কোচিং বাণিজ্য বন্ধে ২০১২ খ্রিস্টাব্দের নীতিমালা অনুসারে দেশের সরকারি কিংবা বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষকরা কোচিং করাতে পারবেন না। তবে যেসব ব্যক্তি কোনও প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত নন, শুধু তারাই ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কোচিং করাতে পারবেন বলে মন্তব্য করেছে হাইকোর্ট। সোমবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ এবং বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মন্তব্য করে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, আদালত আমাকে বলেছে, কোচিং নিয়ে টেলিভিশনে প্রচারিত আমার দুটি টকশো আদালত দেখেছেন। তাই কোচিংয়ের সংজ্ঞা নিয়ে তারা (বিচারপতিগণ) বক্তব্য স্পষ্ট করে আমাকে জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের বাইরে যারা ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কোচিংয়ের সঙ্গে যুক্ত তারা তাদের কার্যক্রম চালু রাখতে পারবেন। তবে যারা কোনও প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত তাদের ক্ষেত্রে সরকারের করা কোচিং বাণিজ্য বন্ধের ২০১২ খ্রিস্টাব্দে নীতিমালা প্রযোজ্য হবে। আদালতের এই বক্তব্যের ফলে কোচিং বাণিজ্য বন্ধে ২০১২ খ্রিস্টাব্দের নীতিমালা অনুসারে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদানে নিয়োজিত শিক্ষকরা কোনোভাবেই কোচিং করাতে পারবেন না।
উল্লেখ্য, এর আগে কোচিং বাণিজ্য বন্ধে সরকার অনুমোদিত ২০১২ খ্রিস্টাব্দে নীতিমালাকে বৈধ ঘোষণা করে ৭ ফেব্রুয়ারি রায় দেয় হাইকোর্ট। এ রায়ের ফলে সরকারি-বেসরকারি স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য বন্ধ নীতিমালা ২০১২ কার্যকর হয়। কোচিং বাণিজ্যের অভিযোগে মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না সেজন্য সরকার কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়। দুদকের প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে ওই নোটিস দেওয়া হয়। ওই নোটিস ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য বন্ধের নীতিমালা ২০১২ নিয়ে শিক্ষকরা হাইকোর্টে রিট করেন। রিটের শুনানি শেষে অন্তবর্তীকালীন আদেশসহ রুল জারি করে। ওই আদেশের বিরুদ্ধে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষ লিভ টু আপিল করে। ওই আবেদনের শুনানি শেষে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের একটি বেঞ্চকে এ রুলের নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেয়।
আরও পড়ুন: ইন-হাউজ কোচিং থাকা উচিত: এহছানুল হক মিলন