পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার চম্পাপুর ইউনিয়নের উত্তর-পশ্চিম চালিতাবুনিয়া গ্রামের শীলপাড়ার সংখ্যালঘু পরিবারের শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতে হয় ভেলায় চড়ে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের এভাবে ঝুঁকি নিয়েই বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতে হয়।
সরেজমিনে শীলপাড়ায় গিয়ে দেখা গেছে, পাশের আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়ন ও কলাপাড়া উপজেলার চম্পাপুর ইউনিয়নের সীমানা বিভক্ত হয়েছে টিয়াখালী খালটির মাধ্যমে। সবুজে ঘেরা প্রকৃতির মাঝে টিয়াখালী খালটি সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে তুলেছে। খালটির ওই পার থেকে ২৫-৩০ জন কোমলমতি শিক্ষার্থী প্রতিদিন কলাগাছের ভেলায় চড়ে বিদ্যালয় যাতায়াত করে থাকে। এ সময় ভেলা থেকে তীরে ওঠার সময় পানিতে পড়ে গিয়ে শিক্ষার্থী লিপি রানী শীলের পরিধেয় ভিজে যায়।
সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী লিপি রানী শীল বলে, ‘আমরা শীলপাড়ার প্রায় ৩০ জন শিক্ষার্থী প্রতিদিন পাঁচজুনিয়া ধানখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয় যাই। এভাবে ভেলার মাধ্যমে আমাদের খাল পার হতে হয়। আজ আমি ভেলা থেকে তীরে উঠতে গিয়ে খালে পড়ে যাই। তাতে কাপড় ভিজে যায়। এ অবস্থায়ই বিদ্যালয় যেতে হবে।’
দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী রনি চন্দ্র শীল বলে, ‘আমাদের ভাগ্য ভালো না। দেশের এত উন্নয়ন হচ্ছে, অথচ আমাদের শীলপাড়ার কোনো উন্নয়ন হচ্ছে না।’
অভিভাবক রিপন চন্দ্র শীল বলেন, ‘আমাদের সন্তানরা প্রতিদিন এই ভেলার মাধ্যমে খাল পার হয়ে বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসা করে। আমাদের এখন প্রাণের দাবি, বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে শীলপাড়ার পাশে টিয়াখালী খালের ওপর একটি সাঁকো বা ব্রিজ নির্মাণ করা হোক।’
পাঁচজুনিয়া ধানখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুস ছালাম বলেন, ‘ছেলে-মেয়েরা যে কষ্ট করে বিদ্যালয় আসছে, তাতে আমাদের হৃদয়ে ক্ষত সৃষ্টি হয়। আমাদের দাবি, বিদ্যায়ের সব সংযোগ সড়ক উন্নত করার পাশাপাশি টিয়াখালী খালে একটি সাঁকো বা ব্রিজ নির্মাণ করা হোক।’
এ ব্যাপারে কলাপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম রাকিবুল আহসান বলেন, ‘চম্পাপুর ইউনিয়নের উত্তর-পশ্চিম চালিতাবুনিয়া গ্রামের শীলপাড়া গ্রামের হিন্দু পরিবারের শিক্ষার্থীরা টিয়াখালী খাল পারাপারের জন্য কলাগাছের ভেলা ব্যবহার করছে। বিষয়টি আমার জানা ছিল না। দ্রুততম সময়ের মধ্যে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার মাধ্যমে খালটি পারাপারে স্থায়ী সমাধান নিশ্চিত করা হবে।’