বউকে ‘বোন’ পরিচয় দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি দিলেন শিক্ষক

জামালপুর প্রতিনিধি |

স্ত্রী ও এক খালাতো বোনকে ‘বোন’ বানিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন এক স্কুলশিক্ষক।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক পদে চাকরি পেতে জামালপুরের স্কুলশিক্ষক আশরাফুল আলম নিজের স্ত্রী ও খালাতো বোনকে জালিয়াতি করে বোন বানিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আশরাফুলের বাবা সহিদুর রহমান মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযোদ্ধা কোটার সদ্ব্যবহার করে স্ত্রী ও খালাতো বোনকে চাকরি দিতে তিনি এ জালিয়াতি করেন।

আশরাফুল আলমের বাড়ি জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার রবিয়ার চর গ্রামে। বর্তমানে তিনি মাদারের চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি পেয়ে আশরাফুলের স্ত্রী নাসরিন আক্তার এখন খেয়ার চরে ও খালাতো বোন শাপলা আক্তার টুপকার চরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন।

নাসরিন আক্তার ও শাপলা আক্তারের বিরুদ্ধে গত সোমবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন উপজেলার নয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সরন মিয়া। সরন মিয়া বলেন, আশরাফুল আলম চাকরি দেওয়ার কথা বলে আরও অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। এখন ঘটনাটি ফাঁস হওয়ায় তিনি এলাকা ছেড়েছেন।

জানতে চাইলে বকশীগঞ্জের ইউএনও আ স ম জামশেদ খোন্দকার বলেন, ‘অভিযোগটি পেয়েছি। ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

শিক্ষা কার্যালয় থেকে পাওয়া কাগজপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, আশরাফুল, নাসরিন ও শাপলা ২০১৬ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে যোগ দেন। তিনজনই জন্মসনদসহ বিভিন্ন কাগজপত্রে বাবা হিসেবে মুক্তিযোদ্ধা সহিদুর রহমানের নাম উল্লেখ করেন।

প্রত্যয়নপত্র ও জন্মসনদ নেওয়া হয়েছে মেরুর চর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) থেকে। ওই ইউপির তৎকালীন চেয়ারম্যান গোলাম মওলা বলেন, মুক্তিযোদ্ধা সহিদুর রহমানকে তিনি চিনেন। কিন্তু তাঁর কয় সন্তান, তা তাঁর (চেয়ারম্যান) জানা ছিল না। এ সুযোগে আশরাফুল স্ত্রী ও খালাতো বোনকে নিজের বোন বানিয়ে তাঁর (চেয়ারম্যান) সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। এলাকার অনেক মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আশরাফুল এখন পলাতক।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে আশরাফুলের মুঠোফোনে কয়েকবার ফোন দিলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। গত রোববার রবিয়ার চর গ্রামে আশরাফুলের বাড়িতে গিয়েও তাঁর পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে বাড়িতে খালাতো বোন শাপলা ও তাঁর মা মনোয়ারা বেগমকে পাওয়া যায়। শাপলা আক্তার বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় তাঁর চাকরি হয়েছে কি না, তা তিনি জানেন না। আশরাফুলই তাঁর চাকরির ব্যবস্থা করেছেন। এ জন্য ১০ লাখ টাকা নিয়েছেন। আর নাসরিন আক্তারও তাঁর বোন নয়, স্ত্রী। তিনি বলেন, তাঁর বাবার নাম বেলাল মিয়া। মুক্তিযোদ্ধা সহিদুর রহমান আসলে তাঁর খালু।

গত বুধবার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক বলেন, ওই তিনজন মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি নিয়েছেন। ঘটনাটি এর আগেও একবার তদন্ত হয়েছিল। কিন্তু তার ফলাফল কী হয়েছে, তা তিনি জানেন না।

সূত্র: প্রথম আলো। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও - dainik shiksha স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.005338191986084