বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে তৎকালীন পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার গোপন নথিগুলো বই আকারে প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত পাকিস্তান ইন্টেলিজেন্ট ব্রাঞ্চ (আইবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে খোলা ব্যক্তিগত ফাইলে সংরক্ষিত তথ্যের সংকলন প্রকাশের এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
‘সিক্রেট ডকুমেন্ট অব ইন্টেলিজেন্স ব্রান্স অন ফাদার অব দ্য নেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ শিরোনামে এটি ১৪ খণ্ডে ধারাবাহিকভাবে হাক্কানী পাবলিশার্স থেকে প্রকাশ করা হচ্ছে। সংকলনের প্রথম খণ্ডের (১৯৪৮ থেকে ১৯৫০) প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হবে শুক্রবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪ টায়। প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সভাপতি হিসেবে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভাপতিত্ব করবেন ইমেরিটাস অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। আলোচক হিসেবে থাকবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে অমূল্য এসব ডকুমেন্ট দেশ-জাতি ও বহির্বিশ্বে পৌঁছে দেওয়ার প্রয়াসে ‘সিক্রেট ডকুমেন্ট অব ইন্টেলিজেন্স ব্রান্স অন ফাদার অব দ্য নেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ শিরোনামে বইটি প্রকাশ হচ্ছে।
ছাত্রজীবন থেকেই বঙ্গবন্ধু বাংলার মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন শুরু করেন। পাকিস্তান ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ (আইবি) প্রতিদিন প্রতি মুহুর্তে তার কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করে রিপোর্ট প্রেরণ করতো। এরই ভিত্তিতে বিনা বিচারে আটক, মামলাসহ নানামুখী নির্যাতন চলতো। ১৯৪৮ সাল থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর নামে স্পেশাল ব্রাঞ্চে খোলা ব্যক্তিগত ফাইলে সংরক্ষিত ডকুমেন্ট সংকলন করা হয়।
বইটির প্রথম খণ্ড ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত প্রাপ্ত ডকুমেন্টের ওপর ভিত্তি করে সংকলিত হলেও এ খণ্ডে ১৯৪৭ এর দেশ বিভাগের পূর্বেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছাত্র রাজনীতিতে সম্পৃক্ততা ও মানবদরদি মনের পরিচয় পাওয়া যায়।
ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুদীর্ঘ ২৩ বছরের সংগ্রামী জীবনের প্রথম দিকের জানা-অজানা অনেক তথ্যের সন্নিবেশ ঘটেছে এ খণ্ডটিতে। তথ্যগুলো তৎকালীন গোয়েন্দা পুলিশ আইবির রুটিন কাজের অংশ হিসেবে সংগ্রহ ও সংরক্ষিত হয়েছিলো।
পাঠকগণ স্বাধীনতা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগের জন্ম, মিছিলে নেতৃত্ব দেওয়ার কারণে বঙ্গবন্ধুকে কারাদণ্ড প্রদান, বঙ্গবন্ধুর লেখা চিঠি, তার নিকট বিভিন্ন নেতা-কর্মী ও আত্মীয়-স্বজনদের চিঠি, বিভিন্ন মিটিং ও জনসভায় দেওয়া ভাষণ, কারাগারে আত্মীয়-স্বজন ও নেতা-কর্মীদের সাক্ষাতকার সংক্রান্ত রিপোর্ট এবং আইবিসহ সরকারের বিভিন্ন অফিসের করেসপন্ডেন্স ইত্যাদি তথ্য পাবেন বইটিতে।