স্ত্রীকে পেটানোর নিত্যদিনের অভ্যাস ছিল বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা বরিশালের বানারীপাড়ার চাখার সরকারি ফজলুল হক কলেজের অধ্যক্ষ এস এম সফিউর রহমান। নির্যাতিত স্ত্রী মামলা ঠুকে দিয়েছেন স্বামীর বিরুদ্ধে। পুলিশের হাতে গ্রেফতারের পর তিনি কারাগারে অবস্থান করছেন। গতকাল সোমবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭-এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক আল আসাদ মো. হাসিব উজ্জামান তাঁকে জেলে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগের দিন গত রোববার ঢাকার কোতোয়ালি থানা পুলিশ অধ্যক্ষ সফিউরকে গ্রেফতার করে। গতকাল তাঁকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। তাঁর পক্ষে আইনজীবীরা জামিনের আবেদন জানালেও তাঁরা শুনানি করতে পারেননি। ট্রাইব্যুনালের বিচারক হাজতি পরোয়ানা দিয়ে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বাদিপক্ষের আইনজীবী নুর হোসেন দুলাল বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, অধ্যক্ষ সফিউর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ হওয়া সত্ত্বেও তিনি তাঁর স্ত্রী নাজমা সুলতানা ও সন্তানদের ভরণ পোষণ দেন না দীর্ঘদিন। স্ত্রীকে নির্যাতন করা তাঁর অভ্যাসে পরিণত হয়। এ কারণে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পারিবারিক সহিংসতার মামলা করেন স্ত্রী। গত ৮ জুলাই ঢাকার বাড্ডার বাসায় অধ্যক্ষ সফিউর তাঁর স্ত্রীর কাছে ৩০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। যৌতুক দিতে অস্বীকৃতি জানালে স্ত্রীকে মারধর করা হয়। পরে ১৫ জুলাই নাজমা বেগম অধ্যক্ষ সফিউরের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। মামলায় হাজির না হওয়ায় সফিউরের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
উল্লেখ্য, অধ্যক্ষ সফিউরের শারীরিক প্রতিবন্ধী একটি মেয়ে আছে। তারও কোনো খোঁজখবর নেন না তিনি। স্ত্রী সন্তানদের ভরণ-পোষণ না দেওয়ায় গত ফেব্রুয়ারিতে টানা ১৬ দিন প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিয়ে স্ত্রী নাজমা সুলতানা চাখার সরকারি ফজলুল হক কলেজে অনশন করেন। এ ঘটনায় এলাকাবাসী, অভিভাবক ও ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। অধ্যক্ষ ওই সময় গা ঢাকা দেন।