পড়াশুনায় আলস্য? দূর করতে পারেন এভাবে

নিজস্ব প্রতিবেদক |

কোভিড-১৯ অতিমারিতে থমকে গেছে আমাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। লক ডাউনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা। সাধারণত স্কুল-কোচিং আর প্রাইভেট শিক্ষকদের মাধ্যমে একটা নিয়মিত রুটিনের মধ্যে থাকে একজন প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদেরও নিয়মিত রুটিন মেনে পড়াশোনা করতে হয়। অতিমারির ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় তাই সমস্যায় পড়েছে শিক্ষার্থীরা। লেখাপড়ায় মনযোগহীনতা, আগ্রহ ও মনোবলের অভাবসহ নানারকম সমস্যায় পড়ছে তারা। এখন অনলাইনে অনেক স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ক্লাস শুরু করেছে। এমন অবস্থায় ছাত্রদের জন্য আগের পূর্ণ মনোযোগে লেখাপড়া করা সম্ভব হচ্ছে না। আজকের আর্টিকেলের বিষয় পড়াশোনায় আলস্য থেকে মুক্তি পেতে কি করা যায় তা নিয়ে।
সপ্তাহকে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে নিন

এক সপ্তাহকে একটি একক সময়ের ব্লক হিসেবে নিন। তারপর সপ্তাহকে ঘণ্টায় ভাগ করুন। এক সপ্তায় পাচ্ছেন ১৬৮ ঘণ্টা। এই ১৬৮ ঘণ্টাকে আরও ছোট ছোট সময়ের খণ্ড হিসেবে ভাগ করে নিন। অনেকেই দিনকে ঘণ্টায় ভাগ করে নেন। এভাবে ছোট ছোট সময়ের ভাগ অনুযায়ী পরিকল্পনা করুন। এতে সময় ব্যবস্থাপনা সহজ হবে। প্রতিটি কাজের জন্য বা বিষয়ভিত্তিক পড়াশোনার জন্য সময়ের এই ভাগ ব্যবহার করুন। যেমন, কোন সপ্তাহকে তিন ভাগে ভাগ করে বিভিন্ন বিষয়ের সিলেবাস শেষ করতে পারেন।

সাপ্তাহিক ছুটি নেওয়া
সপ্তাহের পরিকল্পনা তৈরি করুন সাপ্তাহিক ছুটির দিনে। সেদিন এক ঘণ্টা সময় বের করুন। এই সময়ে পুরো সপ্তাহের পরিকল্পনা ঠিক করুন। হয়ত আপনার প্রতিটি সপ্তাহ একইরকম: ক্লাসওয়ার্ক, লেকচার, টিউটোরিয়াল, ক্লাস। হয়ত পাঠক্রমের বাইরের কাজগুলোও প্রতি সপ্তাহে প্রায় একই। তাই প্রতি সাপ্তাহিক ছুটিতে পরের সপ্তাহের পরিকল্পনা তৈরিতে খুব বেশি বেগ পেতে হবে না। আগের সপ্তাহের বেশিরভাগ পরিকল্পনাই নকল করতে পারবেন। আর বাকি সময়টা ভালো লাগার কাজ করুন। এই দিনেই বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা, মুভি দেখা বা শখের কোন কাজ করার জন্য বেছে নিন। আবার সপ্তাহের অন্যদিনের কোন পড়াশোনা বা গুরুত্বপূর্ণ কাজ বাকি থেকে গেলে এইদিন তা শেষ করুন যাতে পরবর্তী সপ্তাহ নতুন করে শুরু করতে পারেন।

