রাজধানীর একটি স্কুলে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে নির্ধারিত টাকার চেয়ে অতিরিক্ত আদায় করা হয়েছে ২৫ লাখ টাকা। আর সেই টাকা গেছে স্কুলের তিন জন শিক্ষকের ব্যক্তিগত হিসাবে।
অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগে মঙ্গলবার (২০ নভেম্বর) যাত্রাবাড়ী আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে অভিযান চালিয়ে এই চিত্র দেখতে পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।
২০১৯ খ্রিস্টাব্দের এসএসসি পরীক্ষায় যাত্রাবাড়ী আইডিয়াল স্কুলের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৬৩৭ জন। এসব শিক্ষার্থীর নিকট সরকার নির্ধারিত ফির চেয়ে প্রায় ২৫ লাখ টাকা অতিরিক্ত প্রহণের প্রমাণ পেয়েছে দুদক দল।
এই চিত্রটি সারা দেশের এবং প্রতি বছরের। শিক্ষাবোর্ড শিক্ষার্থীদের নিবন্ধনের জন্য যে টাকা বেধে দেয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো আদায় করে কখনও দ্বিগুণ, কখনও তিন গুণ টাকা। নানা অযুহাতে আদায় করা এই টাকার কোনো রশিদও সাধারণত দেয়া হয় না। শিক্ষা প্রশাসন বরাবর ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলেও কার্যকর কিছু করতে পারেনি।
তবে এবার দুদক এই প্রবণতার বিরুদ্ধে অভিযানে নেমেছে। আর এর অংশ হিসেবেই যাত্রাবাড়ীর ওই স্কুলে যায় সংস্থাটির দল।
অভিযানে দেখা যায়, অতিরিক্ত আদায় করা এই টাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান হাওলাদার, সহকারী প্রধান শিক্ষক মরিয়ম বেগম ও সহকারী প্রধান শিক্ষক নাসরীন নাহারের যৌথ নামে আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডে (যাত্রাবাড়ী শাখা) গচ্ছিত রাখা হয়।
অভিযানের সময় মুখে স্কুল কর্তৃপক্ষ বেআইনিভাবে আদায় করা ২৫ লাখ টাকা শিক্ষার্থীদের ফেরত দেয়ার লিখিত অঙ্গীকারও করে। আগামী ২৫ ও ২৬ নভেম্বর দুদকের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের নিকট এসব টাকা ফেরত দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা।
দুদক জানায়, দুর্নীতির বিষয়ে জানাতে চালু হওয়া হটলাইনে (১০৬) ফোন পেয়ে এই অভিযান চালানো হয়েছে।
দুদকের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মুনীর চৌধুরীর নির্দেশে সংস্থাটির এনফোর্সমেন্ট ইউনিট এই অভিযান চালায়। এই কর্মকর্তা বলেন, ‘দুদক জনগণকে তাৎক্ষণিক সুফল দিতে চায়। এ লক্ষে অভিযান চালাচ্ছে দুদক। দায়ী শিক্ষকদের বিরুদ্ধেও দুদক ব্যবস্থা নেবে।’
যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অতিরিক্ত টাকা নেয়া হচ্ছে, অভিযোগ পেলে সেগুলোতেও যাওয়ার কথা জানিয়েছেন দুদক কর্মকর্তারা।