ্গার মেশিনের দাম সম্পর্কে আমার জানা নেই। বাজেট আসার পর দীর্ঘ সময় পার হয়ে গেছে, অথচ কমিটি এবং শিক্ষকরা ক্রয় করেননি বলেই এটিও ফারুক এই সব ক্রয় করেছেন। তবে ১০ শতাংশ ঘুষের বিষয়টি ঠিক না।’