গুরুত্ব ঠিক করা
কোন কাজটির পেছনে আপনার মূল্যবান সময় দেবেন তা জানা খুবই জরুরি। পড়ালেখার জন্য প্রচুর সময় রাখা গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু একই সাথে অন্যান্য কিছু বিষয় হয়ত আছে যা আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। যেমন বন্ধুবান্ধব, ক্লাব, সামাজিক কাজ, পরিবারকে সময় দেওয়া ইত্যাদি। আপনার পড়ালেখার লক্ষ্য অর্জনে যেসব কাজ করতে হয় এবং যেগুলো পড়ালেখার বাইরের সেগুলোকে আলাদা করুন। দুই ভাগ করুন। পড়ালেখার বাইরের কিছু কাজও হয়ত আপনার কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে কিন্তু তা সরাসরি আপনার লক্ষ্য অর্জনে সাহায্য করছে না। এভাবে আগেই আলাদা আলাদা করে রাখলে কোনো কারণে যেমন অসুস্থতায় যদি কিছুদিন সময় মেনে সব করতে নাও পারেন তবুও আবার শুরু করতে ঝামেলা হবে না। এটি আপনার পরিকল্পনা আবার ঠিকমত সাজাতে সাহায্য করবে।

ডায়েরি মেন্টেন করা
একটি ডায়েরি বানান। সেখানে সবকিছু লিখে রাখুন। একবার যখন ঠিক করবেন কোন কাজে বেশি সময় দেওয়া উচিত, তখনই সেই কাজে গুরুত্ব দিন আর তা ডায়েরিতে লিখে রাখুন। সপ্তাহের সবচেয়ে জরুরি কাজ হিসেবে হয়ত আপনি আগামী পরীক্ষার পড়াশুনাকেই বেশি জরুরি মনে করছেন, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া দ্বিতীয় জরুরি এবং জিম হয়ত তৃতীয় স্থানে। এসব ডায়েরিতে টুকে রাখলে তা অনুসরণ করা সহজ। আবার কোন কাজগুলো শেষ করতে পারলেন তাও ডায়েরিতে মার্ক করে রাখুন। এক সপ্তাহ পর কি কি কাজ করে উঠতে পারেননি তা বিচার করুন। এতে করে কর্মপদ্ধতি ঠিক করা সহজ হবে ও আপনি মানসিকভাবে উদবুদ্ধ হবেন।

প্রাত্যহিক জীবনযাপন স্বাভাবিক রাখা
বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া বা ঘুরতে যাওয়ার মতো দারুণ ব্যাপার হয়ত এগুলো নয়। তবে বাস্তবতা হলো খাওয়াদাওয়া, ঘুমানো, বাড়িঘর পরিষ্কার করা, বাজার করা, রান্না করা ইত্যাদি কাজে আপনার সময় ব্যয় হবেই। এসব কাজে সময় দিন এবং নিজেকে সেভাবে বুঝান যে, জীবনে এসব কাজ জরুরি এবং কিছু সময় ব্যয় হবেই। তাই সপ্তাহের পরিকল্পনা করার আগে এটা মাথায় রাখুন।

সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে আপটুডেট থাকা
সময়সূচী নিয়মিত পর্যালোচনা করুন। প্রত্যেক সপ্তাই নতুন ও আলাদা। প্রত্যেক নতুন সপ্তাহে আপনার সময়ের চাহিদা ও কাজের ডেডলাইন আলাদা হবে। হয়ত নতুন কোনো ইভেন্ট থাকবে। যেমন কোনো সেমিস্টারের শেষে যদি থিসিস জমা দেওয়ার ডেডলাইন থাকে তবে এটি লেখার জন্য সেমিস্টারের শেষ মাসে নিশ্চয়ই বেশি সময় বরাদ্দ করবেন। তবে সপ্তাহের সময়সূচীর একটি সাধারণ টেমপ্লেটের মাধ্যমে আপনি সময় বাঁচাতে পারেন। এই সময়সূচীতে যত বেশি পারেন তত তথ্য যোগ করুন। এসব তথ্য নিয়মিত পর্যালোচনা করুন- কারণ এগুলো আপনাকে পরের সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার - dainik shiksha মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.014788866043091