শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে দুই সপ্তাহ ধরে অচলাবস্থা বিরাজ করছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে। উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে শিক্ষার্থীরা গতকাল সোমবার ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, আজ মঙ্গলবার দুপুর একটার মধ্যে হয় উপাচার্যকে পদত্যাগ করতে হবে; নয়তো ছুটিতে যেতে হবে। আর দাবি মানা না হলে আরো কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
এ অবস্থায় গত সপ্তাহের সিন্ডিকেট বোর্ডের সভার পর আজ মঙ্গলবার সিন্ডিকেট সভা সন্ধ্যায় ঢাকার কলাবাগানে লিয়াজোঁ অফিসে অনুষ্ঠিত হবে। নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে, সভায় গত ফেব্রুয়ারি মাসের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির অধ্যাপক পদের ৫টি স্থায়ী ও সহযোগী অধ্যাপকের ২০টি স্থায়ী পদের নিয়োগ চূড়ান্ত করা হতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষকরাও এই দুই পদে আবেদন করেছেন। তাদের কেউ কেউ নিয়োগ পেতে পারেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষক জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থার নিরসন নয়, উপাচার্য তার পছন্দের শিক্ষকদের এসব পদে নিয়োগ দেওয়ার লক্ষ্যেই এ সভার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এসব নিয়োগে পূর্বের নিয়োগের চেয়ে শর্ত শিথিল করে অযোগ্য লোকদের অর্থনৈতিক লেনদেনের মাধ্যমে নিয়োগের চেষ্টা চলছে।
জানা গেছে, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে অধ্যাপক পদে এসএসসি, এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় অন্তত একটিতে প্রথম বিভাগ, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পরীক্ষার যে কোনো একটিতে প্রথম শ্রেণি থাকার বাধ্যবাধকতা, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে/স্বীকৃতমানের গবেষক প্রতিষ্ঠানে ১২ বছরের শিক্ষাদান/গবেষণার পাশাপাশি সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে চার বছর শিক্ষাদানের অভিজ্ঞতা থাকা আবশ্যক হলেও গত ফেব্রুয়ারির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে তা উল্লেখ নেই। সহযোগী অধ্যাপক পদের জন্য বিগত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতেও এসএসসি ও এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় অন্তত একটিতে প্রথম বিভাগ, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পরীক্ষার উভয়টিতে ৩.৫০ থাকার বাধ্যবাধকতাসহ সাত বছরের শিক্ষকতা/গবেষণাসহ অন্তত তিন বছর সহকারী অধ্যাপক হিসেবে শিক্ষাদানের বাস্তব অভিজ্ঞতা থাকার বাধ্যবাধকতা থাকলেও বর্তমান নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে তা উল্লেখ নেই। শিক্ষকরা জানান, উপাচার্যের পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দিতেই তিনি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে এ ধরনের পরিবর্তন এনেছেন।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এস এম ইমামুল হক সিন্ডিকেট সভা হতে পারে উল্লেখ করে বলেন, অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপক পদের নিয়োগ প্রক্রিয়া রুটিন কাজ। এসব বিষয়ে যে কোনো সিদ্ধান্ত আসতে পারে। সিন্ডিকেটের সদস্য বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার রাম চন্দ্র দাস জানান, সিন্ডিকেটের সভার বিষয়টি তিনি জানতে পেরেছেন। তবে সভার বিষয়বস্তু সম্পর্কে তিনি জানেন না।