বাংলাদেশে করোনার প্রাচীন ডিএনএ সবচেয়ে বেশি

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

করোনাভাইরাসের যে ডিএনএ, এর একটি সংস্করণ আধুনিক মানুষের শরীরে প্রবেশ করে আজ থেকে ৬০ হাজার বছর আগে। এটি এসেছিল নিয়ান্ডারটাল প্রজাতির মানুষ থেকে। আর ডিএনএর এই সংস্করণটি বর্তমানে সবচেয়ে বেশি আছে বাংলাদেশের মানুষের শরীরে। তবে এটি করোনা মোকাবেলার ক্ষেত্রে এ অঞ্চলের মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী নাকি দুর্বল করে তুলেছে, সে বিষয়ে এখনো উপসংহারে পৌঁছাতে পারেননি গবেষকরা।

নতুন এ গবেষণাটি করেছেন বিভিন্ন দেশের কয়েকজন বিজ্ঞানী। তাঁদের গবেষণা প্রতিবেদনটি অনলাইনে ছাপা হয়েছে, বিজ্ঞানবিষয়ক কোনো সাময়িকীতে এখনো ছাপানো হয়নি।

জিন নিয়ে গবেষণা করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক জসুয়া আকে, যিনি এ গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। তিনি বলেন, ‘৬০ হাজার বছর আগে মানুষের শরীরে প্রবেশ করা কোনো ডিএনএ সংস্করণের প্রভাব এখনো থাকতে পারে। এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।’

নতুন এ গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘ পথপরিক্রমা পাড়ি দেওয়ায় ডিএনএর এই সংস্করণটি নানাভাবে বিবর্তিত হয়েছে। এ সংস্করণটি এখন সবচেয়ে বেশি দেখা যায় বাংলাদেশের মানুষের শরীরে। বাংলাদেশের প্রায় ৬৩ শতাংশ মানুষের শরীরে ওই ডিএনএর অন্তত একটি সংস্করণের উপস্থিতি রয়েছে। আর দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ এই ডিএনএ বহন করে। বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের মানুষের শরীরে এই ডিএনএর উপস্থিতি আরো কম। ইউরোপের ৮ শতাংশ মানুষের শরীরে এটি রয়েছে। আফ্রিকা অঞ্চলের কারো শরীরে এর অস্তিত্ব নেই।

এটা এখনো পরিষ্কার নয় যে বিবর্তনের কোন ধারার কারণে ৬০ হাজার বছর পরও মানুষের শরীরে এই ডিএনএ রয়ে গেছে। গবেষকদলের অন্যতম সদস্য এবং সুইডেনের কারোলিনিস্কা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী হুগো জিবার্গ বলেন, ‘এটা এখন লাখ টাকার প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। একটি কারণ হতে পারে যে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর হওয়ায় এই ডিএনএ এখন খুবই বিরল। আবার এটাও হতে পারে, রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলার মধ্য দিয়ে এই ডিএনএ দক্ষিণ এশিয়ার মানুষজনের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটিয়েছে।’

তবে এগুলোর সবই অনুমান হিসেবে দেখছেন গবেষকদলের আরেক সদস্য এবং জার্মানির ম্যাক্স প্লাংক ইনস্টিটিউট ফর ইভল্যুশনারি অ্যানথ্রোপলজির অধ্যাপক ড. ভান্তে পাবো।

গবেষকরা বলছেন, লিঙ্গ, বয়স কিংবা অঞ্চলভেদে করোনাভাইরাস কেন মারাত্মক হয়ে উঠছে, সেটা বোঝার ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে আছেন। কারণ হলো সংক্রমণের তীব্রতার কারণ হিসেবে প্রতিনিয়তই নতুন নতুন অনুঘটক সামনে আসছে। যেমন বর্ণবৈষম্যও এ ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে বলে এরই মধ্যে অনেক গবেষক দাবি করেছেন। তাঁরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রে শ্বেতাঙ্গদের চেয়ে কৃষ্ণাঙ্গরাই বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছে। ধারণা করা হয়, যুগ যুগ ধরে সামাজিক বৈষম্যের শিকার হওয়ায় কৃষ্ণাঙ্গদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাও দুর্বল হয়ে পড়েছে। সূত্র : নিউ ইয়র্ক টাইমস।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো - dainik shiksha ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা - dainik shiksha তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0043659210205078