পটুয়াখালীর কলাপাড়ার বেতমোর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী মহিমার শিক্ষাজীবন চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। স্কুলে আসা যাওয়ার পথে বখাটেদের অব্যাহত হুমকিতে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে এ স্কুল ছাত্রী ও তার পরিবার। সন্ত্রাসীদের ভয়ে বাবা-মায়ের সাথে তাকে স্কুলে আসা যাওয়া করতে হচ্ছে। স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছেও এ ছাত্রীর অভিভাবকরা নিরাপত্তার দাবিতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। কিন্তু তারা কোন উদ্যোগ না নেয়ায় মহিমার লেখাপড়া এখন বন্ধের পথে।
জানা যায়, এ বছরের ১৪ জুন দুপুরে স্কুল থেকে বাসায় ফেরার পথে মহিমাকে অপহরণের চেষ্টা চালায় একদল বখাটে। প্রকাশ্যে স্কুলছাত্রীকে টানাহেঁচড়া ও শ্লীলতাহানির চেষ্টার সময় তার চিৎকারে তার বাবা মাসুদ মৃধাসহ স্থানীয়রা এগিয়ে আসে। এ সময় বখাটেরা মাসুদ মৃধাকে কুপিয়ে জখম করে। এ ঘটনায় ২৫ জুন পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেন মাসুদ মৃধা। এ মামলায় এখন জেলহাজতে রয়েছে বখাটে রহিম মাতুব্বর, জামাল মাতুব্বর ও নয়ন ফকির।
স্কুলছাত্রীর পিতা মাসুদ মৃধা বলেন, মামলা দায়েরে পর থেকে প্রতিনিয়ত অপহরণ ও এসিডে ঝলসে দেয়ার হুমকি দেয়া হচ্ছে মহিমাকে। মামলা তুলে না নিলে গ্রাম ছাড়া করার হুমকিতে দিচ্ছে আসামিদের স্বজনরা। এ কারণে মহিমাসহ অপর দুই মেয়ে নিয়ে এখন চরম নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছেন। ঘটনার আগেও প্রায়ই স্কুলে আসা যাওয়ার পথে আসামিরা মহিমাকে কুপ্রস্তাব দিত বলে জানান। তিনি বলেন, এ অনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করায় তার ওপরও হামলা হয়েছে। মহিমার শিক্ষা জীবন রক্ষায় বিদ্যালয়ে আবেদন করেছেন। কিন্তু শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটি কোন উদ্যোগ নেয়নি।
মহিমা জানায়, স্কুলে যেতে ভয় করে। রাস্তায় হাটলেই বখাটেরা বাজে কথা বলে। তুলে নিতে চায়। এজন্য এখন বাবাও মা স্কুলে নিয়ে গেলে যাই, নয়তো ঘরেই থাকি। সেদিন (১৪ জুন) তার ওপর যে হামলা হয়েছে সেই আতংক এখনও কাটেনি। দরিদ্র কৃষক পরিবারের মেধাবী স্কুল ছাত্রীর স্কুলে আসা যাওয়ার পথে সন্ত্রাসীদের অব্যাহত হুমকিতে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন বেতমোর গ্রামের অভিভাবকরা। গ্রামের ১০৬ অভিভাবক এ সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শান্তির দাবিতে কলাপাড়া প্রেসক্লাবে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।
বেতমোর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোতালেব সিকদার জানান, তারা মহিমার পিতার অভিযোগ পত্র পেয়েছেন। কিন্তু ম্যানেজিং কমিটির সভা করতে না পারায় এ অভিযোগটি উপস্থাপন করতে পারেননি। কলাপাড়া থানার ওসি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন সাংবাদিকদের জানান, স্কুলছাত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কোন লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়নি। অভিযোগ পেলে ছাত্রীর নিরাপত্তার সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে।