বশেমুরবিপ্রবির ৪৯ শতাংশ শিক্ষার্থী হতাশাগ্রস্ত

বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি |

গবেষণায় পাওয়া গেছে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) ৪৯.৫ শতাংশ শিক্ষার্থী হতাশাগ্রস্ত। শিক্ষার্থীদের ওপর পরিচালিত আত্মহত্যা বিষয়ক ঐ গবেষণায় আরও দেখা গেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রায় ১৪.৭ শতাংশ শিক্ষার্থী বিগত এক বছরে (মার্চ-এপ্রিল ২০১৮ থেকে মার্চ-এপ্রিল ২০১৯) আত্মহত্যা বিষয়ক চিন্তা করেছেন।

সেন্টার ফর হেলথ ইনোভেশন, নেটোয়ার্কিং, ট্রেনিং, অ্যাকশন অ্যান্ড রিসার্স বাংলাদেশের উদ্যোগে পরিচালিত এ গবেষণায় দেখা যায় বশেমুরবিপ্রবির প্রায় ৪৬.৩ শতাংশ শিক্ষার্থী মানসিক চাপে, ৪৯.৫ শতাংশ শিক্ষার্থী হতাশায়, ৫৭ শতাংশ শিক্ষার্থী উদ্বেগে এবং ৩৭.৯ শতাংশ শিক্ষার্থী ফেসবুক আসক্তিতে ভুগছেন। গবেষণাটিতে মোট ৬৬৫ শিক্ষার্থীর তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে যাদের মধ্যে ৬৭.৫ শতাংশ ছাত্র। এতে দেখা যায় প্রায় ৬১.১ শতাংশ শিক্ষার্থী জীবনে একবার এবং ১৪.৭ শতাংশ শিক্ষার্থী উল্লেখিত বছরে আত্মহত্যা বিষয়ক চিন্তা করেছেন। বিশেষ করে গবেষণায় ছাত্রীদের মাঝে অধিক আত্মহত্যা বিষয়ক চিন্তা পরিলক্ষিত হয়েছে। বিগত এক বছরে প্রায় ১৭.৬ শতাংশ ছাত্রী আত্মহত্যার চিন্তা করেছেন। গবেষণায় আরও দেখা গেছে সম্পর্কে বিচ্ছেদ, বিষন্নতা, উদ্বেগ এবং সামাজিক মাধ্যমে আসক্তি আত্মহত্যা বিষয়ক চিন্তার মূল ক্রিয়ানক।

গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন সেন্টার ফর হেলথ ইনোভেশন, নেটোয়ার্কিং, ট্রেনিং, অ্যাকশন অ্যান্ড রিসার্স বাংলাদেশের পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং বিশ্ববিদ্যালয়টির অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক ইসতিয়াক রায়হান। গবেষণাটির সার্বিক তত্বাবধায়নে ছিলেন ইংল্যান্ডের নটিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মার্ক গ্রিফিটস।

গত ২৬ অক্টোবর "Springer" এর "International Journal of Mental Health and Addiction" জার্নালে এ সংক্রান্ত গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে।

এ বিষয়ে বশেমুরবিপ্রবির অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ইসতিয়াক রায়হান বলেন, 'আত্মহত্যা বিষয়ক চিন্তার এই হার অন্যান্য গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফলের তুলনায় ৪-৫ শতাংশ বেশি। আর করোনার প্রভাবে এই হার আরও বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়ে গুরুত্ব প্রদান করা জরুরি। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় একটি কাউন্সেলিং সেন্টারের কার্যক্রম শুরু করতে পারে এবং সেখানে একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দিতে পারে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে এমন শিক্ষকরাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। এর পাশাপাশি বর্তমান করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে একটি হটলাইন নাম্বার চালু করা যেতে পারে যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের সহজেই নিজেদের সমস্যা জানাতে পারবে এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ গ্রহণ করতে পারবে।'

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের রুম সংকট থাকায় এখন পর্যন্ত কাউন্সেলিং সেন্টারের কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হয়নি বলে জানান বশেমুরবিপ্রবির শিক্ষার্থী উপদেষ্টা ড. মো. শরাফত আলী।

এ বিষয়ে বশেমুরবিপ্রবির উপাচার্য ড. একিউএম মাহবুব বলেন, 'শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন পরামর্শ প্রদানসহ মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়েই কাউন্সেলিং সেন্টার থাকে এবং শিক্ষার্থীদের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়েও অবশ্যই কাউন্সেলিং সেন্টারের কার্যক্রম শুরু করা হবে। আর এই মহামারী পরিস্থিতি যদি আরও দীর্ঘায়িত হয় তাহলে টেলিমেডিসিন সেবাও চালু করা হবে।'


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0023760795593262