ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস!

জামিউল আহসান সিপু |

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁস কোনোভাবে রোধ করতে পারছে না শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রশ্ন সরবরাহের বিজ্ঞাপনে সয়লাব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক। পিইসি, জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষাসহ চাকরির নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বিজ্ঞাপন আকারে প্রচার করা হচ্ছে। বিভিন্ন ফেসবুক আইডি ও ম্যাসেঞ্জার গ্রুপ থেকে এ বিজ্ঞাপনগুলো প্রচার করা হচ্ছে। সেখানে নির্দিষ্ট মোবাইল ফোন নম্বরও দেয়া হচ্ছে। এ নম্বরে চাহিদামতো টাকা পাঠালে পুরো প্রশ্নপত্র তাদের দেয়া হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্তকারী সংস্থা ধারণা করছে, সরকারকে বিপাকে ফেলতে বারবার এ চক্রটি প্রশ্নপত্র ফাঁস করছে। প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে কোচিং সেন্টারের শিক্ষক, রাজনৈতিক নেতা ও পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরা জড়িত। বৃহস্পতিবার এসএসসি পরীক্ষা শুরু হওয়ার ৩২ মিনিট আগে প্রশ্নপত্র ফেসবুকে পোস্ট করা হয়েছে। একটি পরীক্ষা কেন্দ্রের কর্তব্যরত কতিপয় অসাধু শিক্ষক প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে পাঠিয়ে দিয়েছে ফাঁসকারী চক্রের কাছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যুগ্ম কমিশনার শেখ নাজমুল আলম বলেন, পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগে প্রশ্নপত্র ফেসবুকে প্রচার হয়েছে-তার সত্যতা মিলেছে। তবে নিয়ম হচ্ছে পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীদের যার যার কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হয়। এ ক্ষেত্রে ৩২ মিনিট আগে ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র দিয়ে পরীক্ষায় কোনো কাজে লাগবে না। তবে সেটি বড় কথা নয়। ফাঁস হওয়াটাই একটা বড় অপরাধ।

তিনি আরো বলেন, পরীক্ষার কক্ষে ৩০ মিনিট আগে শিক্ষকদের হাতে প্রশ্নপত্র দেয়া হয়। প্রশ্নপত্র ফাঁসের পেছনে শিক্ষকদের সন্দেহ করা হচ্ছে। সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে হয়তো এ কাজটি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয় এসএসসি এবং সমমানের পরীক্ষা। এই প্রথম সব বোর্ডে একই প্রশ্ন করা হয়। সকাল ৯টা ২৮ মিনিটে বোর্ডের প্রশ্নপত্র পোস্ট করা হয় ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপে। এ প্রশ্নের সঙ্গে পরীক্ষা কেন্দ্রের বিতরণ করা প্রশ্নের শতভাগ মিল পাওয়া যায়। প্রশ্ন সরবরাহকারী হিসেবে ফেসবুকে যার নাম সবচেয়ে বেশি আলোচিত, তিনি হলেন ‘রকি ভাই’। জেএসসি পরীক্ষার সময়ও সঠিক প্রশ্ন সরবরাহের গ্যারান্টি দেন তিনি। এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নের গ্যারান্টি দিয়েছেন এই রকি। একই নম্বর ব্যবহার করে প্রতিনিয়ত বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন ভিন্ন কথা। ফেসবুকে শুধু মনিটরিং এবং রিপোর্ট করে এই গ্রুপগুলো বন্ধ করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। তবে মোবাইল ফোন নম্বর ট্র্যাকিং করে শনাক্ত করা যেতে পারে। তথ্য প্রযুক্তিবিদ ও সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ তানভীর হাসান জোহা বলেন, রিপোর্ট করে ফেসবুক গ্রুপ কিংবা প্রোফাইল বন্ধ করা যেতে পারে। কিন্তু এতে কোনো লাভ হবে না। তারা ফের অন্য নামে আরেকটি অ্যাকাউন্ট খুলে একই কাজ শুরু করে। এক্ষেত্রে যা করা যায় তা হলো মোবাইল নম্বর ট্র্যাক করা।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজমের সাইবার ক্রাইম ইউনিটের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার নাজমুল ইসলাম বলেন, এর আগে বিভিন্ন সময়ে প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী চক্রকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ফাঁসকারী চক্র যেসব মোবাইল ফোন নম্বর ব্যবহার করতেন, তার বেশির ভাগই ভুয়া রেজিস্ট্রেশন করা। এ কারণে মোবাইল ফোন নম্বরের সূত্র ধরে তদন্ত করতে অনেক হিমশিম খেতে হয়। তবে বৃহস্পতিবার প্রশ্নপত্র ফাঁস করা চক্রটিকে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।

 

সৌজন্যে: ইত্তেফাক


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও - dainik shiksha স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0049519538879395