বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢাবি ছাত্রদের হামলার ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শনিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ শাখা থেকে জানানো হয়েছে, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পিয়াস, সাব্বির, নাঈম ইসলাম, সাগর শাহরিয়ার নিয়ম বহির্ভূতভাবে টিকেট চাওয়া নিয়ে পূবালী ব্যাংকের কর্মকর্তা মো. খালিদ হোসেনের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়।
এ সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন ওই চার শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালকের (হাসপাতাল) কক্ষে নিয়ে যান।
পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একে মাহবুবুল হক বিষয়টির সমাধান করে দেন। কিন্তু পরিচালক (হাসপাতাল) কক্ষ থেকে বের হয়ে ওই চার শিক্ষার্থী সি ব্লকের সামনে প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেনকে মারধর করে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তব্যরত আনসার সদস্যসহ অন্যান্যরা এগিয়ে যান। তখন ওই চার শিক্ষার্থীকে পুনরায় পরিচালক হাসপাতালের কক্ষে নিয়ে যান।
এ ঘটনার খবর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর ঢাবির ২ জন সহকারী প্রক্টর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জসিমউদ্দিন হলের ভিপি মো. ফরাদ অত্র মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক অফিসে যান। শাহবাগ থানার পুলিশ প্রশাসনকেও অবহিত করা হয়।
পরবর্তীতে শাহবাগ থানা পুলিশ প্রশাসনের উপস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একে মাহবুবুল হক, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোজাফফর আহমেদ, সহকারী প্রক্টর কেএম তারিকুল ইসলামও ঢাবি কর্তৃপক্ষ উদ্ভূত পরিস্থিতি ও বিষয়টি সমাধানের লক্ষ্যে আলোচনায় বসেন।
কিন্তু বেলা ৩টা ৫০ মিনিটে কবি জসিমউদ্দিন হলসহ ঢাবির ২৫-৩০ জন শিক্ষার্থী সশস্ত্র অবস্থায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ ও ২নং গেট দিয়ে প্রবেশ করে গাড়ি ভাঙচুর করে। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা, আনসার সদস্য, ড্রাইভার ও কর্মচারীসহ কমপক্ষে ২০ জনকে পিটিয়ে আহত করে। পরবর্তীতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই চার শিক্ষার্থীকে শাহবাগ থানা পুলিশ হেফাজতে নিয়ে যান। ঢাবি শিক্ষার্থীদের হমলায় আহতরা বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন, পরিবহন সুপারভাইজার সুরুজ, আনসার সদস্য মো. মনজুরুল ইসলাম, মো. নাজমুল ইসলাম, মোহাম্মদ আলী, মো. জহিরুল ইসলাম, মো. ইউসুফ আলী, মো. জুবায়ের হোসেন, মো. টিপু সুলতান, মো. শামীম হোসেন, অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী ইদ্রিস, রুবেল, জামাল, ইসমাইল, আজাদ, জামাল-২, উজ্জ্বল, জনি, আল আমিন, চয়ন বিশ্বাস, মাসুদ সিকদার উল্লেখযোগ্য। এর আগেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা নিতে গিয়ে তাণ্ডব চালিয়েছে। এ নিয়ে ভার্সিটিজুড়ে হামলা আতঙ্ক বিরাজ করছে। হামলাকারী ছাত্রদের বিরুদ্ধে ঢাকা ভার্সিটি কর্তৃপক্ষ রহস্যজনক কারণে এখনও কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।