ওরা কথিত প্রেমের ফাঁদে ফেলে তরুণদের অপহরণ এবং আদায় করে মুক্তিপণ। এমনি এক ঘটনার শিকার হয়েছে এক তরুণ। রাজধানীর কলাবাগান থেকে অপহরণের ছয় দিন পর অপহৃত মো. রায়হান নামে ঐ শিক্ষার্থীকে বুধবার রাতে সাভারের আমিন বাজার এলাকা থেকে উদ্ধার করেছে র্যাব-৪ এর সদস্যরা। এ সময় প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপহরণ চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করে সাভার থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) কাওরান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৪ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির বলেন, চট্টগ্রামের বাসিন্দা ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মো. রায়হান গত ১২ এপ্রিল রাত ১১টার দিকে রাজধানীর কলাবাগান থেকে নিখোঁজ হন। গত বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে র্যাব-৪ এর একটি দল সাভারের আমিনবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে রায়হানকে উদ্ধার করে।
এ সময় অপহরণকারী চক্রের পাঁচ সদস্য আজিজুল হাকিম, লিটন মোল্লা, কাজল বেগম, নজরুল ইসলাম নবু ও নূরু মিয়া ওরফে নূর ইসলাম ওরফে কাকা ওরফে মোল্লাকে গ্রেফতার করা হয়। অপহরণ কাজে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেট কারও উদ্ধার করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ১২ এপ্রিল রাজধানীর কলাবাগান থেকে রায়হান তার পূর্ব পরিচিত মো. বাহারের (পলাতক আসামি) প্রাইভেটকারে চড়ে এক তরুণীর সঙ্গে দেখা করতে আমিন বাজারস্থ এলাকার অজ্ঞাতনামা একটি ভবনে গেলে রায়হানকে আটক করেন অপহরণকারীরা। তার হাত ও চোখ-মুখ বেঁধে ৬ দিন ধরে আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে তার পরিবারের সদস্যদের কাছে মোবাইল ফোনে মারধরের শব্দ ও কান্নার চিৎকার শুনিয়ে মুক্তিপণ হিসেবে ১০ লাখ টাকা দাবি করে। মুক্তিপণের টাকা না দিলে ভিকটিমকে খুন করার হুমকি দিতে থাকে। পরবর্তী সময়ে অপহরণকারীরা তাদের মোবাইল নম্বর থেকে ভিকটিমের বাবা ও বোনের নম্বরে যোগাযোগ করে সর্বশেষ ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ রফা করে।
ড্রাইভার বাহার এই অপহরণ চক্রের মূল হোতা। সুন্দরী তরুণীর সঙ্গে দেখা করানোর কথা বলে রায়হানকে নিয়ে যায়। নিজেও অপহৃত হওয়ার নাটক করে। এরপর চক্রের অন্যান্য সদস্যের মাধ্যমে কৌশলে ১৫ এপ্রিল রায়হানের পরিবারের কাছ থেকে এক লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।