বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রংপুর-ময়মনসিংহ বিভাগের সহস্রাধিক স্কুল-কলেজ

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

বন্যার ধাক্কায় বেসামাল হয়ে পড়েছে রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের শিক্ষাব্যবস্থা। এই দুই বিভাগ মিলিয়ে ১ হাজার ৯৯টি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বানের জলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে সারাদেশে মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ ও মাদরাসা মিলিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১ হাজার ৫৫৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) তথ্য অনুযায়ী, ছয়টি বিভাগের প্রায় ২০টি জেলায় বন্যার পানিতে স্কুল-কলেজ ক্ষতির মুখে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি স্কুল-কলেজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ময়মনসিংহ বিভাগে— ৫৭০টি। রংপুর বিভাগেও এই সংখ্যা কম নয়— এই বিভাগের ৫২৯টি স্কুল-কলেজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বন্যায়। এ ছাড়া সিলেটে ২৫২টি, রাজশাহীতে ১৩৫টি, চট্টগ্রামে ৩৬টি এবং ঢাকা অঞ্চলে ৩৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বন্যার কারণে এককভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ময়মনসিংহ বিভাগের জামালপুর জেলা। এই জেলার সাতটি উপজেলায় এখনো পর্যন্ত ৪০৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্যার কারণে বন্ধ রয়েছে। জেলার অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভেতরেই পানি ঢুকেছে। এ ছাড়াও কিছু ভবন পানির তোড়ে ভেসে গেছে বলেও জানিয়েছে মাউশির কর্মকর্তারা।

মাউশির উপপরিচালক (প্রশাসন) রুহুল মমিন জানান, এখন পর্যন্ত বন্যার কারণে অঞ্চলভিত্তিক ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যে তালিকা আমরা পেয়েছি, তাতে ৩২ কোটি ৬ লাখ ৫৯ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ করা হয়েছে। তবে ক্ষতির পরিমাণ হয়তো আরও বেশি। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পরই সঠিক সংখ্যাটা জানা যাবে।

রুহুল মমিন বলেন, ‘বন্যার পর এসব প্রতিষ্ঠান নতুন করে সংস্কার করতে হবে। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের ক্ষতির পরিমাণ এতটাই বেশি যে সেগুলো নতুন করে মেরামতের প্রয়োজন পড়বে। তবে এখনো শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে এমন কোনো নির্দেশনা আসেনি। বন্যা কমলে হয়তো সংস্কার কাজ শুরুর নির্দেশনা দেয়া হবে।’

এদিকে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় জানাচ্ছে, সারাদেশে ১২টি জেলায় শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মিলিয়ে ৪ হাজার ৩৩১টি প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৩০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ক্ষতির তালিকায় রয়েছে ৭৯৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও।

মাউশির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষা কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। বন্ধ হওয়া এসব প্রতিষ্ঠান কবে খুলবে, সেটিও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। ফলে এসব স্কুলের শিক্ষার্থীরা দেশের অন্যান্য অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের তুলনায় শিক্ষায় পিছিয়ে পড়ছে।

এ ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব সোহরাব হোসাইন বলেন, ‘বন্যা কবলিত অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের কীভাবে এগিয়ে নেয়া যায়, সে বিষয়ে আমরা ভাবছি। তবে এখন যেহেতু তারা পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে, সেখানে আমাদের কিছুই করার নেই। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এসব শিক্ষার্থীদের বিশেষ উপায়ে ফাইনাল পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করে তোলা হবে।’


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.017693996429443