তবুও বন্ধ হয়নি ক্লাস ফাঁকি। বন্ধ হয়নি আড্ডাও। তবে চিত্রটা ভিন্ন। পদ্মাপাড়, পদ্মা গার্ডেন, পার্ক বা বিনোদন কেন্দ্রে তেমন দেখা মিলছে না ক্লাস ফাঁকি দেয়া শিক্ষার্থীদের। এখন তাদের বেশির ভাগ সময় কাটছে রাজশাহীর রেস্টুরেন্টগুলোতে। ক্লাস ফাঁকি দিয়ে আড্ডা দেয়ার নিরাপদ স্থান এখন রেস্টুরেন্ট। গল্প, আড্ডা আর ফাস্টফুডের টেবিলে সময় কাটছে বেশিভাগ শিক্ষার্থীর। তাই আগের মত বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে দেখা মিলছে না শিক্ষার্থীদের।
শিক্ষাবিদরা বলছেন, শিক্ষার্থীদের ক্লাসের সময়ে পদ্মাপাড়, পদ্মা গার্ডেন, পার্ক বা বিনোদন কেন্দ্রে দেখা যাচ্ছে না, এটা ভালো দিক। তবে ভিন্ন কায়দায় ফাঁকি দেয়াটা মোটেও সুখকর নয়। শিক্ষার্থীদের কাজ পড়ালেখা ছাড়া কিছু না। পড়ার পাশাপাশি বিনোদনের প্রয়োজন রয়েছে তবে, এমন বিনোদন নয়। যে রেস্টুরেন্টে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে সময় কাটাতে হবে তাদের। এবিষয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের ব্যবস্থা গ্রহণে এগিয়ে আসতে হবে।
সরেজমিনে রাজশাহীর নিউ মার্কেট এলাকায় ওমর থিম প্লাজায় গিয়ে এমন চিত্র দেখতে পাওয়া যায়। প্লাজার সপ্তম তলায় সাত থেকে আটটি রেস্টুরেন্ট রয়েছে। এখনে রাজশাহীর বেশ কিছু স্বনামধন্য স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাই বেশি। শিক্ষার্থীরা এখনে নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ইউনিফর্ম পড়েই বসে আছে। তাতে বোঝা যাচ্ছে তারা কে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের। তবে শিক্ষার্থীরা বলছেন, বিনোদনের প্রয়োজন রয়েছে। তাই তারা নিরিবিলি পরিবেশে বন্ধুদের নিয়ে সময় কাটাচ্ছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে রেস্টুরেন্টে উপস্থিত কয়েকজন শিক্ষার্থী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, তারা এখানে ফাস্টফুডের আইটেমের খাবারগুলো খেতে আসে। শিক্ষার্থীদের আইডি কার্ড দেখালেও ডিসকাউন্ট রয়েছে কিছু কিছু রেস্টুরেন্টে। তাই শিক্ষার্থীদের বেশি চাপ এসব রেস্টুরেন্টে।
শিক্ষার্থীরা মনে করছে, পদ্মাপাড়, পদ্মা গার্ডেন, পার্ক বা বিনোদন কেন্দ্রে গেলে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। সেই সময় তাদের পরিবারের লোকজনকে বিষয়টি জানানো হচ্ছে। অনেক সময় মুচলেকাও নেয়া হচ্ছে। এতে করে তাদের লজ্জা লাগে। তাই এই সব সমস্যায় না পড়তেই শিক্ষার্থীরা আসছে রেস্টুরেন্টগুলোতে। সেখানে দেখাও কেউ নেই।
রাজশাহী নিউ গভ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ জার্সিস কাদির দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এখানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও অভিভাবকদের ভূমিকা জরুরি। হাজিরা খাতা দেখে শিক্ষকদের চিহ্নত করতে হবে কোন কোন শিক্ষার্থী নেই ক্লাসে। আবার আসার পরে কোন শিক্ষার্থী ক্লাস থেকে চলে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, সে সকল শিক্ষার্থীদের তালিকা তৈরি করে অভিভাকদের জানাতে হবে। আর ক্লাস ফাঁকি দেওয়ার কারণে শিক্ষার্থীদের বলে দিতে হবে এমন ঘটনা ঘটলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রাখা হবে না তাকে। পাশা-পাশি স্থানীয় প্রশাসনকে এবিষয়ে নজর দিতে হবে।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক হামিদুল হক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এ বিষয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সঙ্গে সভা করা হবে। এছাড়া রেস্টুরেন্ট মালিকদের সচেতন হতে হবে। ক্লাসের সময়ে শিক্ষার্থীদের আড্ডার ব্যবস্থা করে দেয়ায় রেস্টুরেন্ট মালিকদেরও ধরা হবে।